বিশ্ব সমুদ্র দিবস উপলক্ষে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) সিনেট ভবন মিলনায়তনে বৃহস্পতিবার দুপুরে সমুদ্রবিজ্ঞান বিভাগ আয়োজিত সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তৃতা শেষে সাংবাদিকরা এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা বলেন।
তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী বলেন, ‘বিএনপির তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবি তো আন্তর্জাতিকভাবে কারও সমর্থন পায়নি। তাই এখন তত্ত্বাবধায়ক সরকার বাদ দিয়ে নিরপেক্ষ সরকারের কথা বলছে। তারা যে সমস্ত দেশের হাতে-পায়ে ধরে, সে সব দেশে যেভাবে চলতি সরকার নির্বাচনকালীন সরকারের দায়িত্ব পালন করে, আমাদের দেশেও ঠিক তাই হবে।’
বিদ্যুৎ পরিস্থিতি নিয়ে বিএনপির সমালোচনার জবাবে আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘মির্জা ফখরুল সাহেবরা বড় গলায় কথা বলেন, অথচ তারা মানুষকে বিদ্যুৎ দিতে পারেননি, বিদ্যুৎ কেন্দ্র জ্বালিয়ে দিয়েছেন। মানুষকে বিদ্যুৎ দেবেন বলে ছেলেভোলানো চকলেট আর মোয়ার মতো শুধু বিদ্যুতের খাম্বা লাগিয়েছেন। আমরা মানুষকে বিদ্যুৎ দিয়েছি, মানুষের অভ্যাস পরিবর্তন হয়েছে, দেশ পরিবর্তন হয়েছে, শতভাগ মানুষ বিদ্যুৎ সুবিধার আওতায় এসেছে। বিদ্যুতের ব্যবহার এখন বহুমাত্রিক।’
তিনি বলেন, ‘বিএনপি যখন ক্ষমতায় ছিল তখন ৩ হাজার ৬০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন হতো। এখন যে কোনো সময় ১৮ থেকে ২০ হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুৎ সরবরাহের সক্ষমতা সরকারের আছে। বিএনপি যখন ক্ষমতায় ছিল তখন দেশে ৪০ শতাংশ মানুষ বিদ্যুৎ সুবিধার আওতায় ছিল। এখন দেশের শতভাগ মানুষ বিদ্যুৎ সুবিধার আওতায় এসেছে।’
বিদ্যুৎ সুবিধা দিয়ে মানুষের অভ্যাসের ‘পরিবর্তন হয়ে গেছে’ মন্তব্য করে হাছান মাহমুদ বলেন, ‘মানুষ এখন গ্রামেও এসি চালায়। মসজিদ, মন্দির, প্যাগোডায় এখন এসি চলে। প্রতিদিন হাজার হাজার ইজিবাইক এবং ১৭ কোটি মানুষের দেশে সাড়ে ১৫ কোটি মোবাইল চার্জ করতে বিদ্যুৎ লাগে, এমনকি গ্রামেও রাইস কুকারে ভাত রান্না করে। অর্থাৎ বিদ্যুতের বহুমাত্রিক ব্যবহারে গত ১৪ বছরে মানুষের অভ্যাস পরিবর্তন হয়ে গেছে।
‘মানুষকে এত বিদ্যুৎ সুবিধা দিয়ে নিশ্চয়ই ভুল করা হয়নি, সবার খানিক ধৈর্যের প্রয়োজন। বিদ্যুৎ প্রতিমন্ত্রী বলেছেন, এখন বিশ্বমন্দা ও যুদ্ধের প্রেক্ষাপটে এই অসুবিধাটা সাময়িক, ১৫-২০ দিনের মধ্যে দূর হবে।’
এর আগে ব্লু ইকোনমির সম্ভাবনার দুয়ার উন্মোচন শীর্ষক সেমিনারে সমুদ্রবিজ্ঞান বিভাগের খণ্ডকালীন শিক্ষক পরিবেশবিদ ড. হাছান বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আমরা ভারত ও মিয়ানমারের সঙ্গে সমঝোতাপূর্ণ সম্পর্ক বজায় রেখে আন্তর্জাতিক আদালতের রায়ে প্রায় দেশের সমআয়তনের সমুদ্রসীমা অধিকার করেছি। এই সমুদ্রসম্পদের সুষ্ঠু ব্যবহার করতে পারলে দেশের জিডিপি প্রবৃদ্ধি হার আরও ২ থেকে ৩ শতাংশ বাড়বে।’
সেমিনারে সমুদ্রবিজ্ঞান বিভাগের চেয়ারম্যান ড. কে এম আজম চৌধুরী উপস্থাপিত মূল প্রবন্ধের ওপর আলোচনায় অংশ নেন বিশেষ অতিথি বাংলাদেশের শিক্ষা উপমন্ত্রী ব্যারিস্টার মহিবুল হাসান চৌধুরী, পরিকল্পনা কমিশনের সদস্য অধ্যাপক ড. মো. কাউসার আহাম্মদ, জার্মান সহযোগিতা সংস্থা জিআইজেড-এর প্রিন্সিপাল অ্যাডভাইজার ড. স্টেফান আলফ্রেড গ্রোয়েনেওল্ড এবং ঢাবির আর্থ অ্যান্ড এনভায়রনমেন্টাল সায়েন্স অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. মো. জিল্লুর রহমান।
ইন্টারন্যাশনাল ইউনিয়ন ফর কনজারভেশন অভ ন্যাচারের (আইইউসিএন) কান্ট্রি ডিরেক্টর মো. রকিবুল আমিন সেমিনারটি সঞ্চালনা করেন। স্বাগত বক্তব্য দেন সমুদ্রবিজ্ঞান বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক জোবায়ের আলম।