অ্যালাবামা: দ্য কটন স্টেইট

মেহরিন জাহান, টিবিএন ডেস্ক

মার্চ ২৩ ২০২৩, ১৯:৩৭

অ্যালাবামা স্টেইটের ম্যাাপ

অ্যালাবামা স্টেইটের ম্যাাপ

  • 0

অ্যালাবামাকে ইয়েলোহ্যামার স্টেইট বা কটন স্টেইটও বলা হয়। কারণ এখানকার জাতীয় পাখি ইয়েলোহ্যামার। আর এখানে এক সময় তুলার চাষ হতো সবচেয়ে বেশি।

অ্যালাবামা অ্যামেরিকার ৫০টি স্টেইটেরএকটি। দক্ষিণ-পূর্ব অ্যামেরিকায় মিসিসিপি ও জর্জিয়ার মধ্যবর্তী অংশে এর অবস্থান। 

এর উত্তরে থার্টিফিফথ প্যারালাল নর্থ ঘেঁষে টেনেসি ও দক্ষিণে আছেফ্লোরিডা। এই স্টেইটের দক্ষিণ-পশ্চিমের একটি ছোট খণ্ড মেক্সিকো উপসাগরে গিয়ে মিশেছে। 

অ্যালাবামাকে ইয়েলোহ্যামার স্টেইট বা কটন স্টেইটও বলা হয়। কারণ এখানকার জাতীয় পাখি ইয়েলোহ্যামার। আর এখানে এক সময় তুলার চাষ হতো সবচেয়ে বেশি। এখন অবশ্য চিনাবাদামেরও বিপুল আবাদ হয়। 

মজার বিষয় হলো, অ্যামেরিকার এটিই একমাত্র স্টেইট, যেখানকার অফিসিয়াল পানীয় একটি অ্যালকোহল বেভারেজ। কনেকাহ রিজ নামের পানীয়টি এক ধরনের হুইস্কি।

সংক্ষিপ্ত ইতিহাস

আদিবাসীরা হাজার বছর ধরে বর্তমান অ্যালাবামার নদীর ধারে বসবাস করত। ইউরোপিয়ানদের মধ্যে স্প্যানিশ অভিযাত্রীরাই প্রথম এ অঞ্চল পরিদর্শন করে। সেটা ১৬ শতকের মাঝামাঝি সময়ের কথা। দেড় শতাব্দী পরে, দেশটিতে ফ্রান্সের ঔপনিবেশিকরা বসতি স্থাপন করে। প্রথম ইউরোপীয় বসতিটি ছিল মোবিল শহরে। সেখানে তারা গড়ে তোলে ফোর্ট লুইস ডি লা লুইজিয়ান।

অঞ্চলটি ব্রিটেনের অংশ হয় ১৭৬৩ সালে। আর১৭৮৩ সালে এটি অ্যামেরিকার হাতে চলে যায়। এরপর ১৮১৯ সালের ১৪ ডিসেম্বর ২২তম স্টেইট হিসেবে ইউনিয়নে যুক্ত হয় অ্যালাবামা।

ভৌগলিক আয়তন

এই স্টেইটের আয়তন ১ লাখ ৩৫ হাজার ৭৬৭ বর্গকিলোমিটার। নিউ জার্সি স্টেইটের চেয়ে এটিছয়গুণ বড়, তবে টেক্সাসের প্রায় পাঁচ ভাগের এক ভাগ। অ্যালাবামার ল্যান্ডস্কেপের প্রায় ৭০ শতাংশইবনভূমি।

ল্যান্ডস্কেপ

অ্যালাবামার ল্যান্ডস্কেপকে পাঁচটি প্রধান ফিজিওগ্রাফিক অঞ্চলে ভাগ করা হয়েছে। সবগুলোই পূর্ব এবং দক্ষিণ-পূর্ব অ্যামেরিকার বিশাল ভৌগলিক অঞ্চলের সেকশন। 

১. উত্তর-পশ্চিম এবং উত্তর-মধ্য অ্যালাবামার হাইল্যান্ড রিম সেকশন হচ্ছে অ্যাপালাচিয়ান হাইল্যান্ডের দক্ষিণ অংশ।

২. কাম্বারল্যান্ড মালভূমির (অ্যালেগেনি মালভূমি) বিচ্ছিন্ন টেবিলল্যান্ড হাইল্যান্ড রিমের দক্ষিণ-পূর্ব দিকে উঠে গেছে। কাম্বারল্যান্ড মালভূমি হলো অ্যাপালাচিয়ান মালভূমির দক্ষিণ অংশ।

৩. দক্ষিণ-পূর্ব দিকঅ্যাপালাচিয়ান রিজ এবং ভ্যালির বেল্টে প্রসারিত হয়। এই অঞ্চলে মধ্যে উপত্যকা বরাবর শৈলশিরা আছে। যেমন রেড মাউন্টেন রিজ যা জোন্স উপত্যকাকে বার্মিংহামের দক্ষিণে শেডস ভ্যালি থেকে আলাদা করে।

৪. রিজ এবং উপত্যকার মধ্যমর্তী এলাকা এবং আটলান্টিক সিবোর্ডের পতন রেখা পিডমন্ট আপল্যান্ড অ্যালাবামার ল্যান্ডস্কেপকে ছাপিয়ে গেছে। এই ল্যান্ডস্কেপ হলো একটি ত্রিভুজাকৃতির এলাকা, যেখানে স্টেইটের মধ্য-পূর্ব অংশের রোলিং হিলস আছে। 

৫. এই স্টেইটের সবচেয়ে বড় ভৌগলিক অঞ্চল হলো অ্যালাবামার উপকূলীয় সমভূমি প্রদেশটি। এটি স্টেইটের প্রায় ৬০ শতাংশ অঞ্চল। এটি মূলত সমতল অঞ্চল, তবে এখানে সেখানে কিছু গোলাকার ক্ষয়প্রাপ্ত পাহাড়, কিউস্টাস এবং ফ্ল্যাটউডস আছে। এই অঞ্চলে অ্যালাবামা এবং ব্ল্যাক ওয়ারিয়র নদীর প্লাবনভূমিও আছে।

নদী

অ্যালাবামার প্রধান নদী হল কুসা; এটি এখন অ্যালাবামা নদী বলেই পরিচিত। তাল্লাপুসা ও কাহাবা নদীর উপনদী এটাতে এসে পড়ে। আবার টম্বিগবি নদীও অ্যালাবামায় এসে মিলিত হয়। সেটির নাম হয়ে যায় মোবিল নদী।

ওহাইয়ো নদীর বৃহত্তম উপনদী টেনেসিউত্তরে অ্যালাবামা অতিক্রম করেছে। চাট্টাহুচি নদী জর্জিয়ার সঙ্গে অ্যালাবামার সীমান্তের একটি অংশ গঠন করেছে। ব্ল্যাক ওয়ারিয়র নদীতে অ্যালাবামার মধ্যে অবস্থিত সবচেয়ে বড় নিষ্কাশন এলাকার পানি গিয়ে পড়ে। 

লেক

অ্যালাবামার সবচেয়ে বড় লেক হলো লেক গুন্টার্সভিল। এটি টেনেসি নদীর পাশে অবস্থিত। স্টেইটের দ্বিতীয় বড় লেক হলো হুইলার লেক। এটিও টেনেসির ধারে অবস্থিত। এটি অবশ্য মানবসৃষ্ট লেক।

অ্যালাবামা এবং জর্জিয়ার মধ্যেকার স্টেইট লাইন বরাবর চাট্টাহুচি নদীর ওপর আছে ওয়াল্টার এফ. জর্জ লেক বা লেক ইউফাউলা।

এছাড়া তাল্লাপুসা নদীর ধারে আছে লেকমার্টিন হল, টেনেসির ধারে আছে পিকউইক লেক ও ব্ল্যাক ওয়ারিয়র নদীর সিপসি ফর্কে আছে লুইসস্মিথ নামের একটি বাঁধানো লেক। 

পাহাড়

অ্যালাবামার উত্তর-পূর্ব কোণে আছে স্যান্ড মাউন্টেইন। এটি বেলেপাথরের মালভূমি। অ্যাপালাচিয়ান পর্বতমালার দক্ষিণ প্রান্তের অংশ এটি।

অ্যালাবামার সর্বোচ্চ শৃঙ্গ হচ্ছেচেহা স্টেট পার্কে অবস্থিত ৭৩৫.৫ মিটার উঁচু মাউন্ট চেহা।

জনসংখ্যা

২০১৯ সালের হিসাব অনুযায়ী অ্যালাবামার জনসংখ্যা ৪৯ লাখ। এই স্টেইটের ক্যাপিটল হলো মন্টগোমারি; আর দ্বিতীয় বৃহত্তম শহর হলো শিল্পায়িত বার্মিংহাম।

৬২ কাউন্টির এই স্টেইটের অন্য প্রধান শহরগুলো হলো বন্দর শহর মোবিল, প্রাচীনতম শহর হান্টসভিল এবং টুস্কালুজা। ১৮২৬ থেকে ১৮৪৬ সাল পর্যন্ত অ্যালাবামার ক্যাপিটল ছিল টুস্কালুজা।

জাতি ও জাতিগোষ্ঠী

অ্যালাবামার জনসংখ্যার ৬৫ শতাংশ হোয়াইট ও ২৭ শতাংশ আফ্রিকান-অ্যামেরিকান। হিস্পানিক বা ল্যাটিনো আছে ৪.৬ শতাংশ এবং এশিয়ান আছে ১.৫ শতাংশ।

বিমানবন্দর

বার্মিংহাম-শাটলসওয়ার্থ আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর (IATA কোড: BHM)

হান্টসভিল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর (IATA কোড: HSV)

মোবিল আঞ্চলিক বিমানবন্দর (IATA কোড: MOB)

মন্টগোমারি আঞ্চলিক বিমানবন্দর (IATA কোড: MGM)


0 মন্তব্য

মন্তব্য করুন