মণিপুরে দুই নারীকে লাঞ্ছনার ঘটনায় প্রশ্নবিদ্ধ পুলিশ

টিবিএন ডেস্ক

জুলাই ২১ ২০২৩, ১৭:১৭

মণিপুরে পুলিশের উপর জনতার ক্ষোভ। ছবি: সংগৃহীত

মণিপুরে পুলিশের উপর জনতার ক্ষোভ। ছবি: সংগৃহীত

  • 0

জাতিগত সংঘাতে জর্জরিত মণিপুরে দুই নারীকে বিবস্ত্র করে রাস্তায় প্যারেড করানোর ঘটনায় ক্ষোভে উত্তাল ভারত। এ ঘটনায় পুলিশের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলছেন অনেকে।

প্যারেডের ঘটনাটি ঘটে গত ৪ মে। তবে তা ভাইরাল হয় গত বুধবার। এরপরই ভারতসহ বিশ্বে মণিপুরের পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনা-সমালোচনা শুরু হয়। জাতিগত সংঘাতের আড়ালে নারীদের লাঞ্ছনা করায় নিন্দার ঝড় ওঠে স্যোশাল মিডিয়া।

দুই নারীকে লাঞ্ছনার ঘটনায় বৃহস্পতিবার সংঘবদ্ধ ধর্ষণের মামলায় কাজ শুরু করে পুলিশ, গ্রেফতার করা হয় চার জনকে।

ঘটনার পরপরই ওই দুই নারীর একজনের পরিবারের পক্ষ থেকে মামলা হয়। তবে সে সময় পুলিশ আমলে নেয়নি। ওই নারীর স্বজনরা অভিযোগ করেন, মেইতি গোষ্ঠী তাদের বাড়িঘরে হামলা চালালে পুলিশ গিয়ে উদ্ধার করেন। তবে পরে পুলিশের কাছ থেকে ওই দুই নারীকে ছিনিয়ে নেয়া হয়, ধর্ষণ করা হয়। এরপর পুলিশের সামনেই তাদের বিবস্ত্র করে রাস্তায় নামানো হয়। এরপর তাদের সামনে রেখে প্যারেড করে মেইতি গোষ্ঠীর লোকজন। পুলিশ তাদের ঠেকাতে এগিয়ে যায়নি।

রাজ্যের পুলিশ অবশ্য এসব অভিযোগ অস্বীকার করেনি। বিবিসিকে দেয়া সাক্ষাৎকারে পরিচয় গোপন রেখে সেখানকার শীর্ষ এক কর্মকর্তা জানান, গত ৩ মে সেখানে মেইতি ও কুকি গোষ্ঠীর মধ্যে জাতিগত দাঙ্গা শুরু হয়। এরপর থেকে জুলাই পর্যন্ত ছয় হাজারেরও বেশি মামলা হয়েছে। এসব মামলা নিয়ে কাজ করার জন্য যথেষ্ট পুলিশ নেই মণিপুরে। তাছাড়া, প্যারেডের ঘটনার সময় লাঞ্ছনাকারীদের বড় গ্রুপের তুলনায় ঘটনাস্থলে অল্প সংখ্যক পুলিশ সদস্য ছিলেন। তাদের পক্ষে এত বড় গ্রুপকে সামাল দেয়া সম্ভব হয়নি।

ওই দুই নারী কুকি গোষ্ঠীর, আর লাঞ্ছনাকারীরা ছিলেন মেইতির।

ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসকে দেয়া সাক্ষাৎকারে দুই নারীর একজন জানান, পুলিশ তাদেরকে হামলাকারীদের সামনে রাস্তায় ফেলে রেখে সরে যায়।

তিনি বলেন, ‘আমাদের গ্রামে সেদিন মেইতির বড় একটি দল হামলা চালায়। তাদের সঙ্গে পুলিশও সেখানে আসে। পুলিশ আমাদেরকে ঘর থেকে বের করে গ্রাম থেকে কিছুটা দূরে নিয়ে যায়। তারা রাস্তায় মেইতির দুর্বৃত্তদের সামনে আমাদের রেখে দিয়ে যায়। পুলিশই তাদের হাতে আমাদের তুলে দেয়।’

ওই নারী আরও জানান, মেইতির লোকজন তার ভাই ও বাবাকে তার সামনেই হত্যা করে। সব পুরুষদের হত্যা করার পর তাকে ধর্ষণ এবং তাকেসহ আরেক নারীকে বিবস্ত্র করে লাঞ্ছনা করা হয়।

দুই গোষ্ঠীর মধ্যে দুই মাসেরও বেশি সময় ধরে চলা সংঘাতে দেশ থেকে প্রায় বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে মণিপুর। সহিংসতায় প্রাণ হারান ১৩০ জন, বাস্তুচ্যুত হয়েছেন ৬০ হাজার মানুষ।

দীর্ঘদিন এই সংঘাত নিয়ে প্রকাশ্যে সরাসরি কিছু বলেননি ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। তবে সম্প্রতি দুই নারীর ওই ভিডিও ভাইরাল হওয়া পর তিনি বলেছেন, জড়িতদের কাউকেই রেহাই দেয়া হবে না।


0 মন্তব্য

মন্তব্য করুন