তিনি বলেন, ‘আমি যে বার্তার উপর জোর দিতে চাই তা হলো সহিংসতা প্রত্যাখ্যান করে সত্যিকারের অন্তর্ভুক্তিমূলক, শান্তিপূর্ণ, অবাধ ও ন্যায্য গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়াকে সমর্থন করার জন্য সব পক্ষকে আহ্বান জানানো।’
আড়াই দিনের বাংলাদেশ সফর শেষে বার্তা সংস্থা ইউএনবিকে দেওয়া একান্ত সাক্ষাৎকারে তিনি এসব কথা বলেন।
উজরা জেয়া বলেন, ‘আসুন আমরা বাংলাদেশের জনগণকে সিদ্ধান্ত নিতে দেই।’
বাংলাদেশের নির্বাচন প্রসঙ্গে জেয়া স্পষ্ট করে বলেন, অ্যামেরিকার লক্ষ্য হচ্ছে বাংলাদেশের ‘অবাধ, সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ’ নির্বাচনকে সমর্থন করা।
এ ছাড়াও সম্ভাব্য তত্ত্বাবধায়ক সরকার বা বিএনপির নির্বাচন বর্জনকে বাংলাদেশের ‘অভ্যন্তরীণ বিষয়’ বলে মন্তব্য করেছেন তিনি।
অ্যামেরিকান আন্ডার সেক্রেটারি বলেন, ‘এ বিষয়ে আমরা অ্যামেরিকার কোনো ভূমিকা দেখছি না। আমি শুধু বলতে চাই যে আমরা কোনো রাজনৈতিক দলের পক্ষ নেই না।’
জেয়া জানান, অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের লক্ষ্য অর্জনে সুশীল সমাজ, মানবাধিকারকর্মী, সাংবাদিক ও শ্রমিকদের নিয়ে কাজ করা কর্মীদের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে।
এ ছাড়া মানবাধিকার লঙ্ঘনের জবাবদিহিতা ও রোহিঙ্গা শরণার্থীদের জন্য সমর্থন অব্যাহত রাখার প্রয়োজনীয়তা রয়েছে বলে জানান জেয়া।
নিষেধাজ্ঞা তুলে নেয়া
র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়নের (র্যাব) উপর ২০২১ সালের ডিসেম্বরে আরোপিত নিষেধাজ্ঞার বিষয়ে জেয়া বলেন, নিষেধাজ্ঞাটি সিদ্ধান্ত ও তথ্যের ‘সতর্ক গবেষণা ও বিবেচনার’ ফল।
তিনি বলেন, ‘প্রকৃতপক্ষে, এই নিষেধাজ্ঞা আরোপের পর থেকে আমরা বিচারবহির্ভূত হত্যা ও জোরপূর্বক গুমের ঘটনা হ্রাসের ক্ষেত্রে উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি দেখেছি।’
নিষেধাজ্ঞা তুলে নেয়ার প্রশ্নে তিনি বলেন, সংগঠনটিকে অতীত ও বর্তমানের ক্ষমতার অপব্যবহারের জবাবদিহি করতে হবে। একই সঙ্গে র্যাবের অর্থবহ সংস্কার করতে হবে।
অ্যামেরিকার শীর্ষ এ কূটনীতিক বলেন, ‘সম্ভাব্য নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারের ক্ষেত্রে এ বিষয়গুলো বিবেচনা করা হবে।’
অ্যামেরিকা-বাংলাদেশ অংশীদারত্ব প্রশ্নে তিনি বলেন, ‘আমাদের অংশীদারত্ব বিস্তৃত। এটা প্রভাবশালী। গণতন্ত্র ও মানবাধিকারের ক্ষেত্রেও বাংলাদেশের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ অংশীদারত্ব গড়ে তুলতে চায় অ্যামেরিকা।’
ভিসা বিধি-নিষেধ নীতি সম্পর্কে তিনি বলেন, ‘অবাধ, সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ নির্বাচনের বিষয়ে প্রধানমন্ত্রীর ঘোষিত অঙ্গীকারকে সমর্থন করতেই সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। আমাদের আলোচনায় এটি খুব ইতিবাচকভাবে এসেছে।’
নির্বাচনে পর্যবেক্ষক পাঠানোর বিষয়ে এক প্রশ্নের জবাবে জেয়া বলেন, তারা বিষয়টি খতিয়ে দেখছেন।
এটি নিয়ে আলোচনা হয়েছে উল্লেখ করে তিনি জানান, তারা নির্বাচন পর্যবেক্ষকদের স্বাগত জানাতে বাংলাদেশ সরকারের উদারতা সম্পর্কে সচেতন।
বাংলাদেশের অপার সম্ভাবনা, অগ্রগতি ও সমৃদ্ধিতে সহায়তা এবং অংশীদারত্ব কে আরও গভীর করার প্রত্যাশা নিয়ে তিনি শুক্রবার ভোরে ঢাকা ছেড়েছেন।