
কাতারে কতগুলো ক্ষেপণাস্ত্র ছুড়েছে ইরান, প্রভাব কী

টিবিএন ডেস্ক
প্রকাশিত: জুন ২৩ ২০২৫, ২৩:০৪

কাতারের আকাশে ইরান থেকে ছোড়া ক্ষেপণাস্ত্র। ছবি: রয়টার্স
- 0
কাতার সরকারের দাবি, ইরান থেকে মোট ১৯টি ক্ষেপণাস্ত্র ছোড়া হয়েছে। এর মধ্যে একটি আল উদেইদ বিমান ঘাঁটিতে আঘাত করলেও কেউ হতাহত হয়নি।
কাতারের আল উদেইদ বিমান ঘাঁটিতে সোমবার হামলার কথা জানিয়েছে ইরান। আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থার মাধ্যমে সে হামলা প্রতিহত করার তথ্য দিয়েছে কাতার।
দেশটির দাবি, হামলার আগেই খালি করা হয়েছিল স্থাপনাটি।
ইরানে রবিবার অ্যামেরিকার হামলার জবাবে দেশটির ঘাঁটিতে হামলা করে তেহরান। এ হামলায় কতগুলো ক্ষেপণাস্ত্র ছোড়া হয়েছে এবং এর প্রভাব কী, তা জানিয়েছে কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল জাজিরা।
যা বলছে অ্যামেরিকা
অ্যামেরিকার কর্মকর্তাদের ভাষ্য, ঘাঁটিতে স্বল্প পাল্লা এবং মাঝারি পাল্লার ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র ছুড়েছে ইরান। এতে কোনো হতাহতের খবর পাওয়া যায়নি।
কাতারি কর্মকর্তাদের ভাষ্য
কাতারি কর্মকর্তারা জানান, তারা মধ্যপ্রাচ্যে আল উদেইদসহ অন্য ঘাঁটিতে হামলার খবর পেয়েছিলেন। সোমবার সন্ধ্যা সাড়ে সাতটায় আল উদেইদ ঘাঁটি লক্ষ্য করে ইরানের ক্ষেপণাস্ত্র ছোড়ার খবর পাওয়া যায়। এর মধ্যে একটি ক্ষেপণাস্ত্র এসে পড়ে ঘাঁটিতে। এতে কোনো প্রাণহানি হয়নি।
কর্মকর্তারা জানান, হামলার আগেই খালি করা হয় আল উদেইদ ঘাঁটি। হামলা প্রতিহত করে গর্বিত কাতার। এ হামলায় কোনো ক্ষয়ক্ষতির খবর পাননি তারা।
পরিস্থিতি ‘সম্পূর্ণ স্থিতিশীল’
কাতারের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, দেশটির পরিস্থিতি এখন ‘সম্পূর্ণ স্থিতিশীল’। জনগণের নিরাপত্তায় সংশ্লিষ্ট সব কর্তৃপক্ষ সমন্বিতভাবে কাজ করছে।
দেশটির জননিরাপত্তা বিভাগের কর্মকর্তা জাবর আল-নাইমি জানান, নাগরিক ও বাসিন্দাদের নিরাপত্তাকে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দিচ্ছে সরকার। তিনি সংবাদ সম্মেলনে জানান, আন্তর্জাতিক বা দেশের বাইরের সংকট বা সংঘাতকে কাতারবাসীর জীবনে প্রভাব ফেলতে দেওয়া হবে না।
কাতারের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বলেছে, হামলার পর জীবনযাপনে স্বাভাবিকতা ফিরে এসেছে। মন্ত্রণালয়টি যুদ্ধরত পক্ষগুলোকে আলোচনায় বসার আহ্বান পুনর্ব্যক্ত করেছে।
কতটি ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ
কাতার সরকারের দাবি, ইরান থেকে মোট ১৯টি ক্ষেপণাস্ত্র ছোড়া হয়েছে। এর মধ্যে একটি আল উদেইদ বিমান ঘাঁটিতে আঘাত করলেও কেউ হতাহত হয়নি। বাকি ১৮টি ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিহত করেছে কাতারের আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা।
ঘাঁটিতে হামলা ‘প্রতীকী’
আল উদেইদ ঘাঁটিতে ইরানের হামলাকে প্রতীকী হিসেবে দেখছেন দোহাভিত্তিক একজন বিশেষজ্ঞ।
দোহা ইনস্টিটিউটের ক্রিটিক্যাল সিকিউরিটি স্টাডিজের সহকারী অধ্যাপক মুহানাদ সেলুম বলেন, হামলার তাৎপর্য ইরান ও অ্যামেরিকার সংঘাত বৃদ্ধির মধ্যে নিহিত। এবারই প্রথম ইরাকের বাইরে অ্যামেরিকার কোনো ঘাঁটিতে হামলা করল ইরান।
ইরানের হামলার বিষয়ে সেলুম বলেন, ‘তারা অতীতে এমনটা করেছে ইরাকে এবং ওই দেশ সম্ভবত ২০০৩ সাল থেকে অ্যামেরিকা ও ইরানের মধ্যকার রণক্ষেত্রে পরিণত হয়েছে।’
এ বিশেষজ্ঞ জোর দিয়ে বলেন, ইরাকে করা হামলাগুলো স্বাভাবিক হয়ে গেছে। কাতারে হামলার মধ্য দিয়ে এখন এটি ইরানের বাইরে চলে যাচ্ছে।
তিনি স্মরণ করিয়ে দেন, আগেই খালি করে ফেলা আল উদেইদ বিমান ঘাঁটিতে শুধু অ্যামেরিকান সেনা নয়; কাতারি সেনাও রয়েছে।
এ বিশেষজ্ঞ বলেন, তার প্রাথমিক মূল্যায়ন হলো হামলার বিষয়ে অ্যামেরিকা এবং সম্ভবত কাতারকে আগেই জানিয়েছে ইরান। এটি দৃশ্যত প্রতীকী হামলা।