পুলিশ হেফাজতে ওটিয়েনোর মৃত্যুর ভিডিও প্রকাশ

টিবিএন ডেস্ক

মার্চ ২২ ২০২৩, ১৮:৩৬

হাসপাতালের কক্ষে ওটিয়েনোকে চেপে ধরে রাখার দৃশ্য রেকর্ড হয় সিসিটিভি ক্যামেরায়

হাসপাতালের কক্ষে ওটিয়েনোকে চেপে ধরে রাখার দৃশ্য রেকর্ড হয় সিসিটিভি ক্যামেরায়

  • 0

কারাগার থেকে মানসিক হাসপাতালে নেয়ার পর হাতকড়া-ডান্ডাবেড়ি পরা ওটিয়েনোর মৃত্যু হয়

ভার্জিনিয়ায় পুলিশ হেফাজতে আসামির মৃত্যুর ঘটনার ভিডিও প্রকাশ করেছেন প্রসিকিউটররা। তাতে দেখা গেছে, একটি হাসপাতালের কক্ষে আসামি ইরভো ওটিয়েনোকে মেঝেতে ফেলে চেপে ধরে রেখেছেন কয়েকজন ডেপুটি শেরিফ। এর পরপরই নিস্তেজ হয়ে পড়েন ওটিয়েনো।

 

ওটিয়েনো হত্যা মামলায় হেনরিকো কাউন্টির শেরিফ অফিসের ৭ ডেপুটি ও হাসপাতালের ৩ কর্মিতে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এই ১০ জনের বিরুদ্ধে সেকেন্ড ডিগ্রি মার্ডারের অভিযোগ করা হয়েছে। মামলার আইনজীবী অ্যান ক্যাবেল ব্যাস্কারভিল মঙ্গলবার এ ঘটনার ভিডিও প্রকাশ করেন। আদালতেও দেয়া হয়েছে ভিডিওটি।

 

২৮ বছরের ওটিয়েনোকে গত ৩ মার্চ গ্রেপ্তার করে স্থানীয় কারাগারে পাঠায় শেরিফ অফিসের কর্মকর্তারা। কারাগার থেকে ৩ দিন পর তাকে স্থানীয় একটি মানসিক হাসপাতাল নেয়া হয়। সেখানেই তার মৃত্যুর ঘটনাটি ঘটে।

  

এ ঘটনা জানাজানি হওয়ার পর শেরিফ অফিসের ৭ সদস্যকে ওটিয়েনোর মৃত্যুর জন্য দায়ি করেন ডিনউইডডি কাউন্টি কমনওয়েলথের আইনজীবী ব্যাস্কারভিল। তিনিই মামলাটি আদালতে নিয়ে যান। অভিযোগে তিনি বলেন, কয়েকজন মিলে চেপে ধরে রাখার কারণে দম আটকে মারা যান ওটিয়েনো। 

 

আর শেরিফ অফিসের পক্ষ থেকে দেয়া বিবৃতিতে বলা হয়, আক্রমণাত্মক হয়ে ওঠায় ওটিয়েনোকে ঠেকানোর চেষ্টা করা হচ্ছিল। সে সময় তার মৃত্যু হয়। মামলাটি আদালতে গেলে গ্র্যান্ড জুড়ি ৭ পুলিশের পাশাপাশি হাসপাতালের ৩ কর্মীকেও অভিযুক্ত করে।

 

যা ঘটেছিল

ভার্জিনিয়ার হেনরিকো কাউন্টি পুলিশ গত ৩ মার্চ একটি চুরি ঘটনার খবর পেয়ে পারহাম ডক্টরস হাসপাতালে যায়। সেখান থেকে ২৮ বছরের ওটিয়েনোকে ইমার্জেন্সি কাস্টেডি অর্ডারের আওতায় গ্রেপ্তার করে পাঠানো হয় স্থানীয় কারাগারে। সাধারণত মানসিকভাবে অসুস্থ ব্যক্তিদের ক্ষেত্রে এই অর্ডার জারি করা হয়।

 

হেনরিকো পুলিশের বিবৃতি বলা হয়, পারহাম ডক্টরস হাসপাতালে চুরির ঘটনা তদন্তে যাওয়া পুলিশ কর্মকর্তাদের ওপর ওটিয়েনো হামলে পড়ে। একারণে তাকে গ্রেপ্তার করে কারাগারে পাঠানো হয়। এরপর ৬ মার্চ কারাগার থেকে খবর দেয়া হয় যে ওটিয়েনোকে সেন্ট্রাল স্টেট হাসপাতালে নেয়া হয়েছে। ডেপুটি শেরিফরা সেখানে গেলে ওটিয়েনো ফের আক্রমণাত্মক হয়ে ওঠেন। ঠেকানোর চেষ্টা করার সময় তার মৃত্যু হয়।

 

ভিডিওতে যা আছে

ওটিয়েনোর মা ক্যারোলিন ওউকো, তাদের আইনজীবী বেন ক্রাম্প ও কমনওয়েলথের আইনজীবী ব্যাস্কারভিল মঙ্গলবার একটি সংবাদ সম্মেলন ডাকেন। সেখানেই হাসপাতালের ভিডিওটি প্রকাশ করা হয়। 

 

ভিডিওতে দেখা গেছে, হাসপাতালের অ্যাডমিশন রুমে হাতকড়া ও ডাণ্ডাবেড়ি পরানো ওটিয়েনোকে জাপটে ধরে রেখেছেন কয়েকজন ডেপুটি শেরিফ। ওটিয়েনোকে নিজেকে ছাড়িয়ে নিতে চেষ্টা করছিলেন। পরে ওই ডেপুটিরা এবং হাসপাতালের কয়েকজন কর্মী মিলে ওটিয়েনোকে মেঝেতে ফেলে তার উপর চাপ দিয়ে রাখে। এভাবে প্রায় ১১ মিনিট চেপে ফেলে রাখার পর ওটিয়েনো নিস্তেজ হয়ে এলে তারা সরে যান।

 

ভিডিওর পাশাপাশি সংবাদ সম্মেলনে একটি অডিও রেকডিংও প্রকাশ করা হয়। তাতে হাসপাতালের এক কর্মীকে ৯১১ এ কল করে কথা বলতে শোনা যায়। ওই কর্মী বলছিলেন, ‘জনাব ওটিয়েনো আক্রমণাত্মক হয়ে ওঠেন। তারা (ডেপুটি শেরিফ) তাকে আটকানোর চেষ্টা করছিলেন। এরপর থেকে তিনি শ্বাস নিচ্ছেন না।’

 

আইনজীবীরা জানান, প্রাথমিক ময়নাতদন্তে ওটিয়েনোর মৃত্যুর কারণ অ্যাসফেক্সিয়া বলে শনাক্ত করা হয়েছে।

 

ওটিয়েনোর মা ওউকো বলেন, ‘আমার ছেলের সঙ্গে কুকুড়ের মতো আচরণ করা হয়েছে। তাকে নির্যাতন করা হয়েছে।’ ১০ জনকে অভিযুক্ত করা ওটিয়েনোর প্রতি ন্যায়বিচারের কেবল প্রথম ধাপ বলে তিনি জানান।

 

ওউকোর আইনজীবী ক্রাম্প জানান, ওটিয়েনোর যখন সাহায্যের দরকার ছিল তখন তাকে উল্টো অতিরিক্ত জোড় খাটিয়ে আটকে রাখা হয়। তিনি বলেন, ‘ওটিয়েনোকে নির্মমভাবে ঠেকানো হচ্ছিল, তার গলায় হাটু দিয়ে চাপ দিয়ে রাখা হয়েছিল।’


0 মন্তব্য

মন্তব্য করুন