কয়েকদিনের নজরদারির পর বৃহস্পতিবার তাকে পেন্টাগনের গোপন নথি ফাঁসের অভিযোগে গ্রেফতার করে এফবিআই। শুক্রবার আদালত তাকে কারাগারে পাঠিয়েছে।
ইউক্রেন যুদ্ধ নিয়ে ইউএস ও নেইটোর পরিকল্পনার এসব গোপন নথি ফাঁস হওয়ায় সমালোচনার মুখে পড়ে বাইডেন প্রশাসন। একদিকে পেন্টাগনে এসব নথির সত্যতা যাচাইয়ে চলছিল তদন্ত, অন্যদিকে ইউএস জাস্টিস ডিপার্টমেন্টের নির্দেশে এফবিআই খুঁজছিল নথি ফাঁসকারীকে।
তদন্ত কর্মকর্তারা টাশিরাকে গ্রেফতার ও নথি ফাঁসে তার সম্পৃক্ততার তথ্য জমা দেন আদালতে।
তাতে বলা হয়, ইউএস এয়ারফোর্সের সংরক্ষিত বাহিনী এয়ার ন্যাশনাল গার্ডে ২০১৯ সালে চাকরি পান টাশিরা। তার পদের নাম হলো সাইবার ট্রান্সপোর্ট সিস্টেম জার্নিম্যান। ফার্স্ট ক্লাস এয়ারম্যানের জুনিয়র র্যাংক এটি।
ডিসকর্ড নামের একটি অনলাইন চ্যাটিং অ্যাপে গেমিং গ্রুপ চালাতেন টাশিরা। সেখানেই গোপন নথিগুলো প্রথম ফাঁস হয়। ওই চ্যাট গ্রুপের নাম ‘থাগ শেইকার সেন্ট্রাল’।
তদন্ত প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, দায়িত্বের অংশ হিসেবে গোপন নথি নিয়ে কাজ করতে হবে বলে টাশিরাকে এয়ার ন্যাশনাল গার্ডে টপ সিক্রেট/সেনসিটিভ কমপার্টমেন্টেড ইনফরমেশন বা টিএস/এসসিআই ক্লিয়ারেন্স দেয়া হয়।
আরও পড়ুন: পেন্টাগনের নথি ফাঁসের দুই অপরাধে অভিযুক্ত টাশিরা
এতে সহজেই নথিগুলো দেখার সুযোগ পেয়ে যান তিনি। অফিস বসে সেগুলোর প্রতিলিপি তৈরির চেষ্টা করেন। তবে ধরা পড়ার আশঙ্কায় সে কাজ বন্ধ করে দেন। এরপর বিভিন্ন সময় নথিগুলো বাসায় নিয়ে গিয়ে ছবি তুলে রাখতে থাকেন টাশিরা। ছবিগুলোই তিনি পরে ডিসকর্ডে নিজের গ্রুপে শেয়ার করেন।
পরবর্তীতে নথি ফাঁসের ইস্যু নিয়ে সরকারি তদন্ত শুরু হওয়ায় বেশ ঘাবড়ে যান টাশিরা। নথি ফাঁসে গোয়েন্দা কমিউনিটি কাকে সন্দেহ করছে তা জানতে গত সপ্তাহে অফিসের কম্পিউটার থেকে ক্লাসিফায়েড নেটওয়ার্কে সার্চ দেন তিনি।
এই নেটওয়ার্কে কি কি সার্চ হয় তা নজরদারিতে রাখে একটি সরকারি সংস্থা। তারা তদন্ত কর্মকর্তাদের জানায়, টাশিরার কম্পিউটার থেকে ‘লিক’ শব্দ লিখে ক্লাসিফায়েড গোয়েন্দা রিপোর্ট খোঁজা হয়েছে। এরপর থেকে শুরু হয় এফবিআইয়ের নজরদারি, গ্রেপ্তার হন ২১ বছর বয়সী এই তরুণ।
বোস্টনের ফেডারেল কোর্টে শুক্রবার টাশিরার বিরুদ্ধে জাতীয় প্রতিরক্ষাবিষয়ক তথ্য অনুমোদনহীনভাবে নিজ জিম্মায় রাখা ও ছড়িয়ে দেয়া এবং গোপনীয় নথিপত্র অবৈধভাবে সরিয়ে নিজ জিম্মায় রাখার অভিযোগ তোলা হয়। পরবর্তী শুনানি পর্যন্ত তাকে কারাগারে রাখার নির্দেশ দেন বিচারক।