আরকানসা: দ্য ন্যাচারাল স্টেইট

তাহমিনা তাশরিফ মীম, টিবিএন ডেস্ক

এপ্রিল ৩ ২০২৩, ২০:৪৮

আরকানসা: দ্য ন্যাচারাল স্টেইট
  • 0

দ্য ন্যাচারাল স্টেইট’ হিসেবে পরিচিত স্থলবেষ্টিত এই স্টেইটের অবস্থান অ্যামেরিকার দক্ষিণ-মধ্য অঞ্চলে।

আরকানসা আরও ছয়টি স্টেইটের সঙ্গে সীমান্ত ভাগাভাগি করে। এর উত্তরে মিযৌরি, দক্ষিণে লুইযিয়ানা, দক্ষিণ-পশ্চিমে টেক্সাস এবং পশ্চিমে ওকলাহোমা। মিসিসিপি নদী আরকানসার পূর্বে টেনেসি ও মিসিসিপি স্টেইটের সীমান্ত নির্ধারণ করেছে। 

ইতিহাস

উডল্যান্ডের অধিবাসী এবং মিসিসিপিয়ানরা হাজার হাজার বছর ধরে বর্তমান আরাকানসার বাসিন্দা ছিলেন। ১৬ শতকে তাদের উত্তরাধিকাররা ইউরোপিয়ান অভিযাত্রী এবং উপনিবেশিকদের সঙ্গে প্রথম মুখোমুখি হন।

তখনকার মিসিসিপি নদী উপত্যকা এবং বর্তমান আরকানসায় প্রথম ইউরোপিয়ান বসতির নাম ছিল আরকানসা পোস্ট। ১৬৮৬ সালে আরকানসা নদীতীরে এই বসতিটি একটি ফ্রেঞ্চ ট্রেডিং পোস্ট হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হয়। 

১৮০৩ সালে অ্যামেরিকা ফ্রান্সের কাছে থেকে লুইযিয়ানা কেনার অংশ হিসেবে আরকানসার এলাকাটি অধিগ্রহণ করে। ১৮১৯ সালে আরকানসা পোস্টের ব্যবসায়িক শহরটি ছিল আরকানসা টেরিটরির প্রথম ক্যাপিটাল। পরে ক্যাপিটাল সরিয়ে স্টেইটের কেন্দ্র ‘লিটল রক’ এ স্থানান্তর করা হয়। ১৮৩৬ সালের ১৫ জুন আরকানসাকে আলাদা স্টেইটের মর্যাদা দেয়া হয় এবং ২৫তম স্টেইট হিসেবে এটি ইউনিয়নে যোগ দেয়। 

ভৌগোলিক অঞ্চল

আয়তন

আরকানসা স্টেইটের আয়তন ১৩৭,৭৩০ বর্গকিলোমিটার, যা বৃটেইনের আয়তনের অর্ধেকের চেয়ে সামান্য বড়। অন্য অ্যামেরিকান স্টেইটের তুলনায় এটি টেক্সাসের প্রায় পাঁচ ভাগের এক ভাগ, তবে এটি নিউ জার্সির আয়তনের প্রায় ছয়গুণ বড়।

ভৌগোলিক অবস্থান

ছয়টি আলাদা অঞ্চলের সমন্বয়ে আরকানসার ভৌগোলিক মানচিত্র গঠিত হয়েছে। 

স্টেইটের উত্তর-পশ্চিম অংশে রয়েছে অ্যামেরিকান উচ্চভূমি। এছাড়া বোস্টন পর্বতমালার সঙ্গে বিচ্ছিন্নভাবে রয়েছে ওজার্ক মালভূমি, যা ওজার্কের দক্ষিণ-পশ্চিম অংশ গঠন করে। 

মালভূমির দক্ষিণে আরকানসার নদী উপত্যকা। এটি ৬৫ কিলোমিটার জুড়ে বিস্তৃত একটি অববাহিকা যা ওজার্ককে অউচিটা পর্বতমালা থেকে আলাদা করে। 

অউচিটা পর্বতমালা পশ্চিম-মধ্য আরকানসার একটি পর্বতশ্রেণি। এই সীমার মধ্যেই ২,৭৫৩ ফুট উচ্চতায় স্টেইটের সর্বোচ্চ বিন্দু মাউন্ট ম্যাগাজিনের অবস্থান। 

অউচিটা পর্বতমালার দক্ষিণে এবং আরকানসার দক্ষিণ-পশ্চিম অংশে, দক্ষিণের নিম্নভূমি রয়েছে, যা ওয়েস্ট গালফ কোস্টাল সমভুমি নামে পরিচিত। এই সমভূমিতে রয়েছে মিশ্র বন এবং পাহাড়ি ভূ-সংস্থান।

‘আরকানসা ডেল্টা’ মিসিসিপি নদী বরাবর এই স্টেইটের পূর্ব অংশের উর্বর এবং কৃষিনির্ভর অঞ্চল। এটি মিসিসিপি ও এর উপনদী দ্বারা গঠিত নিম্নভূমির এবং মিসিসিপি নদীর ‘পলল সমভূমি’র অংশ।

‘ক্রাউলি’স রিজ’ ৩৪০ কিলোমিটার দীর্ঘ একটি অনন্য ভূতাত্ত্বিক গঠন, যা মিসিসিপি পলল সমভূমিতে, উত্তর-পূর্ব আরকানসার ব-দ্বীপ অঞ্চলের উপরে ১৭০ মিটার পর্যন্ত উঠেছে। স্থানীয়রা বিশ্বাস করেন, এই রিজটি এক সময় মিসিসিপি এবং ওহিও নদীর মাঝখানে একটি বিশাল বালি ও নুড়ির দ্বীপ ছিল। 

নদী

আরকানসার প্রধান নদীগুলো হচ্ছে মিসিসিপি, আরকানসা এবং হোয়াইট রিভার। এর পাশাপাশি অন্য প্রধান নদী হলো সেইন্ট ফ্রান্সিস রিভার, রেড রিভার, আচিউটা রিভার এবং এদের বিভিন্ন উপনদী।

শহর ও জনসংখ্যা 

দ্য ন্যাচারাল স্টেইটের জনসংখ্যা আনুমানিক ৩ মিলিয়ন। এর ক্যাপিটাল এবং বৃহত্তম শহর ‘লিটল রক’ যেখানকার জনসংখ্যা প্রায় ১৯৮ হাজার। স্টেইটের বেশিরভাগ অংশ এখনও প্রত্যন্ত গ্রাম ও কৃষিনির্ভর। 

৫০ হাজারের বেশি জনসংখ্যা নিয়ে গঠিত শহরগুলো হলো লিটল রক-নর্থ, কনওয়ে, ফোর্ট স্মিথ, ফেয়েটেভিল, স্প্রিংডেইল, রজার্স, বেন্টন, পাইন ব্লাফ ও জোন্সবোরতেই । এসব শহরের বাইরে খুব একটা বসতি দেখা যায় না। 

জাতি ও জনগোষ্ঠী  

আরকানসার জনসংখ্যার ৭২ শতাংশ ককেশিয়ান বা হোয়াইট। ১৫.৭ শতাংশ অ্যাফ্রিকান-অ্যামেরিকান, ৭.৮ শতাংশ হিস্পানিক বা ল্যাটিনো, ১.৭ শতাংশ এশিয়ান এবং ১ শতাংশ নেইটিভ অ্যামেরিকান। 

বিমানবন্দর

আরকানসা স্টেইটের সবচেয়ে বড় বিমানবন্দরের নাম বিল অ্যান্ড হিলারি ক্লিন্টন ন্যাশনাল বিমানবন্দর। যাত্রীসেবা বিবেচনায় দ্বিতীয় বড় বিমানবন্দর হলো নর্থওয়েস্ট আরকানসাস ন্যাশনাল বিমানবন্দর।


0 মন্তব্য

মন্তব্য করুন