
বাংলাদেশে আগামী বছরের শুরুতে নির্বাচনকে স্বাগত মার্কো রুবিওর

টিবিএন ডেস্ক
প্রকাশিত: জুন ৩০ ২০২৫, ২৩:৫৪

বাংলাদেশের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস ও অ্যামেরিকার স্টেইট সেক্রেটারি মার্কো রুবিও। কোলাজ: বাসস
- 0
প্রধান উপদেষ্টা ইউনূস সাধারণ নির্বাচনের আগে বাংলাদেশ সফরের জন্য স্টেইট সেক্রেটারি রুবিওকে আমন্ত্রণ জানান, যাতে তিনি দেশের গণতান্ত্রিক উত্তরণ প্রত্যক্ষ করতে পারেন।
অ্যামেরিকার স্টেইট সেক্রেটারি মার্কো রুবিও বাংলাদেশের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে টেলিফোনে কথা বলেছেন।
ঢাকার স্থানীয় সময় সোমবার সন্ধ্যা সাড়ে সাতটায় তাদের মধ্যে এ ফোনালাপ হয়।
প্রায় ১৫ মিনিটব্যাপী এ আলাপ ছিল উষ্ণ, সৌহার্দ্যপূর্ণ ও গঠনমূলক, যা দুই দেশের মধ্যকার দৃঢ় দ্বিপক্ষীয় সম্প্রীতির প্রতিফলন।
টেলিফোনে কথোপকথনের পর স্টেইট ডিপার্টমেন্টের মুখপাত্র ট্যামি ব্রুস বলেন, 'স্টেইট সেক্রেটারি রুবিও ও বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. ইউনূস অ্যামেরিকা এবং বাংলাদেশের মধ্যে অর্থনৈতিক সম্পর্ক গভীর করা এবং ভারত-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে নিরাপত্তা ও স্থিতিশীলতা বৃদ্ধির জন্য তাদের যৌথ প্রতিশ্রুতি পুনর্ব্যক্ত করেছেন।'
প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং আরও জানায়, ফোনকলে দুই পক্ষের স্বার্থ সংশ্লিষ্ট বিষয়গুলো নিয়ে আলোচনা হয়েছে। এর মধ্যে আছে অ্যামেরিকার সঙ্গে বাংলাদেশের বাণিজ্য, চলমান সংস্কার প্রক্রিয়া, গণতন্ত্রে রূপান্তর প্রক্রিয়া, আসন্ন সাধারণ নির্বাচন ও রোহিঙ্গাদের ত্রাণ।
স্টেইট সেক্রেটারি রুবিও বাংলাদেশের সংস্কার কর্মসূচি এবং আগামী বছরের শুরুতে নির্বাচন অনুষ্ঠানের উদ্যোগকে সমর্থন জানান।
তিনি উল্লেখ করেন, বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় রপ্তানি গন্তব্য অ্যামেরিকা এবং রেমিট্যান্সের শীর্ষ উৎস। এমন প্রেক্ষাপটে উভয় নেতা শিগগিরই শুল্ক বিষয়ে আলোচনা চূড়ান্ত হওয়ার আশাবাদ ব্যক্ত করেন, যা দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্যের প্রসার ঘটাবে।
অধ্যাপক ইউনূস জানান, সম্প্রতি বাংলাদেশের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা ওয়াশিংটন ডিসিতে অ্যামেরিকার ডেপুটি স্টেইট সেক্রেটারি ল্যান্ডাউয়ের সঙ্গে ফলপ্রসূ বৈঠক করেছেন। উভয় পক্ষ দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক দৃঢ় করার প্রতিশ্রুতি পুনর্ব্যক্ত করেছে।
বাংলাদেশের অনুরোধে পারস্পরিক শুল্ক ব্যবস্থা ৯০ দিনের জন্য স্থগিত রাখতে সম্মত হওয়ায় প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্পকে ধন্যবাদ জানান।
গণতান্ত্রিক উত্তরণে অ্যামেরিকার সহায়তা কামনা করে প্রধান উপদেষ্টা ড. ইউনূস তার প্রতিশ্রুতি পুনর্ব্যক্ত করেন।
তিনি বলেন, ‘আগামী বছরের শুরুতেই নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে এবং সরকারের সঙ্গে রাজনৈতিক দলগুলোর চলমান সংলাপ দেশের রাজনৈতিক ব্যবস্থার কাঙ্ক্ষিত সংস্কারে সহায়ক হবে।’
ড. ইউনূস বলেন, ‘নির্বাচন কমিশন নিরলস পরিশ্রম করছে দেশের নির্বাচনি ব্যবস্থাকে পুনর্গঠিত করতে, যা পূর্ববর্তী সরকার সম্পূর্ণরূপে ধ্বংস করেছিল। দেশের তরুণরাই এবার জীবনে প্রথমবারের মতো ভোট দেবে।’
রোহিঙ্গা শরণার্থীদের জন্য ধারাবাহিক উদার সহায়তা প্রদান করায় ওয়াশিংটনের প্রশংসা করেন প্রধান উপদেষ্টা। ২০১৭ সাল থেকে অ্যামেরিকা এ মানবিক সহায়তায় সবচেয়ে বড় দাতা হিসেবে কাজ করছে।
অধ্যাপক ইউনূস বলেন, ‘রোহিঙ্গা সংকটের টেকসই সমাধান এবং মিয়ানমারে প্রত্যাবাসনের সম্ভাবনা এখন আগের যেকোনো সময়ের চেয়ে উজ্জ্বল এবং বাংলাদেশ এ লক্ষ্যে কাজ করছে।’
দুই নেতা ভূরাজনৈতিক ইস্যুতেও মতবিনিময় করেন, যার মধ্যে ছিল একটি স্থিতিশীল ও শান্তিপূর্ণ ভারত-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের গুরুত্ব এবং প্রতিবেশী দেশগুলোর সঙ্গে বাংলাদেশের সম্পর্ক।
প্রধান উপদেষ্টা ইউনূস সাধারণ নির্বাচনের আগে বাংলাদেশ সফরের জন্য স্টেইট সেক্রেটারি রুবিওকে আমন্ত্রণ জানান, যাতে তিনি দেশের গণতান্ত্রিক উত্তরণ প্রত্যক্ষ করতে পারেন।