ভারতের জি বাংলা চ্যানেলের জনপ্রিয় সংগীত প্রতিযোগিতা 'সারেগামাপা' খ্যাত কণ্ঠশিল্পী মাঈনুল আহসান নোবেলকে অপহরণ, ধর্ষণ, নারী নির্যাতন ও পর্নোগ্রাফি আইনে দায়ের করা মামলায় গ্রেপ্তার করেছে ডেমরা থানা-পুলিশ।
রাজধানীর ডেমরা স্টাফ কোয়ার্টার এলাকায় সোমবার দিবাগত রাত ২টার দিকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়।
পুলিশ জানায়, ইডেন কলেজের এক ছাত্রীকে বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে গত বছরের নভেম্বরে গুলশানে দেখা করার কথা বলে ডেকে নেন নোবেল। পরে তাকে ডেমরার একটি বাসায় নিয়ে গিয়ে সাত মাস ধরে আটকে রেখে ধর্ষণ ও নির্যাতন করেন। এই সময় তিনি ভুক্তভোগীর মোবাইল ফোন ভেঙে ফেলেন এবং ধর্ষণের ভিডিও ধারণ করে তা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে দেওয়ার হুমকি দেন।
সম্প্রতি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে নোবেলের একটি ভিডিও ভাইরাল হয়, যেখানে তাকে এক নারীকে সিঁড়ি দিয়ে টেনে নামাতে দেখা যায়। ভিডিওটি দেখে ভুক্তভোগীর পরিবার তাকে চিনতে পারেন এবং জাতীয় জরুরি সেবা নম্বর ৯৯৯-এ কল করে পুলিশকে জানান। পরে পুলিশ অভিযান চালিয়ে ওই নারীকে উদ্ধার করে এবং নোবেলকে গ্রেপ্তার করে।
ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট (সিএমএম) আদালতে মঙ্গলবার নোবেলকে হাজির করা হলে বিচারক তার জামিন আবেদন নামঞ্জুর করে তাকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।
নোবেল এর আগেও বিভিন্ন বিতর্কে জড়িয়েছেন। তবে এবার তার বিরুদ্ধে অপহরণ, ধর্ষণ, নারী নির্যাতন ও পর্নোগ্রাফি আইনে মামলা দায়ের হওয়ার পর তাকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।
এই ঘটনায় দেশের সাংস্কৃতিক অঙ্গনে ব্যাপক চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে। অনেকেই সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে নোবেলের বিরুদ্ধে ক্ষোভ প্রকাশ করছেন এবং ভুক্তভোগীর পাশে দাঁড়ানোর আহ্বান জানিয়েছেন।
পুলিশ জানিয়েছে, মামলাটি তদন্তাধীন এবং প্রয়োজনীয় আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
এদিকে নোবেলকে গ্রেপ্তারের পর মুখ খুলেছেন তার স্ত্রী সালসাবিল মাহমুদ। নিজের ফেসবুকে দেওয়া এক পোস্টে জানিয়েছেন তিনি বর্তমানে দেশের বাইরে রয়েছেন।
পোস্টে সালসাবিল লেখেন, ‘আমি এখন মালয়েশিয়ায় রয়েছি। ফেসবুকে বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমে এই খবর দেখে জানলাম। নোবেলের সঙ্গে আমার অনেক দিন দেখা হয় না ঠিক, কিন্তু ফোনে কথা হয়। আর যে অভিযোগ শুনলাম, ‘সাত মাস ধরে নোবেল আটকে রেখে ধর্ষণ’- আসলে ওর সঙ্গে সাত মাস কারো পক্ষে থাকা সম্ভব এটা আমার বিশ্বাস হয় না। আর ও নেশাগ্রস্ত, ও কিভাবে আটকে রাখবে?’
নোবেল মাদকাসক্ত উল্লেখ করে সালসাবিল বলেন, ‘ও দীর্ঘদিন ধরে রিহ্যাবে ছিল। তারপর ছাড়া পেয়েছে। এরপর আমার সঙ্গে কথা হতো, কিন্তু ওর সঙ্গে যে কোনো মেয়ে থাকত সেটা আমি জানতাম না। যেহেতু মামলা হয়েছে, ধর্ষণের- এখন আদালতে প্রমাণ হবে সত্য-মিথ্যা, আমাকেও সেভাবে অপেক্ষা করতে হবে।’
সালসাবিল মাহমুদ এর আগে নোবেলকে ডিভোর্স লেটার পাঠিয়েছিলেন, পরে সেটা মিটমাট করা হয়।