সাবওয়েতে গলাচেপে হত্যা: ক্ষোভে উত্তাল নিউ ইয়র্ক
টিবিএন ডেস্ক
মে ৫ ২০২৩, ২৩:০৭
- 0
সাবওয়েতে এক যাত্রীর মৃত্যুর ঘটনায় ক্ষোভে উত্তাল নিউ ইয়র্কবাসী। ঘটনার ভিডিও ইন্টারনেটে ছড়িয়ে পড়তেই নিন্দার ঝড় বয়ে যায়। অভিযোগ ওঠে, গলাচেপে হত্যা করা হয় জর্ডান নিলি নামের ‘অসহায়’ ওই যাত্রীকে।
বিভিন্ন সংবাদমাধ্যম জানিয়েছে, কৃষ্ণাঙ্গ নিলি ছিলেন গৃহহীন। তার জন্য ন্যায়বিচার, নিরাপদ সাবওয়ে ও শহরে মানসিক রোগীদের সুরক্ষার দাবিতে গত দুইদিন ধরে বিক্ষোভ করছেন নিউ ইয়র্কাররা। বিষয়টি গুরুত্ব দিয়ে না দেখার অভিযোগে তোপের মুখে পড়েছেন সিটি মেয়র এরিক অ্যাডামস।
নিলির মৃত্যুকে হত্যাকাণ্ড হিসেবে বিবেচনায় নিয়ে তদন্তে নেমেছে ম্যানহাটন ডিস্ট্রিক্ট অ্যাটর্নি অফিস। এই কার্যালয়ের সামনে শুক্রবার বিক্ষোভ হওয়ার কথা রয়েছে।
ঘটনাটি ঘটে গত সোমবার, সিটির সাবওয়ের নর্থবাউন্ড এফ ট্রেনে। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, সেদিন ট্রেনে ৩০ বছর বয়সী নিলি অন্য যাত্রীদের সঙ্গে আক্রমণাত্মক আচরণ করছিলেন। আরেক যাত্রী তার গলায় জাপটে ধরে। প্রায় ১৫ মিনিট তার গলা চেপে রাখা হয়। অন্য দুই যাত্রী তার হাত-পা চেপে ধরে। এতে নিস্তেজ হয়ে পড়েন নিলি।
তাকে হাসপাতালে নেয়া হলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।
গলা চেপে ধরা ব্যক্তি সাবেক মেরিন সেনা বলে পরে জানা যায়। তবে তার নাম প্রকাশ করা হয়নি।
পুলিশ সেদিন জিজ্ঞাসাবাদের পর তাকে ছেড়ে দেয়। তিনি জানান, হত্যার উদ্দেশ্যে নয় বরং পুলিশের কাছে হস্তান্তরের জন্য নিলিকে চেপে ধরে রেখেছিলেন। কারণ সাবওয়েতে নিলির উদ্ভট আচরণে যাত্রীরা আতঙ্কিত হয়ে পড়েছিলেন।
নিলি সাবওয়েতে কাউকে আঘাত করেননি বলে দাবি পরিবার ও আইনজীবীর লেনন এডওয়ার্ডসের।
তারা জানান, মাইকেল জ্যাকসনের মতো সেজে সাবওয়েতে নেচে-গেয়ে জীবিকা নির্বাহ করতেন নিলি। ১৪ বছর বয়সে নিজের মায়ের হত্যাকাণ্ডের পর থেকেই তিনি মানসিক রোগে আক্রান্ত।
নিউ ইয়র্কবাসীদের অনেকের মতে, সাধারণ মানুষের জঘন্য সহিংসতার বলি হয়েছেন নিলি। দ্রুতই এর বিচার হওয়া উচিত। নিলির মতো গুরুতর মানসিক রোগে আক্রান্তদের যত্ন নিতে ব্যার্থ এই শহর।
অনেকে বলছেন, জনসমাগমস্থল বিশেষ করে সাবওয়েতে নিউ ইয়র্কাররা সব সময় অনিরাপদ বোধ করে। এমন আতঙ্কের প্রতিক্রিয়া থেকেই ঘটেছে হত্যাকাণ্ডটি।
নিলি হত্যাকাণ্ডে নিউ ইয়র্ক সিটির প্রশাসনেও উত্তেজনা ছড়িয়েছে।
ঘটনার পর ডেমোক্র্যাটিক রিপ্রেজেন্টিটিভ অ্যালেক্সান্দ্রিয়া ওকাসিও- কর্টেজ টুইট করে বলেন, নিলিকে হত্যা করা হয়েছে। সিটির কম্পট্রোলার ব্র্যাড ল্যানডার জানান, নিলির ওপর হামলাকারীরা আইন হাতে তুলে নিয়েছেন। সিটি মেয়র এরিক অ্যাডামস এই দুজনের মন্তব্যকে ‘দায়িত্বহীন’ বলে আখ্যায়িত করেন।
তিনি বৃহস্পতিবার এক সাক্ষাৎকারে জানান, একটি ঘটনার অনেকগুলো স্তর থাকে। সেদিন ঠিক কী ঘটেছিল তা পুলিশ ও তদন্তকারীরা বের করবে। এর আগে বিষয়টি নিয়ে তিনি জোর দিয়ে কিছু বলতে চান না।
তদন্ত শেষ না হওয়া পর্যন্ত কারও পক্ষ নেয়া থেকে নিউ ইয়র্কবাসীদের বিরত থাকার আহ্বানও জানান তিনি।
আগামী সপ্তাহে এই ঘটনার তদন্ত গ্র্যান্ড জুরির কাছে হস্তান্তর করা হবে বলে সূত্রের বরাতে জানিয়েছে এবিসি সেভেন নিউয।