ফৌজদারি মামলায় অভিযুক্ত হলেও বিনা জামিনেই ছাড়া পেলেন রিপাবলিকান নেতা ট্রাম্প। একদিনও কাটাতে হয়নি কারাগারে।
ব্যবসায়িক জালিয়াতির ৩৪টি অভিযোগে অভিযুক্ত ট্রাম্পের বিচার শুরু হয় মঙ্গলবার। এদিন তিনি ম্যানহাটনের আদালতে আত্মসমর্পণ করেন। প্রথম শুনানিতে তাকে অভিযোগপত্র পড়ে শোনানো হয়। প্রায় দুই ঘণ্টার কার্যক্রম শেষে ট্রাম্প নিরবে আদালত ত্যাগ করেন, ফিরে যান ফ্লোরিডায়।
তাকে জামিনের জন্য কোনো আবেদন করতে হয়নি। সংশোধিত জামিন প্রক্রিয়ায় অসহিংস অপরাধে অভিযুক্ত হওয়ার কারণে বিনা জামিনেই তিনি ছাড়া পেয়েছেন। তাকে আদালতে দ্বিতীয় দফায় হাজিরা দিতে বলা হয়েছে আগামী ৪ ডিসেম্বর।
সংশোধিত জামিনে যা আছে
নিউ ইয়র্ক স্টেইট ল এর জামিন প্রক্রিয়া সংশোধিত হয় ২০১৯ সালের শেষের দিকে, যা কার্যকর হয় ২০২০ সালে ১ জানুয়ারি থেকে।
জামিনের প্রচলিত নিয়ম হলো, বিচারকাজ চলাকালে নির্দিষ্ট পরিমাণ অর্থের বিনিময়ে অভিযুক্তকে মুক্তি দেয়া হয়। অভিযুক্ত ব্যক্তির হাজিরা দিতে আসা নিশ্চিত করতে ওই অর্থ জমা রাখা হয়। বিবাদী আদালতের আদেশ মেনে চললে মামলার শেষে ওই অর্থ তাকে ফেরত দেয় আদালত।
নিউ ইয়র্কে সমালোচকরা জামিনের এই প্রক্রিয়ার বিরোধীতা করে আসছিলেন অনেকদিন ধরে। তাদের বক্তব্য হলো, কেবল ধনী বা স্বচ্ছল বিবাদীরাই সহজে জামিনের সুবিধা নিতে পারে। অন্যদের জন্য জামিনের টাকা জোগার করা কষ্টকর হয়। এ কারণে প্রচলিত জামিন প্রক্রিয়া অন্যায্য।
সমালোচনার পরিপ্রেক্ষিতে নিউ ইয়র্ক স্টেইট ল-তে জামিন প্রক্রিয়ার সংশোধন করা হয়।
২০১৯ সালে নিউ ইয়র্কের ডেমোক্র্যাটপন্থী আইনপ্রণেতারা এই সংশোধনী পাস করেন। এতে সই করেন তৎকালীন গভর্নর অ্যান্ড্রু কুয়োমো।
সংশোধনী অনুযায়ী, অসহিংস অপরাধ বা অপর্কমে অভিযুক্তরা বিনা জামিনেই মুক্তি পাবেন। কোনগুলো অসহিংস অপরাধ- এর একটি তালিকাও করা হয়েছে।
ট্রাম্পের বিরুদ্ধে আনা অভিযোগগুলো ওই তালিকায় পড়ে। এ কারণে বিনা জামিনেই তিনি ছাড়া পেয়েছেন।
জামিন সংশোধন কার্যকর হওয়ার পর ২০২০ সালে ৯০০ অভিযুক্তের জেল থেকে ছাড়া পাওয়ার সম্ভাবনা তৈরি হয়েছিল।
এর সমালোচনা করেছিলেন তৎকালীন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প। তিনি টুইট করে বলেছিলেন, ‘নিউ ইয়র্কে যা হচ্ছে তা খুবই দু:খজনক। গভর্নর ও মেয়র ৯০০ ক্রিমিনালকে মুক্ত করে দিচ্ছে। এদের মধ্যে কেউ কেউ উগ্র ও বেশ খারাপ। তাদের জন্য শহরের পরিস্থিতির অবনতি হচ্ছে। তারা এখন রাস্তা দিয়ে চলাফেরা করবে। কট্টর বামপন্থী ডেমোক্র্যাটরা আমাদের শহর শেষ করে দিচ্ছে।‘
জামিন সংশোধনী কার্যকর হওয়ার পর সে বছরের প্রথম দুই মাসে অপরাধের অভিযোগ থাকা ৪৮২ জন বিনা জামিনে ছাড়া পেয়েছিলেন।