এআই-এর ভুয়া ছবি ধরবেন যেভাবে

টিবিএন ডেস্ক

মে ২৩ ২০২৩, ২০:১০

পেন্টাগনে বিস্ফোরণের ভুয়া ছবি ছড়িয়ে পরেছে। ছবি: সংগৃহীত

পেন্টাগনে বিস্ফোরণের ভুয়া ছবি ছড়িয়ে পরেছে। ছবি: সংগৃহীত

  • 0

প্রযুক্তির সুবিধা বাড়ার সঙ্গে বাড়ছে নানান বিপত্তি। মিডজার্নি, ডল-ই-টু ও স্ট্যাবল ডিফিউশনের মতো জেনারেটিভ এআই টুলের মাধ্যমে খুব সহজেই বাস্তব দৃশ্যের আদলে ছবি তৈরি করা যায়।

পেন্টাগনের কাছে একটি মারাত্মক বিস্ফোরণের এমনই একটি ভুয়া ছবি গত সোমবার ছড়িয়ে পড়ে সোশ্যাল মিডিয়ায়। ছবিটির সত্যতা যাচাই না করেই আতংকিত হয়ে পড়েন অনেকে। এমনকি বিস্ফোরণের খবর ছড়িয়ে পড়ায় শেয়ার বাজারে ধ্স নামে। 

ভুয়া ছবিটি বেশ কিছু ভ্যারিফাইড সোশ্যাল মিডিয়া অ্যাকাউন্ট থেকে শেয়ার করায় বিভ্রান্তি আরও বেড়ে যায়। কর্মকর্তারা অবশ্য ছবিটি ভুয়া হিসেবে নিশ্চিত করে জানিয়েছেন, এমন কোনো ঘটনা ঘটেনি।

অনেকে আবার এই ছবিটিকে ‘ভুয়া’ হিসেবে চিহ্নিত করতেও সক্ষম হন। অনলাইন নিউয ভ্যারিফিকেশন গ্রুপ বেলিংক্যাটের নিক ওয়াটার্সসহ বেশ কয়েকজন সোশ্যাল মিডিয়া অনুসন্ধানকারী নিমিষেই ভুয়া ছবিটির বিভিন্ন ত্রুটি তুলে ধরেন।  

নিক ওয়াটার্স এক টুইটে বলেন, ‘পেন্টাগনের মতো ব্যস্ত এলাকায় বিস্ফোরণের ঘটনায় কোনো প্রত্যক্ষদর্শী নেই তা কিছুতেই বিশ্বাসযোগ্য নয়। একটি মিথ্যা ঘটনার বাস্তবসম্মত ছবি তৈরি করা বেশ কঠিন। আর সে কারণেই ছবিটি আমার কাছে কোন বিশ্বাসযোগ্যতা পায়নি।’

তিনি বলেন, ‘ছবিটির বিল্ডিংটিই পেন্টাগন বিল্ডিং থেকে ভিন্ন দেখা যাচ্ছে। গুগল স্ট্রিট ভিউ ব্যবহার করে খুব সহজেই দুই ছবির পার্থক্য ভ্যারিফাই করা সম্ভব।’

‘আরও একটি উল্লেখযোগ্য প্রমাণ হচ্ছে, অড-লুকিং ফ্লোটিং ল্যাম্প পোস্ট ও ফুটপাথে থাকা কালো রঙের পোল। পেন্টাগনের সামনে এমন কোনো স্থাপনা নেই। এলোমেলো স্থাপনা ছাড়া লোকেশন রিক্রিয়েট করতে আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিযেন্সকে এখনও অনেক কাঠ-খড় পোড়াতে হবে।’  

এআই তৈরি বা ভুয়া ছবি চিহ্নিত করার উপায়:

  • শূন্যে কখনো খবর সৃষ্টি হয় না: বিস্ফোরণেরমতো বড় কোনো ঘটনায় প্রত্যক্ষদর্শী ও ভিন্ন দৃষ্টিকোণের মতামত থাকার কথা। এটি না থাকলে বিশ্বাসনির্ভর হয়ে সেটি ছড়িয়ে দেয়া উচিত নয়।
  • ছবি আপলোড করছে কে?: প্রকাশিত ছবির মূল অ্যাকাউন্ট ও তার লোকেশন ঘটনাস্থল ও সময়ের সঙ্গে মিল আছে কিনা তা খুঁজে দেখতে হবে। অ্যাকাউন্টধারীর ফলোয়ার কারা বা তিনি কাকে ফলো করছেন সেটিও খতিয়ে দেখা উচিত।
  • ওপেন সোর্স ইন্টেলিযেন্স টুলের ব্যবহার: এআইয়ের মাধ্যমে যেমন ছবি তৈরি করা সম্ভব, ঠিক তেমনি ছবির সত্যতা যাচাইয়েও এআই গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে। গুগল ইমেজ, টিনআইয়ের মতো রিভার্স ইমেজ সার্চ টুল ব্যবহার করে সবার প্রথমে কে বা কারা ছবিটি আপলোড করেছে তা জানা যায়। এছাড়া অনেক ফ্রি টুল ট্রাফিক সার্ভিলেন্স ক্যামেরার ফুটেজ থেকে ওই সময়ের ছবির সঙ্গে ভুয়া ছবির পার্থক্য বের করতে পারে।   
  • ছবির আশেপাশের দৃশ্য খতিয়ে দেখা: ছবির মূল অংশ ছাড়াও তার আশেপাশের দৃশ্য, স্থাপনা, ল্যান্ডমার্ক, ট্রাফিক সাইন এমনকি আবহাওয়ার অবস্থান, রং বিশ্লেষণ করে খুব সহজেই ছবির সত্যতা পাওয়া যায়।
  • হাত, চোখ, গতিবিধি: মানুষের ছবি কিংবা ভিডিওতে তাদের হাত, চোখ কিংবা গতিবিধি লক্ষ্য করলেই বোঝা যায় সেটি আসল নাকি ভুয়া। এআই সৃষ্ট ছবি বা ভিডিওতে ব্যবহৃত মানব ডামির আচরণের সঙ্গে ঘটনার মিল রয়েছে কিনা তা যাচাই করা উচিত।

0 মন্তব্য

মন্তব্য করুন