বাংলাদেশে সুষ্ঠু নির্বাচনের প্রতিশ্রুতি ব্লিনকেনকে জানালেন মোমেন

টিবিএন ডেস্ক

এপ্রিল ১১ ২০২৩, ১৬:২৮

ওয়াশিংটনে ব্লিনকেন-মোমেন বৈঠক। ছবি: বাসস

ওয়াশিংটনে ব্লিনকেন-মোমেন বৈঠক। ছবি: বাসস

  • 0

সেক্রেটারি অব স্টেইট অ্যান্টোনি ব্লিনকেনের সঙ্গে ওয়াশিংটনে বৈঠক করেছেন বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন। অ্যামেরিকান স্টেইট ডিপার্টমেন্টে সোমবার এ বৈঠক হয়।

বাসস জানায়, বৈঠকে বাংলাদেশে একটি অবাধ ওসুষ্ঠু নির্বাচনের গুরুত্বের ব্যাপারে ব্লিনকেনের সঙ্গে বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী একমত প্রকাশ করেন। এ বিষয়ে বাংলাদেশ সরকারের প্রতিশ্রুতি পুনর্ব্যক্ত করেন তিনি।  

মিডিয়ার উপস্থিতিতে প্রাথমিক বক্তব্যে দুই নেতা বিদ্যমান দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক নিয়ে সন্তোষ জানান। বিগত ৫০ বছরের দৃঢ় সম্পর্কের উপর ভিত্তি করে আগামী ৫০ বছরের জন্য দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক আরও জোরদারের আকাঙ্ক্ষাও তারা প্রকাশ করেন। 

অ্যামেরিকা-বাংলাদেশ সম্পর্ককে বিস্তৃত, গতিশীল ও বহুমুখী উল্লেখ করে ড. মোমেন এ সম্পর্ক আরও উন্নত, বর্ধিত ও সুদৃঢ় করার আশা প্রকাশ করেন। তিনি বাংলাদেশের স্বাধীনতা দিবসে ‘জয় বাংলা’ দিয়ে শেষ হওয়া প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে পাঠানো প্রেসিডেন্ট বাইডেনের বার্তার জন্য ধন্যবাদ জানান।

বৈঠকে তারা অর্থনৈতিক অংশীদারত্ব জোরদার ও বহুমুখীকরণ, রোহিঙ্গা সংকটের সমাধান, জলবায়ু পরিবর্তন, শ্রম অধিকার, নাগরিক স্বাধীনতা এবং নির্বাচনসহ পারস্পরিক স্বার্থসংশ্লিষ্ট বিভিন্ন বিষয়ে আলোচনা করেন।

বাংলাদেশে শ্রম খাত সংস্কারের চলমান এবং শেষ হওয়া কাজগুলো সম্পর্কে ব্লিনকেনকে অবহিত করে ড. মোমেন। তিনি আশা প্রকাশ করেন, দুই দেশের মধ্যে শক্তিশালী অর্থনৈতিক অংশীদারত্বের মাধ্যমে বাংলাদেশের এই প্রচেষ্টাগুলোকে যথাযথভাবে মূল্যায়ণ করা হবে। 

বাংলাদেশে শ্রম পরিস্থিতির উন্নতির জন্য দুই দেশের মধ্যে চলমান যৌথ কর্মকাণ্ডের অগ্রগতি নিয়ে সন্তোষ জানান ব্লিনকেন। তিনি বাংলাদেশের উদার বিনিয়োগ ব্যবস্থার সদ্ব্যবহার করতে এবং অ্যামেরিকার প্রাইভেট খাতকে বাংলাদেশের বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল ও হাই-টেকপার্কে বিনিয়োগে উৎসাহিত করার আহ্বান জানান।

বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী কোভিড-নাইন্টিন মোকাবিলায় উদার সহায়তা এবং বাংলাদেশে আশ্রয় নেয়া রোহিঙ্গাদের জন্যমানবিক সহায়তা অব্যাহত রাখায় অ্যামেরিকাকে ধন্যবাদ জানান। তিনি রোহিঙ্গাদের মিয়ানমারে স্বেচ্ছায় প্রত্যাবাসনের পরিবেশ সৃষ্টির জন্য মিয়ানমার সরকারের ওপর আন্তর্জাতিক চাপ বাড়ানোর ওপর জোর দেন। 

সেক্রেটারি ব্লিনকেন ১০ লাখের বেশি রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীকে উদারভাবে বাংলাদেশে আশ্রয় দেয়ার জন্য বাংলাদেশের ভূয়সী প্রশংসা করেন। রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবাসনের লক্ষ্যে প্রচেষ্টা আব্যাহত রাখার আশ্বাসও দেন তিনি। 

বঙ্গবন্ধুর আত্মস্বীকৃত খুনি রাশেদ চৌধুরীকে হস্তান্তরের জন্য অ্যামেরিকার প্রতি তিনি আবারও অনুরোধ জানান ।

বৈঠক শেষে পররাষ্ট্রমন্ত্রী মোমেন বাংলাদেশের স্বাধীনতা দিবসে পাঠানো উষ্ণ বার্তার জন্য অ্যামেরিকান প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনকে ধন্যবাদ জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পাঠানো একটি চিঠি হস্তান্তর করেন।

বৈঠকে অ্যামেরিকায় বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত মুহাম্মদ ইমরান, দূতালয় উপ-প্রধান ফেরদৌসী শাহরিয়ার, মহাপরিচালক (নর্থ অ্যামেরিকা) খন্দকার মাসুদুল আলম এবং ওয়াশিংটনে বাংলাদেশ দূতাবাস ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন। 

অ্যামেরিকার পক্ষে বৈঠকে কাউন্সেলর ডেরেক শোলে; জনসংখ্যা, শরণার্থী ও অভিবাসন বিষয়ক অ্যাসিস্ট্যান্ট সেক্রেটারি অফ স্টেট জুলিয়েটাভালস নয়েস; গণতন্ত্র, মানবাধিকার এবং শ্রম বিষয়ক ডেপুটি অ্যাসিস্ট্যান্ট সেক্রেটারি অফ স্টেট কারাম্যাক ডোনাল্ড, দক্ষিণ ও মধ্য এশিয়াবিষয়ক ডেপুটি অ্যাসিস্ট্যান্ট সেক্রেটারি অফ স্টেট আফরিন উপস্থিত ছিলেন।


0 মন্তব্য

মন্তব্য করুন