
অ্যামেরিকায় আরও কমতে পারে বিমান চলাচল

টিবিএন ডেস্ক
প্রকাশিত: নভেম্বর ৯ ২০২৫, ২১:৪৪
ক্যালিফোর্নিয়ার সান ডিয়েগো ইন্টারন্যাশনাল এয়ারপোর্টে ভ্রমণকারীদের পরীক্ষা করছেন টিএসএ এজেন্টরা। ছবি: রয়টার্স
- 0
ফ্লাইটঅ্যাওয়ার নামের ফ্লাইট ট্র্যাকার জানায়, শুধু শুক্রবারই দেশব্যাপী হাজারের বেশি ফ্লাইট বাতিল করা হয়েছে।
ফেডারেল অ্যাভিয়েশন অ্যাডমিনিস্ট্রেশন-এফএএর নির্দেশনায় দেশের ৪০টি ব্যস্ততম এয়ারপোর্ট থেকে ১০ শতাংশ ফ্লাইট কমানো শুরু হয়েছে।
ফ্লাইটঅ্যাওয়ার নামের ফ্লাইট ট্র্যাকার জানায়, শুধু শুক্রবারই দেশব্যাপী হাজারের বেশি ফ্লাইট বাতিল করা হয়েছে।
এমন বাস্তবতার মধ্যেও আশার খবর হলো ৯৩ শতাংশ ফ্লাইট নির্দিষ্ট সময় ছেড়েছে বলে জানিয়েছে এফএএ।
শাটডাউন দীর্ঘ হলে ফ্লাইট ২০ শতাংশ পর্যন্ত নিয়ন্ত্রণ হতে পারে বলে সতর্ক করেছেন ট্রান্সপোর্টেশন সেক্রেটারি শন ডাফি।
ফক্স নিউজকে তিনি বলেন, অতিরিক্ত চাপ তৈরি হলে ১০ শতাংশের স্থলে ১৫, এমনকি ২০ শতাংশ পর্যন্ত ফ্লাইট কমানো হতে পারে।
বিরক্ত ভ্রমণকারীরা
কর্তৃপক্ষের ফ্লাইট কমানোর সিদ্ধান্তে বিরক্ত ভ্রমণকারীরা, যাদের একজন অ্যাঞ্জেলা বলেন, কেউই তো ভ্রমণে গিয়ে আটকে পড়তে চায় না। এই পরিস্থিতিতে ভ্রমণ করা অনেকের জন্যই সত্যিকারের চিন্তার বিষয়।
নিউ ইয়র্কের সিরাকিউজ থেকে আসা ক্রিসা কিয়ারসন খুব হতাশ হয়ে বলেন, সোমবারের আগে তাদের কোনো ফ্লাইট নেই। এটা খুবই বিরক্তিকর।
সাবেক ফেডারেল কর্মী ও ভ্রমণকারী মাইকেল টিমিনস্টন সরকার অকার্যকর থাকার বিষয়টিকে খুবই ভয়ানক বলে উল্লেখ করেন। এমন ঘটনা তার ভ্রমণেও প্রভাব ফেলছে উল্লেখ করে বলেন, ঘুম থেকে উঠে তিনি জানতেনই না ক্যালিফোর্নিয়ার ফ্লাইটটা ধরতে পারবেন কি না, তবে এয়ারপোর্টে এসে স্বস্তি পেয়েছেন এ ভেবে যে, তার ফ্লাইট নির্ধারিত সময় ছেড়ে যাচ্ছে।
অস্ট্রেলিয়া থেকে আসা এক ভ্রমণকারী বলেন, ফ্লাইট বাতিল হওয়ার চেয়ে তার কাছে খারাপ লাগছে যে, এখানকার কর্মীরা বেতন পাচ্ছে না। এমনটা অন্যায্য বলেও মনে করেন তিনি।
একই কথা বলেন নিউ ইয়র্ক থেকে আসা ক্রিসা কিয়াসন নামের এক ভ্রমণকারী।
তিনি প্রত্যাশা করেন, শাটডাউন শেষ হোক। কারণ যারা বেতন পাচ্ছেন না, তারা নিশ্চয়ই খুব রেগে আছেন।
বিশেষজ্ঞের ভাষ্য
জর্জিয়াটেক ইউনিভার্সিটির এয়ার ট্রান্সপোর্টেশন বিশেষজ্ঞ এবং এয়ার ট্রান্সপোর্টেশন ল্যাবের পরিচালক লরি গ্যারো বলেছেন, যারা অ্যাভিয়েশন ইন্ডাস্ট্রিতে কাজ করেন, সবাই প্রত্যাশা করছেন সরকার ব্যবস্থা আবারও দ্রুত স্বাভাবিক হবে, তবে নিরাপত্তা একটি বড় বিষয় বলে উল্লেখ করেন তিনি।
এ বিশেষজ্ঞ বলেন, সবার আগে নিরাপত্তা। তা ভুলে গেলে চলবে না।
ফ্লাইট কমানোর পরিকল্পনা
শাটডাউন আগামী সপ্তাহের পরও অব্যাহত থাকলে ফ্লাইট চলাচল ১৫ থেকে ২০ শতাংশ পর্যন্ত কমতে পারে বলে আশঙ্কা করছেন ট্রান্সপোর্টেশন সেক্রেটারি শন ডাফি, কিন্তু এমনটা যেন না হয়, সে জন্য সরকার সচল করতে সিনেট নেতাদের প্রতি আহ্বান জানান ট্রান্সপোর্টেশন সেক্রেটারি।
তিনি বলেন, সরকারের অচলাবস্থার মধ্যে তিনি বাড়ি না গিয়ে সরকারি কর্মকাণ্ড সচল রাখার বিভিন্ন বিষয়ে কাজ করেছেন, কিন্তু ডেমোক্র্যাটিক পার্টির সিনেটররা এখন কেন ছুটি কাটাতে বাড়িতে যাচ্ছেন, তা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন তিনি।
অবসরপ্রাপ্ত এয়ার ট্রাফিক কন্ট্রোলার হারবে স্কলিংক বলছেন, পেচেক ছাড়া কাজ করতে গিয়ে অসুস্থ হয়ে পড়েছেন এয়ার কন্ট্রোলাররা, তবে কাজের চাপ বেশি থাকলেও নিজেদের আকাশসীমায় যত বিমানই প্রবেশ করুক না কেন. এয়ার কন্ট্রোলাররা সবসময় মনিটরিং করেই যাবে।
ন্যাশনাল প্রেসিডেন্ট অফ প্রফেশনাল অ্যাভিয়েশন সেফটি স্পেশালিস্ট ডেভিড স্পেনের বলেন, এয়ার কন্ট্রোলারদের পাশে থাকা টেকনিশিয়ানদের সংকট থাকার পরও তাদের অতিরিক্ত কাজ করতে হচ্ছে।
সম্প্রতি এফএএ বলেছিল, তারা এ টেকনিক্যাল অপারেশনস টিমকে পুনর্গঠন করবে।
এমন সময় শাটডাউন শুরু হয় বলেও স্মরণ করিয়ে দেন ডেভিড।
বড় শহরের ব্যস্ত বিমানবন্দরগুলো থেকে ফ্লাইটের সংখ্যা কমতে শুরু করলেও শুধু ছোট শহরগুলোয় যাতায়াত করা ফ্লাইট কমছে বর্তমানে। আর তাই বাধ্য না হলে এ মুহূর্তে ভ্রমণ না করার পরামর্শ দিয়েছেন অ্যাভিয়েশন বিশেষজ্ঞ জুলিয়ান খেল।
যেতে হলে একটি ব্যাকআপ ফ্লাইট বুক করার পরামর্শ দেন তিনি।