ইন্ডিয়ানা: দ্য হুযিয়ান স্টেইট

তাহমিনা তাশরিফ মীম, টিবিএন ডেস্ক

এপ্রিল ৫ ২০২৩, ১৬:১০

ইন্ডিয়ানার ম্যাপ

ইন্ডিয়ানার ম্যাপ

  • 0

ইন্ডিয়ানা হলো অ্যামেরিকার মধ্য-পশ্চিম অংশের একটি স্টেইট। এটি ‘ক্রসরোডস অফ অ্যামেরিকা’ নামেও পরিচিত।

ইন্ডিয়ানা পূর্বে ওহিওর সঙ্গে সীমান্ত গঠন করে। ইন্ডিয়ানা সীমান্তের দক্ষিণ অংশের সঙ্গে পশ্চিমে ওয়াবাশ নদী এবং ইলিয়নয়ের সঙ্গে সীমান্ত নির্ধারণ করে দিয়েছে। এর দক্ষিণের ওহিও নদী প্রাকৃতিক সীমানা তৈরি করে এবং উত্তরে এটি মিশিগানের সঙ্গে একটি স্টেইট লাইন ভাগ করে নেয়। উত্তর-পশ্চিমে মিশিগান লেকের কাছে ইন্ডিয়ানার একটি ছোট উপকূল রেখাও রয়েছে। 

ইতিহাস

ইউরোপিয়ানদের আসার আগে হাজার হাজার বছর ধরে নেইটিভ অ্যামেরিকান উপজাতিরা এ এলাকার জলসীমার পাশে বসবাস করত। 

১৮ শতকে বর্তমান ইন্ডিয়ানা ফ্রেঞ্চ উপনিবেশের অংশ ছিল । ১৭৬৩ সালে তারা ইন্ডিয়ানাকে বৃটেইনের কাছে হস্তান্তর করে। ২০ বছর পরে ১৭৮৩ সালে এটি অ্যামেরিকার সঙ্গে যুক্ত হয়। 

ইন্ডিয়ানা তখনকার অ্যামেরিকার উত্তর-পশ্চিম অঞ্চলের অংশ ছিল, যা পরে ওহিও স্টেইট এবং ইন্ডিয়ানা স্টেইটে পরিণত হয়। ১৮১৬ সালের ২৯ জুন ইন্ডিয়ানা স্টেইটের প্রথম সংবিধান প্রণীত ও গৃহীত হয়। ইন্ডিয়ানা ১৮১৬ সালের ১১ ডিসেম্বর ১৯তম স্টেইট হিসেবে ইউনিয়নে যোগ দেয়। 

ভৌগোলিক অবস্থান  

ইন্ডিয়ানা তুলনামূলকভাবে একটি ছোট স্টেইট, যা অ্যামেরিকান স্টেইট র‍্যাঙ্কিংয়ে ৩৮তম। ইন্ডিয়ানা ৯৪,৩২১ বর্গকিলোমিটার আয়তন নিয়ে পর্তুগালের চেয়ে সামান্য বড়, কিন্তু এটি টেক্সাসের প্রায় সাত ভাগের এক ভাগ।

প্রধান ভৌগৌলিক অঞ্চল

ইন্ডিয়ানাকে তিনটি প্রধান ভৌগৌলিক অঞ্চলে ভাগ করা হয়:

স্টেইটের উত্তর তৃতীয়াংশের বেশিরভাগ এলাকা গ্রেট লেকের সমভূমিতে পূর্ণ। এর ভৌগৌলিক বৈশিষ্ট্যে বিস্তৃত কৃষিভূমিকে কেন্দ্র করে ছোট ছোট শহর এবং নগর পরিলক্ষিত হয়। নর্থ ইন্ডিয়ানার বেশিরভাগ এলাকাকে অ্যামিশ দেশের অংশ ধরা হয়।

ইন্ডিয়ানার মধ্য-তৃতীয় অংশের টিপটন সমতল ভুমি হলো এ অঞ্চলের সবচেয়ে জনবহুল এলাকা। বরফ যুগে, মহাদেশীয় হিমবাহের ফলে টিল প্লেইনের সমতল থেকে সামান্য আঁকাবাঁকা ভূমির সৃষ্টি হয়। সমভূমির পূর্বে এবং রিচমন্ডের উত্তরে ইন্ডিয়ানার সর্বোচ্চ প্রাকৃতিক বিন্দু। হুসিয়ার হিল নামে পরিচিত এ বিন্দুটির উচ্চতা ৩৮৩ মিটার। ওহিও স্টেইটের সীমান্তের মধ্য-পূর্বের কাছাকাছি এর অবস্থান।

ইন্ডিয়ানার দক্ষিণ তৃতীয় অংশে রয়েছে সাউদার্ন হিল এবং নিম্নভূমি অঞ্চল। এলাকাটি কৃষিজমি, বনভূমি এবং বেশকিছু পাহাড়ি এলাকার মিশ্রণে তৈরি। একমাত্র ইন্ডিয়ানার এই অংশটিই কখনো বরফে ঢাকা থাকে না। সমতল ওয়াবাশের নিম্নভূমি, ক্রফোর্ড আপল্যান্ডের পার্বত্য অঞ্চল, মিশেল সমভূমির কার্স্ট এলাকা এবং রুক্ষ নরম্যান আপল্যান্ড এ অঞ্চলের অন্তর্ভুক্ত।

আবহাওয়া

বেশ ঠান্ডার শীতকাল, আর্দ্র এবং গরমের গ্রীষ্মকালসহ ইন্ডিয়ানায় আর্দ্র মহাদেশীয় জলবায়ু দেখা যায়। স্টেইটের সবচেয়ে দক্ষিণতম অংশেই একমাত্র আর্দ্র উপক্রান্তীয় জলবায়ু লক্ষ্য করা যায়।

নদী 

ইন্ডিয়ানার সবচেয়ে বড় নদী ওয়াবাশ থেকে অসংখ্য উপনদীর সৃষ্টি হয়েছে। এর মধ্যে অন্যতম প্রধান উপনদী হল: সালামোনিই, মিসিসিনেওয়া, ইল, টিপ্পেকানো, হোয়াইট রিভার, ভারমিলিয়ন এবং মধ্য ইন্ডিয়ানার এম্বাররাস নদী। কানকাকি নদীটি ইলিনয় নদীর একটি উপনদী, যা থেকে ইন্ডিয়ানায় বহমান ইরোকুয়েস উপনদীটির উৎপত্তি।

লেক

ইন্ডিয়ানার সবেচেয়ে বড় লেকগুলো কৃত্রিমভাবে সৃষ্টি। লেক মনরো ইন্ডিয়ানার বৃহত্তম লেক। দক্ষিণ ইন্ডিয়ানার পাটোকা লেকটি এমন একটি জলাধার যা পাটোকা নদীকে বাঁধ দিয়ে তৈরি করা হয়েছিল। সল্ট ক্রিককে বাঁধ দিয়ে ব্যারিয়ার লেক তৈরি করা হয়, যার দক্ষিণ তীরে রয়েছে এই স্টেইটের একমাত্র ফেডারেল দ্বারা সুরিক্ষিত এলাকা চার্লস সি ডিম মরুভূমি । 

জনসংখ্যা

আয়তনের তুলনায় ইন্ডিয়ানার জনসংখ্যার ঘনত্ব অনেক বেশি। ৬.৭৩ মিলিয়ন মানুষ এ স্টেইটে বসবাস করেন। 

ইন্ডিয়ানা হুযিয়ান স্টেইট নামেও পরিচিত। এর ক্যাপিটাল ইন্ডিয়ানাপোলিস। এটিই ইন্ডিয়ানার সবচেয়ে বড় শহর, যেখানকার জনসংখ্যা প্রায় ৮৭,৬০০ । 

অন্য প্রধান শহরগুলো হল: ফোর্ট ওয়েন, ইভান্সভিল, সাউথ বেন্ড, ক্যারমেল এবং ফিশার্স। 

জাতি ও জনগোষ্ঠী

ইন্ডিয়ানার জনসংখ্যার ৭৮.৯ শতাংশ হোয়াইট, ৯.৮ শতাংশ অ্যাফ্রিক্যান-অ্যামেরিক্যান, ৭.১ শতাংশ হিস্পানিক বা ল্যাটিনো, এশিয়ান ২.৫ শতাংশ এবং নেইটিভ অ্যামেরিক্যান ০.৪ শতাংশ। 

ইন্ডিয়ানাপোলিস আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর এ স্টেইটের সবচেয়ে ব্যস্ততম বিমানবন্দর। 

প্রধান শহর

ইন্ডিয়ানাপোলিস, ফোর্ট ওয়েন, সাউথ বেন্ড, ইভান্সভিল, ক্যারমেল, ফিশার্স ও ব্লুমিংটন।


0 মন্তব্য

মন্তব্য করুন