ন্যাশভিলের দ্য কনভেন্যান্ট স্কুলে সোমবার এই ঘটনা ঘটে। হামলায় নিহত হয় তিন শিশু শিক্ষার্থী ও স্কুলের তিন কর্মী।
ন্যাশভিল পুলিশ চিফ জন ড্রেক জানিয়েছেন, প্রাথমিক তদন্তে মনে হচ্ছে টার্গেট করেই স্কুলটিতে হামলা করেছিলেন অড্রে হেল। কেন ও কীভাবে এই হামলা তিনি চালিয়েছেন- সেই তথ্যও তদন্তে বের হয়ে আসছে বলে জানান ড্রেক।
তিনি সিবিএস নিউজকে দেয়া সাক্ষাৎকারে বলেছেন, স্কুলে হামলার পর আরও কিছু জায়গায় হামলা চালানোর পরিকল্পনা ছিল হেলের।
হামলার ঘটনার একটি সিসিটিভি ফুটেজও পুলিশ প্রকাশ করেছে। তাতে দেখা গেছে, গুলি করতে করতে দরজা দিয়ে স্কুলের ভেতরে প্রবেশ করেন হেল। তার কাছে তিনটি বন্দুক ছিল।
ড্রেক জানান, একটি রাইফেল, একটি পিস্তল ও একটি হ্যান্ডগান ছিল হেলের কাছে। এর মধ্যে দুটি স্থানীয় কোনো জায়গা থেকে আইন মেনেই জোগার করা হয়েছে। এছাড়া হেলের বাড়িতে তল্লাশি চালিয়ে আরও কিছু অস্ত্র জব্দ করা হয়েছে।
অড্রে হেল সম্পর্কিত একটি ওয়েবসাইট ঘেঁটে এবিসি নিউজ জানিয়েছে, তিনি ন্যাশভিলে থাকতেন; গ্রাফিক ডিজাইনার ও ইলাস্ট্র্যাটর হিসেবে কাজ করতেন।
পুলিশের এক মুখপাত্র হেলের সোশ্যাল মিডিয়ার তথ্যের বরাত জানিয়েছেন, জন্মগতভাবে নারী হলেও নিজের ক্ষেত্রে পুরুষবাচক শব্দ ব্যবহার করতেন। তার নামে কোনো ক্রিমিনাল রেকর্ড পাওয়া যায়নি।
হেলের মা নোরমা হেল কোনো মন্তব্য করতে চাননি। ‘খুব খুব কঠিন সময় যাচ্ছে’- একথা বলে তিনি ধাতস্থ হওয়ার সময় চেয়েছেন।
প্রতিবেশিরা জানিয়েছেন, হেল খুবই ভাল ও ধার্মিক ছিলেন। তিনি ন্যাশভিল নসি কলেজ অফ আর্ট অ্যান্ড ডিজাইন থেকে ২০২২ সালে গ্র্যাজুয়েট করেছিলেন।
প্রতিষ্ঠানটির প্রেসিডেন্ট ও সিইও সাইরাস ভ্যাটানডস্ট বলেন, ‘আমাদের এখানে পড়তেন হেল। খুবই মেধাবী ও ভাল শিক্ষার্থী ছিলেন।’
পুলিশ চিফ ড্রেক এবিসি নিউজকে জানান, তদন্তকারীদের ধারণা দ্য কনভেন্যান্ট স্কুলের উপর কোনো কারণে বিরক্ত ছিলেন হেল। এ কারণে হামলা করে থাকতে পারেন।
তিনি বলেন, ‘আমাদের হাতে কিছু কাগজপত্র এসেছে, এর মধ্যে একটি মেনিফেস্টো বলে ধারণা করা হচ্ছে। এছাড়া স্কুলের একটি ম্যাপও পাওয়া গেছে। সেখানে স্কুলে প্রবেশ ও হামলা চালানোর এরিয়া চিহ্নিত করা আছে।’
হামলার পরিকল্পনার জন্য হেল আগে নজরদারিও করেছিলেন বলে জানান ড্রেক।
হামলায় নিহতরা হলেন, ৯ বছরের এভিলিন ডিকহাউস, হ্যালি স্ক্রাগস ও উইলিয়াম কিনি এবং ৬১ বছরের সিনথিয়া পিক, ৬০ বছরের ক্যাথরিন কুন্স ও ৬১ বছরের মাইক হিল।
ন্যাশভিল মেট্রোপলিটন পুলিশের মুখপাত্র ডন অ্যারন জানান, ৯১১ এ কল পেয়ে ঘটনাস্থলে যান কর্মকর্তারা। স্কুলের দোতালায় উঠে হেলকে দেখতে পান তারা। হেল তখন দোতালা থেকে বাইরে পুলিশের গাড়ি লক্ষ্য করে গুলি করছিলেন।
পুলিশ গুলি করলে লুটিয়ে পড়েন হেল। ঘটনাস্থলেই তিনি নিহত হন।
দিন দিন এ ধরনের হামলা বেড়ে চলায় আবারও প্রাণঘাতী অস্ত্র নিষিদ্ধে আইন পাসের জন্য কংগ্রেসের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন।
গভীর শোক ও দুঃখ প্রকাশ করে তিনি বলেন, ‘এ ধরনের হামলা সমাজকে ছিন্নভিন্ন করে দিচ্ছে। এসব মোকাবেলায় জরুরি ভিত্তিতে প্রাণঘাতী অস্ত্র নিষিদ্ধের মতো পদক্ষেপ নেয়া উচিত।’
হোয়াইট হাউয ন্যাশভিলের এ হামলার ঘটনা গভীরভাবে পর্যবেক্ষণ করছে জানিয়ে প্রেস সেক্রেটারি কারিন জন পিয়ের বলেন জাস্টিস ডিপার্টমেন্ট ও স্থানীয় নেতাদের সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ রাখা হচ্ছে।