ঋণসীমার বিলে ভোট জোগাড়ে তৎপর বাইডেন-ম্যাকার্থি

টিবিএন ডেস্ক

মে ৩১ ২০২৩, ২২:৩১

ক্যাপিটল হিলের সিঁড়িতে প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন (বামে) ও স্পিকার কেভিন ম্যাকার্থি। ছবি: সংগৃহীত

ক্যাপিটল হিলের সিঁড়িতে প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন (বামে) ও স্পিকার কেভিন ম্যাকার্থি। ছবি: সংগৃহীত

  • 0

ঋণসীমা বাড়ানোর বিল পাসে কোনো ঝুঁকি নিতে চান না অ্যামেরিকার প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন ও হাউয স্পিকার কেভিন ম্যাকার্থি। সেনেটে বিলের পক্ষে ভোট নিশ্চিত করতে ডেমোক্যাটদের সমর্থন জোগানোর চেষ্টায় আছেন বাইডেন। আর রিপাবলিকবানদের বিরোধিতা প্রশমিত করে ভোটের জন্য রাজি করায় হিমশিম খাচ্ছেন ম্যাকার্থি।

তারপরও বিল পাসের বিষয়ে আশাবাদী স্পিকার। ক্যাপিটল হিলে প্রবেশের আগে বুধবার সকালে তিনি সাংবাদিকদের বলেন, ‘আজ আমরা ঐতিহাসিক এক ব্যায় সংকোচনের বিল পাস করতে যাচ্ছি। দেশকে সঠিক পথে ফিরিয়ে আনতে এটি একটি ছোট্ট পদক্ষেপ।’

দেশকে ঋণখেলাপি হওয়া থেকে রক্ষা করতে হলে ৫ জুনের মধ্যে ঋণসীমা বাড়াতে হবে। এ নিয়ে কয়েক দফা আলোচনার পর অবশেষে গত শনিবার সমঝোতা চুক্তিতে পৌঁছেছেন বাইডেন ও ম্যাকার্থি। সেটি ফিসক্যাল রেসপন্সিবিলিটি অ্যাক্ট নামের বিল আকারে মঙ্গলবার রাতে হাউয রুলস কমিটির গ্রিন সিগন্যাল পেয়েছে।  

বুধবার রাতে হাউয ফ্লোরে বিলটি উত্থাপনের পর হবে ভোট। পাস হলে তা যাবে সেনেটে। পুরো প্রক্রিয়া শেষ করে বিলটি আইনে পরিণত করতে লেগে যেতে পারে দুদিনের মতো সময়। আর ভোটে বাধা পড়লে বেড়ে যাবে অ্যামেরিকার ঋণখেলাপি হওয়ার ঝুঁকি।

শেষ সময়ে এসে ঝুঁকি এড়াতে তাই তৎপর প্রেসিডেন্ট বাইডেন ও স্পিকার ম্যাকার্থি। বিষয়টিকে এখন ডেমোক্র্যাটিক ও রিপাবলিকান পার্টিতে এই দুই নেতার নেতৃত্বের পরীক্ষা হিসেবেও দেখা হচ্ছে।

সামগ্রিকভাবে ৯৯ পৃষ্ঠার এই বিলে আগামী দুই বছরের জন্য খরচ সীমিত করা হচ্ছে। ঋণের সর্বোচ্চ সীমা স্থগিত করা হয়েছে ২০২৫ সালের জানুয়ারি পর্যন্ত। বিলে কিছু পলিসির পরিবর্তন করা হয়েছে।

হোয়াইট হাউয জানিয়েছে, বিলে ভোট টানতে নীল শিবিরের আইনপ্রণেতাদের সঙ্গে ফোন করে কথা বলেছেন প্রেসিডেন্ট বাইডেন। ভোট জোগাড়ে তিনি বুধবার সকালে হোয়াইট হাউযের শীর্ষ কর্মকর্তাদের ক্যাপিটল হিলে পাঠিয়েছেন।

বিলে প্রবীণদের খাদ্য সহায়তার জন্য কাজের নতুন আবশ্যিকতার পলিসির বিরোধিতা করছেন লিবারেল ডেমোক্র্যাটরা। কয়েকজন আবার অ্যাপালচিয়ান প্রাকৃতিক গ্যাস লাইন প্রকল্প সংক্রান্ত বিধান বিল থেকে সরিয়ে দেয়ার কথা বলছেন।

ডেমোক্র্যাটিক সেনেটর জো ম্যানশিন জানান, এই প্রকল্প খুবই গুরুত্বপূর্ণ। তবে এই শিবিরের আরেক শীর্ষ আইনপ্রণেতা রাউল গ্রিয্যালভার মতে, বিলে এই বিধান অন্তর্ভুক্ত করা খুবই গোলমেলে ও হতাশাজনক। 

তবে ডেমোক্যাটদের চেয়ে রিপাবলিকানদের মধ্যে এই বিল নিয়ে আপত্তি প্রবল, যা হাউয কমিটির বৈঠকে বেশ উত্তেজনা ছড়িয়েছে। এ কারণে নিজ দলের ভোট টানতে বেশ ধকল পোহাতে হচ্ছে ম্যাকার্থিকে। তার বিরুদ্ধে লাল শিবিরের কট্টর নেতারা বিদ্রোহী হয়ে উঠেছেন। 

বুধবার সকাল পর্যন্ত হাউযের ৩২ রিপাবলিকান নেতা বিলের ভোট দেবেন না বলে জানিয়েছেন।

তাদের একজন ম্যাট গ্যায়েজ মঙ্গলবার বলেন, ‘বেশিরভাগ রিপাবলিকানদের বিরোধিতার পরও ডেমোক্র্যাটদের দিয়ে বিল পাস করিয়ে নিলেন মানেই ম্যাকার্থি আমাদের কথার বরখেলাপ করলেন। এমনটি হলে তাকেই সরিয়ে দেয়ার তাৎক্ষণিক প্রক্রিয়া শুরু হবে।’

কট্টর ডানপন্থি রিপাবলিকানদের মূল অভিযোগ, তারা যে পরিমাণ ব্যায় সংকোচনের দাবি করেছিলেন, বিলে তা মানা হয়নি। এ নিয়ে তারা বেশ ক্ষুব্ধ। 

ম্যাকার্থি মঙ্গলবার তাদেরকে বিল পাসে ভোট দেয়ার আহ্বান জানালেও কট্টর ডানপন্থি হাউয ফ্রিডম ককাসের নেতারা কংগ্রেসে বিল আটকে দেয়ার শপথ নিয়ে রেখেছেন।

ফ্রিডম ককাসের চেয়ারম্যান স্কট পেরি বলেন, ‘এই চুক্তি ডুবিয়েছে, একেবারেই ডুবিয়েছে। আমরা বিল আটকে দিতে যা যা করার প্রয়োজন, সব করব।’

রিপাবলিকান স্টাডি কমিটি বিলের বিষয়ে নিজেদের অবস্থান পরিষ্কার করেনি। মধ্যপন্থিরাও অনেকটা অনিশ্চিত। সব মিলিয়ে ম্যাকার্থি বিপাকেই পড়েছেন।

এই ফিসক্যাল রেসপন্সিবিলিটি অ্যাক্ট পাস করতে হলে ৪৩৫ সদস্যের হাউযে ২১৮টি ভোট লাগবে।

হাউয ডেমোক্যাট নেতা হাকিম জেফ্রিস বলেছেন, দেশকে বাঁচাতে ডেমোক্র্যাটরা ভোট দেবেন। তবে যথেষ্ট ভোট তোলার বিষয়টি এখন পুরোপুরি ম্যাকার্থির হাতে। তাকে দুই তৃতীয়াংশ রিপাবলিকানদের ভোট এনে দিতে হবে। 

জেফ্রিস বলেন, ‘এটা আমার প্রত্যাশা যে হাউয রিপাবলিকানরা তাদের প্রতিশ্রুতি রাখবেন। তারা অন্তত ১৫০ ভোট দেবেন। কারণ এই চুক্তি তাদের আলোচনার ওপর ভিত্তি করেই হয়েছে।’


0 মন্তব্য

মন্তব্য করুন