এবার আয়ারল্যান্ডকে হোয়াইটওয়াশের মিশনে বাংলাদেশ
বাসস
মার্চ ৩০ ২০২৩, ১৯:৫৪
- 0
শক্তিশালী ইংল্যান্ডের পর এবার টি-টোয়েন্টিতে আয়ারল্যান্ডকে হোয়াইটওয়াশ করার লক্ষ্যে শুক্রবার জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে সিরিজের তৃতীয় ও শেষ টি-টোয়েন্টিতে নিজেদের সেরাটা উজার করে দিতে বদ্ধ পরিকর বাংলাদেশ।
দুপুর ২টায় শুরু হওয়া ম্যাচটি টি স্পোর্টস চ্যানেলে সরাসরি সম্প্রচার করা হবে।
ইতোমধ্যে টি-টোয়েন্টি সিরিজ নিজেদের করে নিয়েছে বাংলাদেশ। বৃষ্টি আইনে প্রথম ম্যাচ ২২ রানে এবং দ্বিতীয়টি ৭৭ রানে জিতে নেয় টাইগাররা। দুটি ম্যাচই বৃষ্টির কবলে পড়েছিল। বৃষ্টির বাঁধাকে উপেক্ষা না থাকলে প্রথম দুই ম্যাচেই অসাধারণ পারফরমেন্স করে বাংলাাদেশ।
পারফরমেন্সের ধারা অব্যাহত থাকলে টানা দুই সিরিজে প্রতিপক্ষকে হোয়াইটওয়াশ করার নজির গড়বে বাংলাদেশ। এর আগে তিন ম্যাচের টি-টোয়েন্টি সিরিজে বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন ইংল্যান্ডকে হোয়াইটওয়াশ করেছিল তারা। আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে দ্বিতীয় ম্যাচের জয় বাংলাদেশের জন্য এই ফরম্যাটে ছিল টানা পঞ্চম। এই ফরম্যাটে টানা ম্যাচ জয়ে এটি বাংলাদেশের জন্য সর্বোচ্চ। টানা জয়ের সংখ্যাটা বাড়িয়ে নেয়ার দারুণ সুযোগ থাকছে টাইগারদের।
তবে টানা জয় বা অন্য টার্গেটের চেয়ে এই ফরম্যাটেও ওয়ানডের মতো ব্র্যান্ড তৈরি করতে মুখিয়ে আছে বাংলাদেশ। ওয়ানডে ফরম্যাটে নিজেদের অন্যতম শক্তিতে পরিণত করেছে টাইগাররা।
এই ফরম্যাটে সেরা দল হতে নির্ভিক ক্রিকেট খেলার উপর জোর দেন বাংলাদেশের অধিনায়ক সাকিব আল হাসান। তিনি বলেন, ‘আমরা গত কয়েক ম্যাচের পারফরমেন্সের ধারাবাহিকতা ধরে রাখতে চেয়েছিলাম এবং আমরা তা ভালোভাবেই করেছি। দুর্দান্ত দল হতে চাইলে আমাদের সেভাবে খেলতে হবে এবং প্রথম বল থেকেই সেটি ফুটিয়ে তুলতে হবে। এটাই আমরা আলোচনা করেছি এবং আমরা সেভাবে খেলতে চাই।’
টি-টোয়েন্টির আগে আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে তিন ম্যাচের ওয়ানডে সিরিজ ২-০ ব্যবধানে জিতে বেশ কয়েকটি রেকর্ড ভেঙেছে বাংলাদেশ। একটি ম্যাচ বৃষ্টিতে ভেসে যায়।
সেই ধারা অব্যাহত রেখে টি-টোয়েন্টি সিরিজেও বেশ কয়েকটি রেকর্ড ভেঙেছে বাংলাদেশ। নিজেদের টি-টোয়েন্টি ইতিহাসে প্রথমবারের মতো টানা দুই ম্যাচে ২০০ রান করতে সক্ষম টাইগাররা। যদি পুরো ২০ ওভার খেলার সুযোগ পেত তবে নিজেদের সর্বোচ্চ ২১৫ রানের রেকর্ডটিও ভাঙতে পারতো বাংলাদেশ।
দ্বিতীয়টি-টোয়েন্টিতে ১৮ বলে হাফ-সেঞ্চুরি করে বাংলাদেশের পক্ষে দ্রুততম অর্ধশতকের রেকর্ড গড়েন ওপেনার লিটন দাস। ২০০৭ সালে করা মোহাম্মদ আশরাফুলের ২০ বলে দ্রুততম হাফ-সেঞ্চুরির রেকর্ড ভাঙেন লিটন। রেকর্ড গড়া ইনিংসে ৪১ বলে ৮১ রান করেন লিটন। বল হাতে ২২ রানে ৫ উইকেট নেন অধিনায়ক সাকিব। দ্বিতীয়বারের মতো সংক্ষিপ্ত ভার্সনে পাঁচ উইকেট নিয়ে আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টিতে সর্বোচ্চ শিকারী হন সাকিব।
লিটনের সঙ্গে উদ্বোধনী জুটিতে দারুণ পারফরমেন্স করছেন রনি তালুকদার। দুই ম্যাচেই আক্রমণাত্মক ইনিংস খেলেছেন তিনি। দ্বিতীয় ম্যাচে লিটনের সঙ্গে ১২৪ রানের রেকর্ড জুটি গড়েন রনি।
অন্যদিকে বাংলাদেশের বিপক্ষে এই সফরে পাঁচ ম্যাচের মধ্যে কোনটিতেই লড়াই করতে পারেনি আয়ারল্যান্ড। টি-টোয়েন্টিতে হোয়াইটওয়াশ এড়াতে হলে আবহাওয়ার সহায়তা পেতে হবে আইরিশদের। ২০১২ সালের পর আবারও বাংলাদেশের কাছে হোয়াইওয়াশের মুখে পড়েছে আয়ারল্যান্ড।
সিরিজ নিশ্চিত হওয়ায় একাদশে কিছু পরিবর্তনের আভাস দিয়েছেন সাকিব। সঙ্গে এটিও পরিস্কার করেছেন, পরিবর্তন যা-ই হোক দলের মূল লক্ষ্য প্রতিপক্ষকে হোয়াইটওয়াশ করা।
সাকিব বলেন, ‘একটি ভাল দল হলে অস্ট্রেলিয়া বা ইংল্যান্ডের মতো ২-০ ব্যবধানে এগিয়ে থাকলে তারা সবসময় ৩-০ ব্যবধানে জয়ের চেষ্টা করে। আমরাও একইভাবে চেষ্টা করব। আমাদের আত্মতুষ্টিতে ভোগার সুযোগ নেই। আমরা হয়ত কয়েকজন নতুন খেলোয়াড়কে চেষ্টা করতে পারি কিন্তু তারাও ভালো করার জন্য মুখিয়ে থাকবে।’
বাংলাদেশকে ‘খুব শক্তিশালী দল’ হিসেবে স্বীকার করেছেন আয়ারল্যান্ডের অধিনায়ক পল স্টার্লিং। তৃতীয় ম্যাচ একতরফা ম্যাচ হবে না বলে মনে করে আগামীকালের ম্যাচে প্রতিরোধ গড়ে তোলার আশা করেন তিনি।
স্টার্লিংবলেন, ‘আমাদের দল নির্বাচন নিয়ে ভাবতে হবে। শুক্রবার আমাদের অব্যবহৃত উইকেট থাকবে এবং আশা করি আমরা এক ধাপ এগিয়ে থাকব।
বাংলাদেশ দল : সাকিব আল হাসান (অধিনায়ক), লিটন দাস, রনি তালুকদার, নাজমুল হোসেন শান্ত, তাওহিদ হৃদয়, শামীম হোসেন, মেহেদি হাসান মিরাজ, নাসুম আহমেদ, মুস্তাফিজুর রহমান, হাসান মাহমুদ, তাসকিন আহমেদ, শরিফুল ইসলাম, রিশাদ হোসেন ও জাকের আলী অনিক।
আয়ারল্যান্ড দল : পল স্টার্লিং (অধিনায়ক), মার্ক অ্যাডায়ার, রস অ্যাডায়ার, কার্টিস ক্যাম্পার, গ্যারেথ ডেলানি, জর্জ ডকরেল, গ্রাহাম হুম, ম্যাথিউ হামফ্রেস, ব্যারি ম্যাকার্থি, কনর অলফার্ট, হ্যারি টেক্টর, লরকান টাকার, বেন হোয়াইট ও ক্রেইগ ইয়ং।