দেশটির দুই নিরাপত্তা বাহিনীর সংঘর্ষের জেরে অ্যামেরিকান কূটনৈতিক গাড়িবহরে হামলা হয়েছে বলে জানিয়েছেন সেক্রেটারি অফ স্টেইট অ্যান্টনি ব্লিনকেন।
গাড়িতে থাকা ব্যক্তিরা নিরাপদে রয়েছে জানিয়ে তিনি এ ঘটনার তীব্র নিন্দা করেন।
জাপানে সফররত ব্লিনকেন সাংবাদিকদের বলেন, ‘আমি নিশ্চিত করে বলছি, অ্যামেরিকান কূটনীতিকদের গাড়িবহরে হামলা হয়েছে। আমাদের চার জন সেখানে ছিলেন, তাদের কোনো ক্ষতি হয়নি। তবে অ্যামেরিকার পতাকাবাহী একটি কূটনৈতিক গাড়িবহরে হামলা অত্যন্ত বেপরোয়া ও দায়িত্বজ্ঞানহীন ঘটনা।’
সুদানের রাজধানী খার্তুমে সেনাবাহিনী (এসএএফ) ও আধা সামরিক বাহিনী- র্যাপিড সাপোর্ট ফোর্সেসের (আরএসএফ) মধ্যে রোববার থেকে চলছে এই লড়াই।
এতে মঙ্গলবার পর্যন্ত প্রায় ২০০ বেসামরিক নিহত হয়েছেন বলে চিকিৎসকদের বরাতে জানিয়েছে বিবিসি।
বিবদমান দুই বাহিনী প্রধানের সঙ্গে ফোনে কথা হয়েছে জানিয়ে ব্লিনকেন বলেন, ‘আমি পরিষ্কার করে তাদের বলেছি যে আমাদের কুটনীতিকদের ওপর কোনো ধরনের হামলা, হুমকি বা তাদের বিপদের মুখে ঠেলে দেয়ার মতো পরিস্থিতি মেনে নেয়া হবে না।’
একদিনের জন্য লড়াই বন্ধ রেখে আলোচনায় বসতে তিনি দুই বাহিনী প্রধানের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন।
সুদানে মঙ্গলবারও থেমে থেমে গোলাগুলি-বিস্ফোরণ এবং যুদ্ধবিমান ওড়ার শব্দ পাওয়া গেছে।
বাসিন্দাদের বরাতে রয়টার্স জানায়, খার্তুমের ওমডারমান শহরে বিমান হামলা ও বিমানবিধ্বংসী কামানের গুলি চলেছে।
দেশটিতে প্রেসিডেন্ট ওমর আল বাশিরকে ২০১৯ সালে ক্ষমতাচ্যূত করতে ও ২০২১ সালে অভ্যুত্থানের মাধ্যমে রাষ্ট্রক্ষমতা দখলে নিতে একযোগে কাজ করে এসএএফ এবং আরএসএফ। বেসামরিক সরকার পুনঃপ্রতিষ্ঠার জন্য দুই বাহিনীর মধ্যে যে আলাপ-আলোচনা চলছিল, তাতে বিভিন্ন ইস্যু নিয়ে তৈরি হয় ক্ষমতার দ্বন্দ্ব।
দেশটির সেনাপ্রধান প্রেসিডেন্ট জেনারেল আবদেল ফাত্তাহ আল বুরহান। তারই ডেপুটি জেনারেল মোহাম্মদ হামদান দাগলো আধা সামরিক বাহিনী- আরএসএফের প্রধান।
এই দুই সামরিক নেতাকে ঘিরেই দুই বাহিনীর মধ্যে বিরোধ তৈরি হয়।
জাতিসংঘের বিশেষ অ্যাম্বাসেডর ভলকান পার্থেজ বলছেন, সংঘর্ষ থামানোর চেষ্টায় তিনি দুই জেনারেলের সঙ্গে প্রতিনিয়ত যোগাযোগ রাখছেন।
রেডক্রস বলছে, খার্তুমে যেভাবে যুদ্ধ চলছে তাতে করে মানুষের কাছে মানবিক ত্রাণ পৌছে দেয়া সম্ভব নয়। সংস্থাটির দাবি, তারা কুঠুরিতে লুকিয়ে থাকা আহতদের কাছ থেকে ফোন পাচ্ছেন।
এ অবস্থায় জাতিসংঘ সুদানে কাজ চালিয়ে যাওয়া অব্যাহত রেখেছে।
সংঘর্ষে তিন কর্মচারী নিহত হওয়ার ঘটনায় সুদানে ‘ওয়ার্ল্ড ফুড প্রোগ্রাম’ তাদের কার্যক্রম বন্ধ রেখেছে।