একক অ্যাপ হিসেবে প্রথমবারের মতো জনপ্রিয় ভিডিও স্ট্রিমিং সাইট ইউটিউবকে পেছনে ফেলে শীর্ষ স্থানটি দখল করে নিয়েছে অ্যামেরিকান মিডিয়া প্রতিষ্ঠান নেটফ্লিক্স। এমন তথ্য জানিয়েছে ডিজিটাল বিশ্বের চিত্র নিয়ে গবেষণাকারী ক্যানাডিয়ান প্রতিষ্ঠান স্যান্ডভাইন।
স্যান্ডভাইনের গ্লোবাল ইন্টারনেট ফেনোমেনা রিপোর্ট ২০২৩ এ বলা হয়েছে, শীর্ষ এ তালিকায় জনপ্রিয় সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকের অবস্থান নয় নম্বরে।
ভিডিও স্ট্রিমিং সাইট নেটফ্লিক্স প্রতিষ্ঠিত হয় ১৯৯৭ সালের ২৯ অগাস্ট। ক্যালিফোর্নিয়ার স্কট ভ্যালিতে প্রতিষ্ঠানটি অ্যামেরিকান উদ্যোক্তা রিড হ্যাস্টিংস ও মার্ক র্যানডলফের হাতে গড়ে ওঠে।
বর্তমানে এই ভিডিও স্ট্রিমিং সাইটটির ইন্টারনেট ডেটা ব্যবহারকারীর হার শতকরা ১৩ দশমিক ৭৪ শতাংশ; অন্যদিকে ইউটিউবের ব্যবহারকারী ১০ দশমিক ৫১ শতাংশ।
নেটফ্লিক্স ২০১৩ সালে কনটেন্ট অর্থাৎ নাটক, চলচ্চিত্র, ভিডিও প্রযোজনা শিল্পে প্রবেশ করে। তাদের প্রথম পরিচালিত ধারাবাহিক "হাউয অব কার্ডস"। এরপর থেকে তাদের মুভি ও সিরিজ নির্মাণ বাড়তে থাকে।
‘নেটফ্লিক্স ওরিজিনাল’ ব্যনারে নিজস্ব সিরিজ ও মুভি অনলাইন লাইব্রেরির মাধ্যমে সাবসক্রাইবারদের তারা সেবা দিচ্ছে। ২০২৩ সালের ফেব্রুয়ারি মাসের হিসাব অনুসারে তাদের সাবসক্রাইবারের সংখ্যা ২৩০.৭ মিলিয়ন।
বর্তমানে ইন্টারনেট ডেটার প্রায় অর্ধেক ব্যবহার করা হয় ১০টি অ্যাপ্লিকেশনে; এগুলো হলো ফেসবুক, ইউটিউব, নেটফ্লিক্স, প্লে স্টেশন, ডিযনি প্লাস, অ্যামাযন প্রাইম, এইচটিটিপি মিডিয়া স্ট্রিম, এক্সবক্স লাইভ, জেনেরিক কিউইউআইসি ও টিকটক। অন্যদিকে ৪৮ শতাংশ ইন্টারনেট ব্যবহারকারী ব্যবহার করছে মাইক্রোসফট, মেটা, নেটফ্লিক্স, অ্যামাযন, অ্যালফাবেট ও অ্যাপল এর বিভিন্ন অ্যাপ্লিকেশন। নতুন কিছু অ্যাপ দিনদিন মানুষকে আকৃষ্ট করার ফলে ২০২১ এর তুলনায় এসবের ব্যবহার সম্মিলিতভাবে কিছুটা কমেছে।
স্যান্ডভাইন বলছে, ২০২২ সালে ইন্টারনেটে ভিডিও দেখার হার বেড়েছে ২৪ শতাংশ। আর বিশ্বজুড়ে ইন্টারনেট ব্যবহারের ৬৫ শতাংশ খরচ হয় শুধু ভিডিও দেখতে।
বর্তমানে গেম ডাউনলোডিংয়ের দিক থেকে সবচেয়ে এগিয়ে আছে প্লেস্টেশন। অপরদিকে সেরা ১০ এ জায়গা করে নিয়েছে স্টিম, রোবলোক্স, নিনটেন্ডো ও এক্সবক্স লাইভ।
ভিডিও স্ট্রিমিং সার্ভিসে মেটার ফেসবুক আছে নয় নম্বরে। এই ক্যাটাগরিতে কিছুটা পিছিয়ে থাকলেও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ক্যাটাগরিতে ফেসবুকের ধারের কাছেও নেই কোনো অ্যাপ্লিকেশন। মেটার আরেকটি অ্যাপ ইন্সটাগ্রাম আছে তৃতীয় সর্বোচ্চ স্থানে। এছাড়া শীর্ষ স্থান ধরে রেখেছে স্ন্যাপচ্যাট, টুইচ, রেডিট, ওয়ার্ডপ্রেস, পিন্টারেস্ট, টুইটার, ভিকে ও লিংকডইন এর মতো অ্যাপগুলো।
স্যান্ডভাইন বলছে, করোনা প্যান্ডেমিকের পর ফোন টু ফোন ভয়েস ও টেক্সট মেসেজ দেয়ার প্রবণতা নাটকীয়ভাবে বেড়েছে। এই যোগাযোগ ক্যাটাগরির শীর্ষে আছে জেনেরিক মেসেজিং নামের অ্যাপটি। আর ঠিক পরের জায়গাগুলোই আছে মেটার হোয়াটস অ্যাপ এবং ফেসবুকের দখলে। ডিসকর্ড ভয়েয, মাইক্রোসফট টিমস ও টেলিগ্রামের মতো অ্যাপগুলোও স্থান পেয়েছে শীর্ষ তালিকায়।