
মেলায় হারানোর ২০ বছর পর যেভাবে বাংলাদেশে মিলল ভারতীয় নারীর খোঁজ

টিবিএন ডেস্ক
প্রকাশিত: নভেম্বর ২৭ ২০২৫, ২৩:৫৬ হালনাগাদ: নভেম্বর ৩০ ২০২৫, ২৩:২১

মেলার প্রতীকী চিত্র। ছবি: এনডিটিভি
- 0
দুই দশক পর নিখোঁজ এ নারীর দেখা মিলেছে বাংলাদেশে। সেখান থেকে ভারতে ফিরিয়ে এনে তাকে পরিবারের সঙ্গে পুনর্মিলনের চেষ্টা চলছে।
ঘটনাটি আজ থেকে ২০ বছর আগের। ভারতের পশ্চিমবঙ্গের গঙ্গাসাগর মেলায় এসে হারিয়ে যান মধ্য প্রদেশের এক নারী। সেই থেকে তাকে নিখোঁজই ধরে নেওয়া হয়েছিল।
দুই দশক পর নিখোঁজ এ নারীর দেখা মিলেছে বাংলাদেশে। সেখান থেকে ভারতে ফিরিয়ে এনে তাকে পরিবারের সঙ্গে পুনর্মিলনের চেষ্টা চলছে।
এনডিটিভির খবরে বলা হয়, ওয়েস্ট বেঙ্গল রেডিও ক্লাব-ডব্লিউবিআরসির অনভিজ্ঞ অপারেটররা কঠিন বিষয়টিকে বাস্তবে রূপ দিয়েছেন। তারা বিস্তৃত নেটওয়ার্কের মাধ্যমে প্রতিনিয়ত হারিয়ে যাওয়া লোকজনকে তাদের স্বজনের সঙ্গে পুনর্মিলনের চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন।
ডব্লিউবিআরসির সেক্রেটারি আমবারিশ নাগ বিশ্বাস জানান, বাংলাদেশ থেকে তাদের রাধিকা নামের এক নারীর বিষয়ে জানানো হয়েছে, যার বয়স ৭০ বছর। রাস্তায় ভিক্ষার সময় তার দেখা মেলে। স্বামীর নাম জিজ্ঞাসা করা হলে চুপ থেকে শুধু বলেন, ‘সাগর’।
তিনি জানান, পশ্চিমবঙ্গের সাগরদ্বীপ থেকে এ পরিচয়ের কেউ হারিয়েছেন কি না, শুরুতে তা সন্ধান করেন তারা। সাগরদ্বীপে এমন কোনো নিখোঁজ ব্যক্তি নেই জানার পর তারা সন্ধান আরও জোরদার করেন।
রেডিও সংশ্লিষ্ট লোকজন তখন সাগর নামের ভারতের যেসব অঞ্চল আছে, সেগুলোতে খোঁজ শুরু করেন। এরই ধারাবাহিকতায় তারা মধ্য প্রদেশের সাগর জেলায় খাজরা গ্রামের একজন নারীর বিষয়ে কিছু তথ্য পান। ওই নারী গঙ্গাসাগরে পুণ্যযাত্রায় এসে নিখোঁজ হন।
নাগ বিশ্বাস জানান, একদল পুণ্যার্থীর সঙ্গে গঙ্গাসাগর যান ওই নারী। তিনি কোনো একভাবে দলবিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে বাংলাদেশ থেকে আসা পুণ্যার্থীর একটি দলের সঙ্গে যোগ দেন।
তিনি আরও জানান, বাংলাদেশ থেকে প্রতি বছর অনেক পুণ্যার্থী ট্রলারে করে আসেন সাগর আইল্যান্ডে। রাধিকা সেই ট্রলারগুলোর একটিতে উঠে পড়েন বলে ধারণা করা হচ্ছে। সেটিতে চড়েই তিনি চলে যান বাংলাদেশে। সেখানে জীবিকার পথ না পেয়ে ভিক্ষাবৃত্তিকে বেছে নেন।
হারিয়ে যাওয়ার সময় রাধিকার স্বামী ও তিন ছেলে সন্তান ছিল ভারতে। বর্তমানে তাদের মধ্যে দুজন—রাধিকার স্বামী বালিরাম ও তাদের ছেলে পুরাণ—গত হয়েছেন।
এ নারীর অন্য দুই সন্তান রাজেশ ও গণেশ কাজ করেন দিল্লিতে।
নাগ বিশ্বাস জানান, রাধিকার সর্বশেষ ছবিগুলো তাদের হাতে আসার পর অতীতের ছবির সঙ্গে তার মিল পাওয়া যাচ্ছিল না। বার্ধক্যের সঙ্গে সঙ্গে তার মুখ ও শরীর ধুলায় বিবর্ণ হয়ে গিয়েছিল। এ কারণে তাকে একটি পার্লারে পাঠানো হয়। সেখানে রাধিকার মুখমণ্ডল পরিষ্কার করা হয়। তাকে নতুন জামাকাপড়ও দেওয়ার ব্যবস্থা করেন রেডিও সংশ্লিষ্টরা।
ডব্লিউবিআরসির সেক্রেটারি নাগ বিশ্বাসের ভাষ্য, পার্লারে যাওয়ার পরের ছবি পাঠানোর সঙ্গে সঙ্গেই মাকে চিনে ফেলেন রাজেশ। বর্তমানে রাজেশ, তার ভাইয়ের পাশাপাশি মধ্য প্রদেশের গ্রামটির সবাই অলৌকিক এ ঘটনায় আনন্দিত। তারা অধীর আগ্রহে অপেক্ষায় রয়েছেন রাধিকার ফেরার।