চায়নিজ পাইলটদের প্রশিক্ষণে অভিযুক্ত সেনাকে ফেরত চায় অ্যামেরিকা

টিবিএন ডেস্ক

জুলাই ২৫ ২০২৩, ২৩:২৬

সাবেক অ্যামেরিকান মেরিন সেনা ড্যানিয়েল ডুগান। ছবি: সিএনএন

সাবেক অ্যামেরিকান মেরিন সেনা ড্যানিয়েল ডুগান। ছবি: সিএনএন

  • 0

সাবেক অ্যামেরিকান মেরিন নেভি পাইলট ড্যানিয়েল ডুগানের বিরুদ্ধে অবৈধভাবে চায়নার সামরিক পাইলটদের প্রশিক্ষণের অভিযোগ আনা হয়েছে। বর্তমানে অস্ট্রেলিয়ার নাগরিকত্বধারী ৫৪ বছর বয়সী ডুগানকে গত অক্টোবরে আটক করেছে অস্ট্রেলিয়ান বাহিনী। তবে তাকে অ্যামেরিকায় ফেরত দেয়ার দাবি জানিয়েছে ডিপার্টমেন্ট অফ স্টেইট।

ডুগানকে অস্ট্রেলিয়ার সর্বোচ্চ নিরাপত্তা বিশিষ্ট কারাগারে রাখা হয়েছে। অস্ট্রেলিয়ার অ্যাটর্নি জেনারেল ডুগানের বিরুদ্ধে অর্থ পাচার ও অ্যামেরিকার সামরিক বাহিনীর তথ্য পাচারের মামলার রায়ে তাকে অ্যামেরিকায় প্রত্যাবর্তনের আদেশ দিয়েছেন। তার এই নির্দেশের বিরুদ্ধে লড়াই করছেন ডুগানের আইনজীবীরা।

ডুগানের প্রত্যাবর্তনের বিপক্ষে যুক্তি দিয়ে তার আইনজীবীরা বলেন, ‘ডুগানকে চায়না থেকে প্রলোভিত করা হয়েছিল। তিনি বর্তমানে অস্ট্রেলিয়ার নাগরিক। সুতরাং তাকে গ্রেফতারে অ্যামেরিকার আইনি প্রক্রিয়া অনুপযুক্ত।’

অ্যামেরিকান মেরিন বাহিনীতে মেজর হিসাবে চূড়ান্ত মিশন শেষে ডুগান ২০০২ সালে অস্ট্রেলিয়ায় চলে যান। তিনি ২০১১ সালে তার গার্লফ্রেন্ড সাফরিনের সঙ্গে দেখা করেন ও তার এক বছর পরে তিনি অস্ট্রেলিয়ান নাগরিক হন। তিনি তার অ্যামেরিকান নাগরিকত্ব ত্যাগ করেন ও পরিবারসহ চায়নায় চলে যান।

সাফরিন ও তার সন্তানরা ২০১৮ সালে অস্ট্রেলিয়ায় ফিরে আসলেও ডুগান চায়নায় অবস্থান করেন। বিমান লাইসেন্সের জন্য অস্ট্রেলিয়ার নিরাপত্তা ছাড়পত্র পাওয়ার পর ২০২২ সালের সেপ্টেম্বরে ডুগান পরিবারের সঙ্গে অস্ট্রেলিয়ায় মিলিত হন।

কয়েক সপ্তাহের মধ্যেই সেই ছাড়পত্র বাতিল করে তাকে হেফাজতে নেয় অস্ট্রেলিয়ার নিরাপত্তা বাহিনী।

তারা অভিযোগ করেন, ডুগান ২০০৯ সালের নভেম্বর থেকে ২০১২ সালের নভেম্বর পর্যন্ত অস্ট্রেলিয়া কর্তৃপক্ষের অনুমতি ছাড়াই চায়নার সামরিক পাইলটদের প্রশিক্ষণ দিয়েছেন।

অভিযোগপত্রে বলা হয়েছে, ‘২০০৮ সালের শুরুর দিকে’ ডুগান অ্যামেরিকান ফরেইন মিনিস্ট্রি থেকে একটি ই-মেইল পান, যাতে বলা হয়, যেহেতু তিনি অ্যামেরিকান মেরিনের সাবেক সদস্য, তাকে ডিফেন্স ট্রেড কন্ট্রোলস ডিরেক্টরেটে নিবন্ধন করতে হবে এবং বিদেশি বিমান বাহিনীকে প্রশিক্ষণের অনুমতির জন্য আবেদন করতে হবে।

অ্যামেরিকার ডিপার্টমেন্ট অফ স্টেইট দাবি করেছে, চায়নার উপর অ্যামেরিকার অস্ত্র নিষেধাজ্ঞা লঙ্ঘন করে ডুগান চায়নায় ডিফেন্স সার্ভিস দেয়ার জন্য টেস্ট ফ্লাইং অ্যাকাডেমি অফ সাউথ আফ্রিকাসহ (টিএফএএসএ) অন্যদের সঙ্গে ষড়যন্ত্র করেছিলেন।

অবশ্য টিএফএএসএ বলেছে, তারা প্রতিটি ক্ষেত্রে আইন মেনে কাজ করেছে।

এক বিবৃতিতে টিএফএএসএ জানায়, ডুগান ২০১২ সালের নভেম্বর থেকে ডিসেম্বরের মধ্যে সাউথ আফ্রিকায় কোম্পানিটির পক্ষে একটি পরীক্ষামূলক চুক্তি করেছিলেন। এই চুক্তিকালীন তিনি টিএফএএসএ-র কোনও প্রশিক্ষণ আদেশে চায়নায় কাজ করেননি।

অভিযোগপত্রে বলা হয়েছে, পাইলট প্রশিক্ষণার্থীদের মূল্যায়ন, নৌ বিমান চালনা সম্পর্কিত সরঞ্জাম পরীক্ষা, নৌ বিমানবাহী রণতরী থেকে বিমান উৎক্ষেপণ ও অবতরণের কৌশল, কৌশল ও পদ্ধতি সম্পর্কে নির্দেশনা সহ অন্যান্য সামরিক প্রশিক্ষণ দিতে ডুগান একটি চায়নিজ ফার্মের সঙ্গে সরাসরি আলোচনা করেছেন।

ডুগান এবিসিকে জানান, চায়নার সামরিক পাইলটদের প্রশিক্ষণের কোন ক্ষেত্রই গোপন বা কোন দেশের মালিকানাধীন তথ্য প্রকাশের সঙ্গে জড়িত ছিল না।

তিনি বলেন, ‘আমি যার প্রশিক্ষণ দিয়েছি তার সবই প্রকাশিত হয়েছে, ওপেন-সোর্স তথ্য। যে কেউ আগ্রহী হলে এসব তথ্য গুগল করতে পারে বা উইকিপিডিয়ায় দেখতে পারে।’

অ্যামেরিকা অভিযোগ করে বলেছে, টিএফএএসএ এর মাধ্যমে ডুগান যেসব প্রশিক্ষণ দিয়েছেন তাতে অ্যামেরিকার কেনা এবং অ্যামেরিকার অনুমোদন ছাড়াই সাউথ আফ্রিকায় পাচার করা একটি টি-টু বাকআই, একটি টুইন-ইঞ্জিন, স্ট্রেইট-উইং বিমান ব্যবহার করা হয়েছে।


0 মন্তব্য

মন্তব্য করুন