রঙিন কাপড়ে জড়ানো খুদে বর-কনেকে দেখতে ভিড় জমায় হাজারো মানুষ। তাদের আগ্রহের যেন শেষ নেই। আর হবে নাই বা কেন। এ তো ব্যাঙের বিয়ে। তাও আবার বিশাল অংকের মোহরানা।
ঠাকুরগাঁও জেলার পীরগঞ্জে ৯ লাখ ৯ হাজার ৯৯৯ টাকা দেনমোহর ধার্য করে ইসলাম ধর্মের রীতি মেনেই আনুষ্ঠানিকভাবে মেঘ-বৃষ্টি নামে দুই ব্যাঙের বিয়ে দেয়া হয়েছে। নিমন্ত্রণ করে খাওয়ানো হয়েছে অতিথিদের।
বাংলাদেশের উত্তরের জেলা ঠাকুরগাঁওয়ে এবার দিন দিন বেড়েই চলেছে তাপমাত্রা, নেই বৃষ্টি। চলছে প্রচণ্ড দাবদাহ। পুড়ছে চারদিক। নাভিশ্বাস উঠেছে জনজীবনে । খরা ও দাবদাহে ব্যাঙের বিয়ে দিলে বৃষ্টি হবে- সেই বিশ্বাস থেকেই এমন বিয়ের আয়োজন।
বার্তাসংস্থা ইউএনবি জানায়, মেঘ নামের বর ব্যাঙের গায়েহলুদ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয় পীরগঞ্জ উপজেলার ভাকুড়া খালপাড়ার আনিসুরের বাড়িতে, আর কনে হিসেবে বৃষ্টি ব্যাঙের গায়েহলুদ অনুষ্ঠান হয় নারায়ণপুর গ্রামের আমজাদ আলীর বাড়িতে।
শাড়ি, কাপড় দিয়ে সাজানো হয় বর-কনেকে। টিপ পরানো হয় ও আলতা দিয়েও সাজানো হয় কনে ব্যাঙ বৃষ্টিকে। বিকেলে গায়ে হলুদের পর্ব শেষ করে সন্ধ্যায় ভাকুড়া খালপাড়া থেকে অনুষ্ঠানিক ভাবে বরযাত্রী নিয়ে নারায়ণপুরে কনে বৃষ্টির বাড়িতে আসে বরপক্ষ। খাওয়া-দাওয়া শেষে দেনমোহর ধার্য করে বর ও কনেকে ইজাব-কবুল করান কাজল আহাম্মেদ। এভাবেই শেষ হয় বিয়ের আনুষ্ঠানিকতা।
কনে বৃষ্টির বাবা আমজাদ আলী জানান, বিয়ের দেনমোহর ধার্য করা হয় ৯ লাখ ৯ হাজার ৯৯৯ টাকা। বিয়ে শেষে উপস্থিত লোকজনের মাঝে মিষ্টি বিতরণ করা হয়।
মিনারা বেগম নামের এক গৃহবধূ জানান, ব্যাঙের বিয়ে হচ্ছে শুনেই দেখতে এসেছেন। মানুষের মতো করে ব্যাঙের বিয়ে দেয়া তিনি এই প্রথম দেখেছেন। খুব ভাল লেগেছে তার।
তবে সোহেল হাসান শুভ নামে এক যুবক জানান, এটি কুসংস্কার। এমন আয়োজন এবার প্রথম দেখলেন তিনি।
বিয়ের পরদিন বৃহস্পতিবার বর মেঘের বাড়িতে আয়োজন করা বৌভাতের। নিমন্ত্রণ পেয়ে বৌভাত অনুষ্ঠানে অংশ নেন অনেক নর-নারী।
ব্যাঙের বিয়ে বিষয়ে পীরগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী অফিসার শাহরিয়ার নজির বলেন, লোকজ বিশ্বাস থেকে প্রবাহমান বাংলার এই ঐতিহ্যকে ধরে রাখতে প্রশাসনের পক্ষ থেকে সহায়তা করা হবে।