সিরিয়ার দ্রুজ অধ্যুষিত এলাকায় কয়েকদিন ধরে চলমান রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষের পর যুদ্ধবিরতিতে সম্মত হয়েছে ইসরায়েল এবং সিরিয়া। শুক্রবার এ কথা জানিয়েছেন তুরস্কে নিযুক্ত অ্যামেরিকান রাষ্ট্রদূত।

সিরিয়ার দ্রুজ সম্প্রদায়কে রক্ষা করার উদ্দেশ্যে ইসরায়েল সিরিয়া আক্রমণ করছে দাবি করে দেশটি বুধবার সিরিয়ার রাজধানী দামেস্ক ও দক্ষিণের সুয়েইদা অঞ্চলে বিমান হামলা চালায় এবং ঐ অঞ্চল থেকে সরকারি বাহিনীকে প্রত্যাহারের দাবি জানায়।দ্রুজ মূলত একটি ছোট কিন্তু প্রভাবশালী সংখ্যালঘু সম্প্রদায়। এর কিছু অংশ লেবানন এবং ইসরায়েলে বসবাস করছে।

অ্যামেরিকান রাষ্ট্রদূত টম ব্যারাক এক্সে দেয়া একটি পোস্টে বলেন, ‘আমরা দ্রুজ, বেদুইন এবং সুন্নিদের তাদের অস্ত্র পরিত্যাগ করা এবং অন্যান্য সংখ্যালঘুদের সাথে একত্রে একটি নতুন এবং ঐক্যবদ্ধ সিরিয়া গড়ে তোলার আহ্বান জানাচ্ছি।’

টম ব্যারাক আরও বলেন, তুরস্ক, জর্ডান এবং প্রতিবেশী দেশগুলো সমর্থিত যুদ্ধবিরতিতে ইসরায়েল এবং সিরিয়া সম্মত হয়েছে।

তবে ওয়াশিংটনে অবস্থিত ইসরায়েলি দূতাবাস এবং কানাডায় অবস্থিত সিরিয়ার কনস্যুলেট তাৎক্ষণিকভাবে এ বিষয়ে মন্তব্যের জন্য রয়টার্সের অনুরোধের জবাব দেয়নি।

সিরিয়ার সুয়েইদা অঞ্চলে প্রায় এক সপ্তাহ ধরে সহিংসতা চলছে। বেদুইন যোদ্ধা ও দ্রুজ গোষ্ঠীগুলোর মধ্যে সংঘর্ষের মধ্য দিয়ে এ সহিংসতা শুরু হয়।

শুক্রবারের শুরুতে, একজন ইসরায়েলি কর্মকর্তা ইঙ্গিত দিয়েছিলেন যে, ইসরায়েল আগামী দুই দিনের জন্য সুয়েইদা এলাকায় সিরিয়ার সরকারি বাহিনীকে সীমিত প্রবেশাধিকারের অনুমতি দিতে সম্মত হয়েছে।

অপরদিকে সিরিয়ার প্রেসিডেন্টের দপ্তর গতকাল শুক্রবার রাতে জানায়, দক্ষিণাঞ্চলে সংঘর্ষ থামাতে বিশেষ বাহিনী মোতায়েন করা হবে। নতুন করে যাতে সংঘাত শুরু না হয় এবং স্থিতিশীলতা ফিরে আসে, সে জন্য রাজনৈতিক ও নিরাপত্তামূলক উদ্যোগ নেয়া হবে।

সিরিয়ার দক্ষিণাঞ্চলে সংঘাত বন্ধে এ সপ্তাহের শুরুতে সেখানে সরকারি সেনা পাঠায় দামেস্ক। কিন্তু সেনারা স্থানীয় দ্রুজদের ওপর ব্যাপক নিপীড়ন চালান বলে অভিযোগ ওঠে। বুধবার ইসরায়েলি হামলায় আক্রান্ত হয়ে সরকারি সেনারা পিছু হটেন।

ইসরায়েল বলেছে, তারা সিরিয়াকে দেশটির দক্ষিণাঞ্চলে সেনা মোতায়েন করতে দেবে না। কিন্তু গতকাল এ অবস্থান থেকে কিছুটা সরে আসে ইসরায়েল। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ঐ কর্মকর্তা জানিয়েছেন, সংঘর্ষ বন্ধে তারা সিরীয় বাহিনীকে ৪৮ ঘণ্টার সংক্ষিপ্ত সময়ের জন্য ওই এলাকায় প্রবেশের অনুমতি দেবে।

সিরিয়ার নতুন শাসকদের ‘আপাত ছদ্মবেশী জিহাদি’ হিসেবে উল্লেখ করে ইসরায়েল প্রতিশ্রুতি দিয়েছে, তারা ওই অঞ্চলের দ্রুজ জনগোষ্ঠীকে রক্ষা করবে। এতে ইসরায়েলে বসবাসরত দ্রুজ সংখ্যালঘুরাও সমর্থন দিয়েছেন।