কারাগার থেকে গৃহবন্দি অং সান সু চি

টিবিএন ডেস্ক

জুলাই ২৭ ২০২৩, ১১:৩৮

মিয়ানমারের বেসামরিক গণতান্ত্রিক নেতা অং সান সু চি। ছবি: সংগৃহীত

মিয়ানমারের বেসামরিক গণতান্ত্রিক নেতা অং সান সু চি। ছবি: সংগৃহীত

  • 0

মিয়ানমারে ২০২১ সালের ফেব্রুয়ারিতে সামরিক অভ্যুত্থানের পর কারাগারে থাকা ক্ষমতাচ্যুত বেসামরিক নেতা, শান্তিতে নোবেল জয়ী অং সান সু চিকে গৃহবন্দি করা হয়েছে।

মিয়ানমারের কারা কর্তৃপক্ষ বিবিসি বার্মিজকে জানিয়েছে, সোমবার সু চিকে কারাগার থেকে নেপিদোর একটি সরকারি ভবনে নিয়ে যাওয়া হয়। সামরিক অভ্যুত্থানের পর এক বছর তাকে নির্জন কারাগারে বন্দি রাখা হয়েছিল।

এর আগে সামরিক বাহিনীর বিচারে তাকে ৩৩ বছরের কারাদণ্ড দেয়া হয়। তবে এই সাজা কমিয়ে ৭৮ বছর বয়সী সু চিকে গৃহবন্দি করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে মিয়ানমারের সামরিক সরকার।

কারাগার থেকে তার স্থানান্তরের বিষয়ে সামরিক বাহিনীর পক্ষ থেকে এখনও কোনো নিশ্চিত তথ্য পাওয়া যায়নি। রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, সু চিকে গৃহবন্দি করার পদক্ষেপটি সামরিক সরকারের পক্ষ থেকে একটি ইতিবাচক লক্ষণ হতে পারে।

মিয়ানমারের গণতান্ত্রিক এই নেতার গ্রেফতারের পর থেকে তাকে মুক্তি দেয়ার জন্য অসংখ্য আহ্বানের মুখোমুখি হয়েছে দেশটির সামরিক বাহিনী ও সামরিক সরকার।

সু চিকে কোনো পূর্ব ঘোষণা ছাড়াই কারাগার থেকে সরিয়ে নেয়ায় তিনি অসুস্থ বলে গুঞ্জন ওঠে। দেশটির সামরিক বাহিনী এসব অভিযোগ অস্বীকার করেছে।

এ সপ্তাহের শুরুতে নেপিদো কারাগারের একটি সূত্র বিবিসি বার্মিজকে জানিয়েছে, সু চি সুস্থ আছেন।

গত দুই বছরেরও বেশি সময় ধরে তার অবস্থা সম্পর্কে সংবাদ মাধ্যমে কোনো খবর পাওয়া যায়নি। থাইল্যান্ডের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডন প্রামুদ্যুইনাই চলতি মাসে বলেছেন, তিনি সু চির সঙ্গে দেখা করেছেন।

বিভিন্ন সূত্রে জানা যায়, সু চি ও পার্লামেন্টের নিম্নকক্ষের স্পিকার টি খুন মিয়াতের মধ্যে বৈঠকের আয়োজন করেছে দেশটির সামরিক বাহিনী। তবে সামরিক বাহিনী এই আলোচনার বিষয়টি নিশ্চিত করেনি।

সু চির দল ন্যাশনাল লীগ ফর ডেমোক্রেসি ২০২০ সালের নভেম্বরে মিয়ানমারের সাধারণ নির্বাচনে জয়লাভ করেছিল। তবে তার কাছে ক্ষমতা না দিয়ে ২০২১ সালের ১ ফেব্রুয়ারি তাকে গ্রেপ্তার করে তাতমাদাও (মিয়ানমার সশস্ত্র বাহিনী) । এরপর দেশটির ক্ষমতা গ্রহণ করে সশস্ত্র বাহিনী।

দেশ জুড়ে চলা বিক্ষোভের মাঝেই সু চির বিরুদ্ধে বেশ কয়েকটি অভিযোগ দায়ের করে মিয়ানমারের সামরিক বাহিনী।

দুই অভিযোগে তাকে ২০২১ সালের ৬ ডিসেম্বর বছরের কারাদণ্ড দেয়া হয়। পরে ২০২২ সালের ১০ জানুয়ারি আরেকটি অভিযোগে তাকে আরও চার বছরের কারাদণ্ড দেয় দেশটির সামরিক সরকার। এরপর দুর্নীতির পাঁচ অভিযোগসহ মোট দশটি অভিযোগে ২০২২ সালের ১২ অক্টোবর ২৬ বছরের কারাদণ্ড দেয়া হয়।

সু চির গণতান্ত্রিকভাবে জয়ের পরেও তাকে কারাগারে পাঠানোয় জাতিসংঘ, বেশিরভাগ ইউরোপীয় দেশ ও অ্যামেরিকা এই নেতাকে রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত হিসাবে গ্রেফতার, বিচার এবং শাস্তির নিন্দা জানিয়েছে।


0 মন্তব্য

মন্তব্য করুন