সুইডেনে পবিত্র কোরআন অবমাননায় নিন্দার ঝড়

টিবিএন ডেস্ক

জুন ২৯ ২০২৩, ১৭:৪৯

স্টকহোম সেন্ট্রাল মসজিদের বাইরে বিক্ষোভের সময় কোরআন অবমাননা করেন এক ইরাকি। ছবি: সংগৃহীত

স্টকহোম সেন্ট্রাল মসজিদের বাইরে বিক্ষোভের সময় কোরআন অবমাননা করেন এক ইরাকি। ছবি: সংগৃহীত

  • 0

সুইডেনের রাজধানীতে পুলিশের অনুমোদিত একটি বিক্ষোভে এক ব্যক্তির পবিত্র কোরআন শরিফ অবমাননা করার ঘটনার তীব্র নিন্দা করেছে বিভিন্ন দেশ।

সালওয়ান মোমিকা নামে ৩৭ বছর বয়সী এক ইরাকি বৃহস্পতিবার মুসলমানদের ঈদুল আজহার ছুটির সময় স্টকহোম সেন্ট্রাল মসজিদের বাইরে এই বিক্ষোভ করেন। এ সময় তিনি ইসলামের পবিত্র ধর্মগ্রন্থের পাতা ছিঁড়ে আগুনে জ্বালিয়ে দেন। মোমিকা কয়েক বছর আগে ইরাক থেকে পালিয়ে সুইডেনে আশ্রয় নেন।

স্টকহোমে বৃহস্পতিবারের ওই ঘটনায় ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে মধ্যপ্রাচ্যের বিভিন্ন দেশ।

তুর্কিয়ের পররাষ্ট্রমন্ত্রী হাকান ফিদান কোরআন অবমাননাকে ‘ঘৃণ্য’ বলে অভিহিত করেছেন।

ফিদান এক টুইটে লিখেছেন, ‘মত প্রকাশের স্বাধীনতার অজুহাতে এসব ইসলামবিরোধী কর্মকাণ্ডের অনুমতি দেয়া অগ্রহণযোগ্য। এই ধরনের ভয়ঙ্কর কর্মকাণ্ডের দিক থেকে চোখ ফিরিয়ে রাখা অন্যায়।’

সুইডেনের ঘটনায় তুর্কিয়ের নিন্দার আলাদা গুরুত্ব রয়েছে। কারণ দেশটি নেইটোতে সুইডেনের সদস্যপদের বিরোধী অবস্থানে আছে। আঙ্কারার অভিযোগ দেশটি স্টকহোমের কুর্দি গোষ্ঠীগুলোকে দমন করতে ব্যর্থ হয়েছে।

কোরআন অবমাননার ঘটনায় কড়া অবস্থান নিয়েছে মরক্কো। দেশটি সুইডেন থেকে নিজেদের অ্যাম্বাসেডরকে অনির্দিষ্ট সময়ের জন্য প্রত্যাহার করেছে। একইসঙ্গে তারা সুইডেনের চার্জ ডি অ্যাফেয়ার্সকে তলব করে ঘটনার তীব্র নিন্দা জানিয়েছে।

এ ঘটনার নিন্দা জানিয়ে ইজিপ্ট বলেছে মোমুকার কাজটি অত্যন্ত ‘লজ্জাজনক’, বিশেষত ঈদুল আজহার সময়ে।

দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ইউরোপে বারবার কোরআন পোড়ানোর ঘটনায় উদ্বেগও প্রকাশ করেছে।

মন্ত্রণালয় এক বিবৃতিতে বলেছে, ‘পবিত্র কোরআন পোড়ানোর মতো ঘটনার পুনরাবৃত্তি এবং সম্প্রতি কিছু ইউরোপীয় দেশে ইসলামোফোবিয়া ও ধর্মের অবমাননার মতো অপরাধের বৃদ্ধিতে ইজিপ্টি গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করছে।’

কোরআন অবমাননার ঘটনাকে ‘জাতিবিদ্বেষ’ ও ‘দায়িত্বজ্ঞানহীন’ আচরণ হিসেবে অভিহিত করেছে ইরাক। দেশটির সরকার এক বিবৃতিতে বলেছে, তারা চরমপন্থি ও বিচ্যুত মানসিকতার ব্যক্তিদের দ্বারা বারবার পবিত্র কোরান পোড়ানোর ঘটনার নিন্দা করছে।

জর্ডান নিন্দা জানিয়ে বলেছে, ঘটনাটি একটি বিপজ্জনক ঘৃণামূলক কাজ এবং ইসলামোফোবিয়ার একটি বহিঃপ্রকাশ। এ ধরনের ঘটনা সহিংসতা ও ধর্মের অবমাননাকে উসকে দেয় উল্লেখ করে দেশটি বলছে, এমন কাজকে কখনও মত প্রকাশের স্বাধীনতার হিসেবে বিবেচনা করা যায় না।

কুয়েতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বলেছে, পবিত্র কোরআন আগুনে পোড়ানো একটি বিপজ্জনক, উসনিমূলক পদক্ষেপ; যা সারা বিশ্বের মুসলমানদের অনুভূতিতে আঘাত করেছে।

ইয়েমেন সরকার এক বিবৃতিতে বলেছে, ঘটনাটি বিদ্বেষমূলক চরমপন্থি আচরণ, যার মাধ্যমে সারা বিশ্বের মুসলমানদের অনুভূতিকে ইচ্ছাকৃতভাবে আঘাত দেয়া হয়েছে।

অ্যামেরিকান স্টেইট ডিপার্টমেন্টও সুইডেনে কোরআন পোড়ানোর নিন্দা জানিয়েছে।

স্টেইট ডিপার্টমেন্ট মুখপাত্র বেদান্ত প্যাটেল বলেন, ‘ধর্মীয় গ্রন্থ পোড়ানো অসম্মানজনক ও ক্ষতিকর। আইনি কাঠামোর ভেতরেও এটি কোনো যথাযথ আচরণ নয়।’


0 মন্তব্য

মন্তব্য করুন