অপ্রাপ্তবয়স্কের পর্নোগ্রাফি, জোর করে বিয়ের চেষ্টায় যাবজ্জীবন সাজা

টিবিএন ডেস্ক

এপ্রিল ৩০ ২০২৩, ১৯:২০

সাজাপ্রাপ্ত অ্যালেকযান্ডার সুইট। ছবি: ফক্স নিউয

সাজাপ্রাপ্ত অ্যালেকযান্ডার সুইট। ছবি: ফক্স নিউয

  • 0

অপ্রাপ্তবয়স্ক এক মেয়েকে বিয়ের চেষ্টা, পর্নোগ্রাফি বানানোসহ কয়েকটি অপরাধে ওকলাহোমা স্টেইটে এক জনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছে আদালত।

ফক্স নিউযের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, অপ্রাপ্তবয়স্ক মেয়েটিকে জোর করে বিয়ের চেষ্টা, শিশু পর্নোগ্রাফি ধারণ ও সেগুলো নিজের কাছে রাখার কারণে গত বুধবার অ্যালেকযান্ডার সুইট নামের ওই ব্যক্তিকে দোষী সাব্যস্ত করে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের রায় দেয়া হয়। 

কর্তৃপক্ষ জানায়, ২৮ বছর বয়সী সুইটের বিরুদ্ধে তদন্ত শুরু হলে তিনি মেয়েটিকে বিয়ের প্রলোভন দেখান। মেয়েটি রাজি না হলে তাকে বিয়ের জন্য চাপ দিতে থাকেন সুইট। মেয়েটিকে যৌন উত্তেজক ছবি পাঠাতে তিনি বাধ্য করেন। সাজা এড়াতে সুইট দেশ ছেড়ে পালানোর পরিকল্পনাও করছিলেন। 

ডিপার্টমেন্ট অফ জাস্টিসের শুনানিতে বলা হয়, সুইট মেয়েটিকে বছরের পর বছর ধরে শারীরিক এবং মানসিক নির্যাতন করছিলেন। এতে মেয়েটি মানসিকভাবে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। সে কাউকে বিশ্বাস করতে পারছে না, এমনকি বাইরে যেতেও অনিরাপদ বোধ করছে। 

অ্যামেরিকান অ্যাটর্নি ক্লিনটন জনসন এক বিবৃতিতে বলেন, ‘অপ্রাপ্তবয়স্ক মেয়েটি ছোটবেলায় তার দুই প্রিয়জন হারিয়েছে। কঠিন শৈশবের সঙ্গে লড়াই করে বড় হওয়া মেয়েটির দুর্বলতার সুযোগ নিয়ে তাকে ফাঁদে ফেলেন অ্যালেকযান্ডার সুইট।‘

তিনি বলেন, ‘মেয়েটি ফেডারেল কোর্টরুমে সুইটের মুখোমুখি হয়ে অসাধারণ সাহস দেখিয়েছে। সুইট ভেবেছিলেন তিনি সব ধরনের আইনের ঊর্ধ্বে। তবে তথ্যপ্রমাণের ভিত্তিতে তাকে দোষী সাব্যস্ত করা হয়েছে এবং এ মুহূর্তে তিনি কারাগারে আছেন। আমরা নিশ্চিত করতে পেরেছি সুইট আর কোনো অবুঝ শিশুর সঙ্গে প্রতারণা করতে পারবেন না।‘

ডিপার্টমেন্ট অফ জাস্টিস এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে বলেছে, ‘ভুক্তভোগী মেয়েটি সাক্ষ্যে বলেছে, সুইট ভেবেছিলেন বিয়ে করতে পারলে মেয়েটি আর তার বিরুদ্ধে সাক্ষ্য দিতে পারবে না। তাই বারবার তিনি তাকে বিয়ের জন্য চাপ দেন।‘ 

বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, ভুক্তভোগী মেয়েটির অভিভাবক আদালতের শরণাপন্ন হয়ে সুইটের সঙ্গে তাদের মেয়ের বিয়েতে অসম্মতির কথা নিশ্চিত করেন। এরপর অভিভাবকের অনুমতি ছাড়াই মেয়েটিকে বিয়ে করার উদ্দেশ্যে আরকানসায় নিয়ে যান সুইট।

একই সময়ে তদন্তকারী এযেন্টরা জানতে পারেন, সুইট অপ্রাপ্তবয়স্ক মেয়েটিকে নিয়ে দেশ ছাড়ার পরিকল্পনা করেছেন।

ওকলাহোমার টুলসা কাউন্টিতে একটি ‘জাস্ট ম্যারিড’ লেখা গাড়ি থেকে সুইটকে গ্রেফতার করা হয়। ভুক্তভোগী মেয়েটিও তার সঙ্গে ছিল। 

কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, গাড়ির ভেতরে থেকে এযেন্টরা ‘ডল ক্লোদিং’, একাধিক ইলেকট্রনিক ডিভাইস, নগদ এক হাজার ডলার, সুইট এবং ওই মেয়ের অ্যামেরিকান পাসপোর্ট ও সুইটের জন্য পোলিশ নাগরিকত্বের আবেদন উদ্ধার করেছে। মেয়েটির চুলে ব্লিচ করে তার পরিচয় লুকানোর চেষ্টা করেছিলেন সুইট।  

উদ্ধার করা ইলেকট্রনিক ডিভাইস পরীক্ষা করার সময় মেয়েটির সঙ্গে সুইটের একাধিক যৌনতার ভিডিও পায় কর্তৃপক্ষ। 

সুইটের সঙ্গে সম্পর্কে থাকাকালীন মেয়েটিকে নিয়মিত অ্যালকোহল এবং অন্য নেশাজাতীয় মাদক সরবরাহ করতেন সুইট। ধারণা করা হচ্ছে ভুক্তভোগী মেয়েটি ছাড়াও তিনি একাধিক অপ্রাপ্তবয়স্ক মেয়েকে পর্নোগ্রাফির জন্য প্রস্তুত করছিলেন। 

ওকলাহোমা সিটি ফিল্ড অফিসের দায়িত্বে থাকা এফবিআই স্পেশাল এযেন্ট এডওয়ার্ড গ্রে সুইটের অপরাধ সম্পর্কে বলেন, ‘যে ব্যক্তি ইচ্ছাকৃতভাবে একটি শিশুর দুর্বলতাকে পুঁজি করে নিজের কামনা চরিতার্থ করেন এবং অপ্রাপ্তবয়স্কদের উপর নিজের সিদ্ধান্ত চাপিয়ে দেন তার চেয়ে বেশি লজ্জাজনক ব্যক্তি আর কেউ নেই।‘ 


0 মন্তব্য

মন্তব্য করুন