
আইসক্রিমওয়ালা যেভাবে লস অ্যাঞ্জেলেসের প্রতিরোধের প্রতীক

টিবিএন ডেস্ক
প্রকাশিত: জুন ৩০ ২০২৫, ০:০৪

মালিকের অনুপস্থিতিতে একাকী পড়ে থাকা লোজানোর আইসক্রিম কার্টের ছবিটি আপলোড করা হয় সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে। ছবি: কিম্বারলি নরিয়েগা/এনবিসি নিউজ
- 0
লোজানোর কার্টের ছবিটি শেয়ার করে সিয়েম্পর ইউনিডোস এলএর মতো একেবারে তৃণমূলের সংগঠনগুলো। এর পরপরই লোজানো ও তার পরিবারের জন্য ক্রাউডফান্ডিং শুরু হয়।
প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্পের আগ্রাসী অভিবাসন নীতির বিরুদ্ধে সম্প্রতি ফুঁসে উঠেছিল অভিবাসীদের শহর হিসেবে পরিচিত লস অ্যাঞ্জেলেস। বিক্ষোভের সে উত্তাপ এখন কমে এলেও তা জ্বলছে ছাইচাপা আগুনের মতো। বর্তমানের এ প্রতিবাদের কেন্দ্রবিন্দুতে রয়েছে আইসক্রিম বিক্রির একটি কার্ট। সেই কার্টের মালিক কীভাবে ইমিগ্রেশন অ্যান্ড কাস্টমস এনফোর্সমেন্ট-আইসের ধরপাকড়বিরোধী প্রতিবাদ ও প্রতিরোধের প্রতীক হয়ে গেছেন, তা জানিয়েছে এনবিসি নিউজ।
যেভাবে প্রতিরোধের প্রতীক
পশ্চিম লস অ্যাঞ্জেলেসের মহল্লাগুলোর জন্য প্রতিরোধের প্রতীকে পরিণত হয়েছে আইসক্রিমের পরিত্যক্ত কার্টটি। এ কার্টের মালিক অনেকের প্রিয় আইসক্রিমওয়ালা অ্যামব্রোসিও ‘এনরিক’ লোজানো। গত সোমবার বিকেলে কালভার সিটিতে পরিচিত পথে হাঁটার সময় তাকে গ্রেপ্তার করেন ফেডারেল এজেন্টরা।
গ্রেপ্তারের পর লোজানোর হঠাৎ উধাও হয়ে যাওয়া স্থানীয় বাসিন্দাদের হতবাক করে। কারণ গত ২০ বছরের বেশি সময় ধরে এলাকার পরিচিত মুখ ছিলেন তিনি।
কালভার সিটির বাসিন্দা প্যাট্রিসিয়া পান্ডে জানান, লোজানো সবসময় ইতিবাচক থাকতেন। এ নারী তার নাতনিকে নিয়ে অসংখ্য দিন লোজানোর আইসক্রিম উপভোগ করেছেন। আইসক্রিমওয়ালার কাছে এসেই জীবনের সুখের অনেকগুলো মুহূর্ত কাটিয়েছেন তিনি।
মালিকের অনুপস্থিতিতে একাকী পড়ে থাকা লোজানোর আইসক্রিম কার্টের ছবিটি আপলোড করা হয় সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে। মুহূর্তেই ছবিটি অভিবাসী সুরক্ষা কর্মী, স্থানীয় বাসিন্দা ও আইনপ্রণেতাদের মধ্যে তীব্র প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করে।
নজরকাড়া ছবি
লোজানোর কার্টের ছবিটি শেয়ার করে সিয়েম্পর ইউনিডোস এলএর মতো একেবারে তৃণমূলের সংগঠনগুলো। এর পরপরই লোজানো ও তার পরিবারের জন্য ক্রাউডফান্ডিং শুরু হয়। শুরুতে লোজানোর আইনি লড়াইয়ের ফি ও পরিবারের জীবনধারণের জন্য ৬ হাজার ডলার উত্তোলন করা হয়। ছবিটি দেশজুড়ে নজর কাড়ার পর ৫৭ হাজার ডলার উত্তোলন করা হয় ক্যাম্পেইন থেকে।
বিক্ষোভের নতুন কৌশল
জুনের শুরুতে লস অ্যাঞ্জেলেসে বড় পরিসরে বিক্ষোভ হয়। লোজানোর গ্রেপ্তার পরবর্তী প্রতিক্রিয়ায় সে বিক্ষোভে নতুন কৌশল প্রয়োগের প্রতিফলন দেখা যায়। বর্তমানে ফেডারেল ভবনগুলোর সামনে জমায়েতের পরিবর্তে লস অ্যাঞ্জেলেসের বিক্ষোভকারীরা নিজ মহল্লা ও নিজ বসবাসের জায়গা থেকে ট্রাম্পের গণবিতাড়ন চেষ্টার প্রতিবাদ জানাচ্ছেন।
অভিবাসন আইন বাস্তবায়ন অভিযানে গ্রেপ্তারের বিষয়টি যথাসময়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে জানাচ্ছেন অনেক তৃণমূল সংগঠনের সদস্যরা। তাদের রয়েছে মিলিয়ন মিলিয়ন অনুসারী।
সংগঠনগুলোর গ্রুপে গ্রেপ্তারের স্থানের বিষয়ে পোস্ট ও রিপোস্ট করা হয়। তারা স্বতঃস্ফূর্ত বিক্ষোভ আয়োজনের পাশাপাশি আটক স্বজনের বিষয়ে তথ্য পেতে পরিবারগুলোকে সাহায্য করে। এ ছাড়া প্রয়োজনে অর্থও সংগ্রহ করে তারা।
ট্রাম্প প্রশাসনের ধরপাকড়ের পর এসব কর্মকাণ্ডের সরাসরি প্রভাব নিরূপণ করা কঠিন, তবে ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলো জানিয়েছে, অপরিমেয় সহায়তা পাচ্ছেন তারা।
লোজানোর ভাতিজি কিম্বারলি নরিয়েগা জানান, তার মধ্যে অবিশ্বাস ছিল। তারা খুবই হতাশ হয়ে পড়েছিলেন। তারপর কালভার সিটির পুরো কমিউনিটি এবং আরও লোকজন লোজানোর পাশে এসে দাঁড়ায়।