মার্তিনেসে মুগ্ধ মাশরাফী

টিবিএন ডেস্ক

জুলাই ৪ ২০২৩, ১৬:৫৯

মাশরাফীর পুত্র ও কন্যার সঙ্গে মার্তিনেস। ছবি: মাশরাফীর ফেসবুক পেজ

মাশরাফীর পুত্র ও কন্যার সঙ্গে মার্তিনেস। ছবি: মাশরাফীর ফেসবুক পেজ

  • 0

আর্জেন্টিনা ফুটবল টিমের অন্যতম ভক্ত বাংলাদেশ জাতীয় ক্রিকেট দলের সাবেক অধিনায়ক মাশরাফী বিন মোর্ত্তজা। গত সোমবার বিশ্বকাপজয়ী আর্জেন্টিনার গোলরক্ষক এমিলিয়ানো মার্তিনেসের সঙ্গে সাক্ষাতের পর উচ্ছাস প্রকাশ করেন মাশরাফী।

প্রিয় দল আর্জেন্টিনার বিশ্বকাপ জয়ের স্বপ্ন দেখেছিলেন মাশরাফী। কাতারে সেই স্বপ্ন পূরণ করেন মেসি-ডি মারিয়া-মার্তিনেসরা। সোমবার বাংলাদেশে পা রাখেন অসংখ্য ফুটবলপ্রেমির স্বপ্ন পূরণের নায়ক মার্তিনেস। মাত্র ১১ ঘণ্টার সংক্ষিপ্ত সফরে সোমবার সকালে বাংলাদেশে আসেন তিনি। মূলত কোলকাতায় সফর ছিল তার। কিন্তু আর্জেন্টিনা দলের প্রতি বাংলাদেশিদের ভালোবাসায় মুগ্ধ হয়ে কোলকাতা যাওয়ার আগে বাংলাদেশ সফরের সিদ্ধাস্ত নেন মার্তিনেস।

সকালে একটি অনুষ্ঠানে যোগ দিয়েছিলেন তিনি। অনুষ্ঠানে আমন্ত্রিত অতিথি ছিলেন আওয়ামী লীগ দলীয় সংসদ সদস্য মাশরাফী। অনুষ্ঠানে মেয়ে হুমাইরা ও ছেলে সাহেলকে নিয়ে উপস্থিত হন মাশরাফী। মার্তিনেসকে সামনাসামনি দেখার পর তার সঙ্গে ছবিও তোলেন। সাদা-নীল জার্সি গায়ে মার্তিনেসের কাছ থেকে অটোগ্রাফ পেয়েছে মাশরাফীর পুত্র ও কন্যা।

কিছুক্ষণের জন্য মার্তিনেসকে কাছে পেয়ে মুগ্ধ হন মাশরাফী নিজেও। লা আলবিসেলেস্তের গোলরক্ষকের আন্তরিকতায় মুগ্ধ হয়েছেন তিনি। মার্তিনেসের সঙ্গে সাক্ষাতের পর ফেসবুকে মাশরাফী লেখেন, ‘আমি কোপা আমেরিকার পর থেকে এমিকে পছন্দ করতে শুরু করেছি, টাইব্রেকারে দু’টি গোল ফিরিয়ে দলকে জয় এনে দিতে বড় ভূমিকা রাখে সে। কত বছর পর বড় শিরোপা জিতেছে আর্জেন্টিনা। দেশের হয়ে প্রথম বড় ট্রফি জয়ের স্বাদ নিতে পেরেছেন মেসি। স্বাভাবিকভাবেই আমি পাখির চোখ নিয়ে বিশ্বকাপ দেখছিলাম। কিন্তু সৌদি আরবের কাছে হারের পর মনে হয়েছিলো, আরেকটি বিশ্বকাপ হয়তো হতাশায় শেষ হয়ে যাবে। কিন্তু অবিশ্বাস্যভাবে ঘুড়ে দাঁড়ানো এবং পরে বিশ্বকাপ জয় দেখতে পারাটা অনেক দিনের লালিত স্বপ্ন পূরণের মতো।’

তিনি বলেন, ‘সেই বিজয়ের অন্যতম নায়ক এমির সাথে আমরা ঢাকায় দেখা করেছি। আমরা অল্প সময়ে জন্য তাকে দেখেছি, তবে এটি আজীবনের অর্জন, একটি দুর্দান্ত অনুভূতি। বিশ্বকাপ জয়ী দলের গোলরক্ষক চোখের সামনে সে তো জানে না, যেদিন আর্জেন্টিনা বিশ্বকাপ জিতেছে সেদিন আমার এবং আমার মতো আরও লক্ষ লক্ষ মানুষের জন্য কত বছরের অপেক্ষার অবসান হয়েছে।’

মাশরাফী লিখেছেন, ‘আজকে সে ইন্টারভিউয়ের মাঝেই একবার ট্রাউজার উঠিয়ে দেখাল, পায়ের ঠিক সেই জায়গায় একটি ট্যাটু করিয়েছে, বিশ্বকাপ ফাইনালে শেষ বাঁশির ১৮ সেকেন্ড আগে কোলো মুয়ানির শটটি আটকিয়ে দিয়েছিল যে জায়গা দিয়ে। এক সেকেন্ডের জন্য মনে হলো, আসলে বিশ্বকাপটাতো ওখানেই জিতে নিয়েছে।’

এমিকে চোখের সামনে দেখতে পেরে মাশরাফীর মতো উচ্ছসিত ছিল তার ছেলে-মেয়েও। মাশরাফী বলেন, “আজকে আসলে বেশি ভালো লাগছে আমার সন্তাদের জন্য। যখন বললাম, ‘এমি আসছে, তোমাদের কি দেখা করার ইচ্ছা আছে?’ ওরা লাফাচ্ছিল। সবশেষ দু’টি দিন ওরা ঠিকমতো ঘুমাতে পারছিল না এমিকে দেখবে বলে। আজকে এমির সঙ্গে দেখা হওয়ার পর বললাম, ‘বাচ্চারা তোমার অটোগ্রাফ নিতে চায়।’ তিন এত আন্তরিকতা দেখালেন, এক কথায় অসাধারণ। এমনকি সে ছবিও তুলে দিল তাদের সঙ্গে। এখন তারা মহাখুশি, আর ওদের খুশিতে আমিও এখন মহাখুশি।”

খুব অল্প সময়ের মধ্যে বাংলাদেশ সফরে আসার জন্য মার্তিনেসকে ধন্যবাদ জানিয়ে মাশরাফী বলেন, ‘এমি, আপনাকে স্বাগত এই বাংলার মাটিতে। এখানে আপনাদের অগণিত ভক্ত আছে, যুগ যুগ ধরে। আশা করি, আপনারও ভালো লাগছে এই মাটিতে পা রেখে। পাশাপাশি এটাও ভাবি, সত্যি বাংলাদেশ একদিন বিশ্বকাপ ফুটবলে কোয়ালিফাই করবে আর আমরা আমাদের পতাকা নিয়ে মিছিল করবো। অনেকের কাছে এখন এটা অবাস্তব মনে হতে পারে। তবে আমি বিশ্বাস করি, কাজটা কঠিন, খুব কঠিন হলেও অসম্ভব নয়। স্বপ্ন পূরণের সেই দিনটির অপেক্ষায় আছি।’


0 মন্তব্য

মন্তব্য করুন