বিধ্বস্তের আগে ককপিটে অচেতন পড়েছিলেন পাইলট

টিবিএন ডেস্ক

সেসনা সাইট্যাশন বিমানের ফাইল ছবি

  • 0

ভার্জিনিয়ায় বিধ্বস্ত ব্যক্তিগত বিমানের পাইলটকে দুর্ঘটনার আগে ককপিটে অচেতন অবস্থা দেখা গেছে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা। দুর্ঘটনায় পাইলট ও তিন যাত্রীর কেউ বেঁচে নেই বলে আশঙ্কা কর্তৃপক্ষের। তাদের মরদেহ পাওয়া যায়নি।

অ্যামেরিকার বিভিন্ন সংবাদমাধ্যম কর্মকর্তাদের বরাতে জানায়, সেসনা সাইট্যাশন বিমানটি এলোমেলোভাবে ওয়াশিংটন ডিসির সংরক্ষিত আকাশসীমার ওপর দিয়ে উড়ছিল। নাশকতার সন্দেহে সেটিকে তাড়া করতে কয়েকটি যুদ্ধবিমান পাঠানো হয়। সেসনার আশপাশ দিয়ে যাওয়ার সময় ভেতরে পাইলটকে অচেতন পড়ে থাকতে দেখেন একটি যুদ্ধবিমানের পাইলট।

টেনেসি থেকে রোববার তিন যাত্রী নিয়ে লং আইল্যান্ডের দিকে যাচ্ছিল ব্যক্তিগত বিমানটি। রহস্যজনক কারণে সেটিকে ডিসির আকাশে উড়তে দেখা যায়। রেডিও ট্রান্সমিশনের মাধ্যমে এর পাইলটের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও কোনো সাড়া পায়নি কর্তৃপক্ষ। 

সেটিকে তাড়া করতে ও সম্ভাব্য ঝুঁকি প্রতিহত করতে পাঠানো হয় কয়েকটি এফ-সিক্সটিন বিমান। এক পর্যায়ে ডিসি, ভার্জিনিয়া ও ম্যারিল্যান্ড থেকে রোববার দুপুরে তীব্র শব্দ শোনা যায়। কিছুক্ষণ পর জানা যায়, সেসনা বিমানটি ভার্জিনিয়ার দুর্গম পাহাড়ি এলাকায় বিধ্বস্ত হয়েছে।

দুর্ঘটনার পর বিমানমালিক জন রাম্পেল জানান, বিমানে তার মেয়ে, ২ বছর বয়সী নাতনি ও নাতনির ন্যানি ছিলেন। 

বিধ্বস্তের প্রায় ৪ ঘণ্টা পর ঘটনাস্থলের কাছাকাছি পৌঁছান উদ্ধারকর্মীরা। তবে এদিন সেখানে জীবিত বা মৃত কাউকে পাওয়া যায়নি বলে জানানো হয়।

সামরিক বাহিনীর কর্মকর্তারা জানান, অবতরণের দুই ঘণ্টা আগে থেকেই সেসনা বিমানের পাইলটের কাছ থেকে কোনো সাড়া মিলছিল না। ধারণা করা হচ্ছে এলোমেলো উড়তে থাকায় এক পর্যায়ে জ্বালানি ফুরিয়ে গেলে সেটি বিধ্বস্ত হয়। 

তবে পাইলট কেন সাড়া দেননি, সেই ব্যাখ্যা পাওয়া যায়নি।

বিমানটির ধ্বংসাবশেষের খোঁজে ভার্জিনিয়ার মন্টেবেলোর দুর্গম পাহাড়ি এলাকায় চিড়ুনি অভিযান চালাচ্ছে ন্যাশনাল ট্রান্সপোর্টেশন সেফটি বোর্ড (এনটিএসবি)। একইসঙ্গে চলছে সংস্থাটির তদন্তকাজও।

পাইলট ও যাত্রীদের মরদেহ না মিললেও তাদের বেঁচে থাকার সম্ভাবনা নেই বলে মনে করেন বিমানমালিক রাম্পেল।

তিনি বলেন, ‘বিমানটি প্রতি মিনিটে ২০ হাজার ফুট বেগে নামছিল। এই গতিতে বিধ্বস্ত হওয়া বিমানের আরোহীদের বেঁচে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকে না। 

পাইলটের নাম যেফ হেফনার বলে জানান রাম্পেল। তবে সেটি নিশ্চিত করেনি কোনো কর্তৃপক্ষ।

দেশটির সাবেক কেপ্টেইন ও পাইলট প্রশিক্ষক রিচার্ড লেভি বলছেন, সম্ভবত কেবিনের প্রেসার হারানোর কারণে সেসনা সাইট্যাশন বিমানের আরোহীরা হাইপক্সিয়ায় আক্রান্ত হন।

তিনি জানান, নানা কারণে কেবিনের প্রেসার কমে যেতে পারে। সেটা যান্ত্রিক গোলযোগের কারণেও হতে পারে আবার পাইলটের ভুলেও হতে পারে।

কোনো কারণে রোববার সেসনার কেবিনের প্রেসার ধীরে ধীরে কমছিল। আরোহীরা বুঝতেই পারেননি যে তারা হাইপক্সিয়ায় আক্রান্ত হচ্ছেন, অর্থাৎ তাদের দেহে অক্সিজেনের ঘাটতি তৈরি হচ্ছে। 

লেভি বলেন, ‘কী ঘটছে তা তারা (আরোহীরা) টের পাচ্ছিলেন না। তাদের বোধবুদ্ধি ও চেতনা ধীরে ধীরে লোপ পাচ্ছিল।’


0 মন্তব্য

মন্তব্য করুন