অ্যালুমিনিয়াম ফয়েল অথবা প্লাস্টিক র্যাপারে মোড়ানো খাবারের সুবিধা অনেক। বেশ কিছুটা সময় খাবার থাকে উষ্ণ, তাছাড়া দুহাতে ধরে কামড় বসাতেও বেশ আরাম। তবে র্যাপার খোলা অনেকের জন্যই বেশ বিরক্তিকর। ভুল করে র্যাপারেই কামড় বসিয়ে দেয়া মানুষের সংখ্যাও কম নয়।
এই সমস্যা সম্ভবত বেশি দিন আর থাকছে না। জনস হপকিন্স ইউনিভার্সিটির একদল শিক্ষার্থী তৈরি করেছেন এমনই এক ‘এডিবল টর্টিলা টেপ’, যা খাবারের সঙ্গে অনায়াসে খেয়ে ফেলা যাবে। এই টেপ দিয়ে ‘বারিটো’ মুড়িয়ে রাখার কৌশলও দেখিয়েছেন তারা।
ফুড অ্যান্ড ওয়াইন জানিয়েছে, মে মাসের শুরুতে হোয়াইটিং স্কুল অফ ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের অ্যানুয়াল ডিজাইন ডে-র অংশ হিসেবে কেমিক্যাল এবং বায়োমলিকুলার ইঞ্জিনিয়ারিং শিক্ষার্থীর একটি দল এই ‘টেস্টি টেপ’ প্রদর্শন করেছেন।
ইউনিভার্সিটি কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, এই টর্টিলা টেপটি মোলায়েম ও ফুডগ্রেড স্ক্যাফোল্ড দিয়ে তৈরি। খাবার উপযোগী এই মোড়ক সব ধরনের খাদ্য উপাদান শক্তভাবে মুড়িয়ে রেখে রান্না বা খাওয়ার সুবিধা নিশ্চিত করবে।
এডিবল টেপের উদ্ভাবকেরা জানিয়েছেন, তারা পণ্যটির পেটেন্টের জন্য আবেদন করায় এখনই উদ্ভাবনের সব তথ্য প্রকাশ করছেন না।
এই প্রোজেক্টে কাজ করা টাইলার গুয়ারিনো বলছেন, ‘আমি শুধু এতোটুকু বলতে পারি, টর্টিলা টেপটির সব উপাদান খাওয়ার জন্য নিরাপদ। ফুড গ্রেড আইন মেনে সাধারণ খাদ্য উপাদান দিয়ে এই টেপ তৈরি করা হয়েছে।’
দুই ইঞ্চি লম্বা এবং আধা ইঞ্চি চওড়া টর্টিলা টেপটি স্কচটেপের আদলে তৈরি। ‘টেস্টি টেপ’ ব্যবহার করতে ওয়াক্স পেপার থেকে টেপটি সরিয়ে প্রয়োজনীয় স্ট্রিপ পানিতে ভেজালেই তার আঠা কার্যকর হবে। স্কচটেপের মতোই এটি দিয়ে খাবার শক্তভাবে মুড়িয়ে রাখা যাবে।
শিক্ষার্থীরা জানান, সসে পিচ্ছিল বারিটো খেতে গিয়ে এর ফিলিং বের হয়ে যাওয়ার ঝামেলা থেকে মুক্তি দিতেই তারা এমন টেপ তৈরি করেছেন। তারা এমন একটি প্রোটোটাইপ উদ্ভাবন করতে চেয়েছেন যা বারিটোর মতো খাবারকে শক্তভাবে মুড়িয়ে রাখতে সক্ষম।
গুয়ারিনো বলেন, ‘এডিবল টেপ তৈরির জন্য প্রথমে আমরা টেপ এবং এর আঠা বিশ্লেষণ করেছি। এরপর আমরা চেষ্টা করেছি কীভাবে তাকে খাদ্যপোযোগী করা যায়। আমাদের এই টেস্টি টেপ আপনাকে টর্টিলার উপর পূর্ণ আস্থা রেখে খেতে সাহায্য করবে। আপনি নিশ্চিত থাকতে পারেন টেস্টি টেপে মোড়ানো টর্টিলা কিংবা বারিটো খাওয়ার সময় এগুলোর ভেতরের ফিলিং আপনার হাত অথবা পোশাকে ছড়িয়ে পরবে না। আপনি আনন্দের সঙ্গে বারিটো উপভোগ করতে পারবেন।’
হোয়াইটিং স্কুল অফ ইঞ্জিনিয়ারিং এর ডিন শ্লেসিঞ্জার বলেছেন, ‘প্র্যাক্টিসিং ইঞ্জিনিয়ার বা শিক্ষার্থীদের কাজ যাতে বিশ্বে দীর্ঘস্থায়ী এবং ইতিবাচক প্রভাব রাখতে পারে সেজন্য এই ইভেন্টটি আয়োজন করা হয়েছে। এই পদক্ষেপ আর কিছু না হলেও দুপুরের খাবার- বারিটোকে আরও উপভোগ্য করে তুলবে।’