পৃথিবীর অদ্ভুত যত ফুল
নাহিদ আল-কাদরী, টিবিএন ডেস্ক
জুন ২৫ ২০২৩, ১৮:০৭
- 0
ফুলের সৌন্দর্য থাকবে এটিই স্বাভাবিক। প্রাচীনকাল থেকে ফুলকে ভালোবাসার অন্যতম নিদর্শন হিসেবে ধরা হয়। তবে পৃথিবীতে এমন অদ্ভুত কিছু ফুল রয়েছে যা কল্পকাহিনীকেও হার মানায়।
মাংকি ফেস অর্কিড
বানরের মুখের মতো হওয়ায় এ ফুলের নাম মাংকি ফেস অর্কিড। ড্রাকুলা সিমিয়া বিরল এই ফুলের বৈজ্ঞানিক নাম। এটি শুধু পেরু এবং দক্ষিণ-পূর্ব ইকুয়েডরের ক্লাউড ফরেস্টে দেখতে পাওয়া যায়। সারা বছর ধরে ফুটতে থাকে এই অর্কিড, যার গন্ধ পাকা কমলালেবুর মতো।
নেইকেড ম্যান অর্কিড
নেইকেড ম্যান অর্কিড ‘হ্যাংগিং ম্যান অর্কিড’ নামেও পরিচিত। এর উৎপত্তিস্থল মেডিটেরিয়ান সি অঞ্চলে। ফুলটি দেখে মনে হবে ছোট ছোট কতগুলো বালক নগ্ন হয়ে ঝুলছে আর হাসছে। সাধারণত, হালকা বেগুনি সাদা থেকে গভীর বেগুনি-গোলাপি রঙের হয়ে থাকে ফুলটি। এর বৈজ্ঞানিক নাম অর্কিস ইটালিকা।
এই ফুল বিপন্ন প্রজাতির তালিকায় অন্তর্ভুক্ত। ডায়রিয়াসহ গ্যাস ও যৌন চিকিৎসায় এ ফুল ঔষধি হিসেবে কাজ করে। পানীয় তৈরিতেও ব্যবহৃত হয় নেইকেড ম্যান, যেটি ‘টার্কিশ ডিলাইট’ নামে পরিচিত।
ব্যাট প্ল্যান্ট
ব্যাট প্ল্যান্ট বিশ্বের সবচেয়ে বিচিত্র ফুলের মধ্যে অন্যতম। অদ্ভুত ছোট কালো রঙয়ের ফুলগুলো ২০ থেকে ৪০ প্রজাতির হয়ে থাকে। বাদুড়ের মুখের মতো দেখতে এ ফুলের বৈজ্ঞানিক নাম টাকা ইন্টিগ্রাফ্লিয়া। ব্যাট প্ল্যান্ট ৬০ থেকে ৯০ সেন্টিমিটার পর্যন্ত লম্বা হয়ে থাকে। এর দুটি সংস্করণ রয়েছে; একটি কালো এবং অপরটি সাদা।
হুকারস লিপস
হুকারস লিপস-এর বৈজ্ঞানিক নাম সাইকোট্রিয়া এলাটা। এ ফুলকে হট লিপস, ফ্লাওয়ার লিপস নামেও ডাকা হয়। এর উজ্জ্বল লাল ঠোঁটের মতো বিটগুলো ব্র্যাক্ট, পাপড়ি নয়। এর ভেতরের ছোট হলুদ কিংবা সাদা ফুল বের হওয়ার আগে কয়েক দিনের জন্য তা চুম্বনযোগ্য ঠোঁটের মতো হয়ে থাকে। কলম্বিয়া, কোস্টারিকা এবং পানামার গ্রীষ্মমণ্ডলীয় অঞ্চলে এ ফুল খুঁজে পাওয়া যায়।
ড্যান্সিং গার্লস
ছোট্ট সুন্দর এই ফুলগুলো দুষ্প্রাপ্য। সবচেয়ে দৃঢ়প্রতিজ্ঞ উদ্ভিদ সংগ্রহকারীর জন্যও এটি খুঁজে পাওয়া বেশ কঠিন। নৃত্যরত নারীর সঙ্গে মিল থাকায় এর ডাকনাম ড্যান্সিং গার্ল। এগুলোর দেখা মেলে ইস্ট আফ্রিকায়। সাধারণত সাদা এবং হালকা গোলাপি রঙের হয়ে থাকে এ ফুল; যার বৈজ্ঞানিক নাম ইমপ্যাটিন্স বেকুয়ার্টি।
স্ন্যাপ ড্রাগন সিড পড
এই ফুল দেখতে অনেকটা ড্রাগনের মাথার খুলির মতো। দেখে মনে হবে কেউ মুখ খুলছে আবার বন্ধ করছে। এর বৈজ্ঞানিক নাম এন্টিরহিনাম মাজুস।
অনেক উদ্যানতত্ত্ববিদ উজ্জ্বল রঙ এবং সুগন্ধের জন্য স্ন্যাপড্রাগনকে পছন্দ করে থাকেন। প্রাচীনকালে মানুষের বিশ্বাস ছিল, স্ন্যাপড্রাগন রহস্যময় ক্ষমতার অধিকারী। এটি বাগানে থাকলে দূরে থাকবে অভিশাপ আর মন্দভাগ্য।
টাইগার ফেস ইন মুন অর্কিড
ইন্দোনেশিয়ার তিনটি জাতীয় ফুলের মধ্যে একটি টাইগার ফেস ইন মুন অর্কিড। এর স্ট্রাইপগুলো দেখতে হুবহু বাঘের মতো। অনেকে আচমকা দেখে ভয়ও পেতে পারেন।
ফুলটির বৈজ্ঞানিক নাম ফ্যালেনোপসিস অ্যামাবিলিস।
প্যাশন ফ্লাওয়ার
প্যাশন ফ্লাওয়ারের ৪০০টিরও বেশি প্রজাতি রয়েছে। ভারত ও জাপানে এটি ক্লক ফ্লাওয়ার নামে পরিচিত। বৈজ্ঞানিক নাম প্যাসিফ্লোরা ইনকারনাটা।
স্প্যানিশ ধর্মপ্রচারকরা যিশুর ক্রুশবিদ্ধ হওয়া গল্পের সঙ্গে মিল রেখে এর নাম রাখেন ‘দ্য প্যাশন।’ বাণিজ্যিকভাবে পারফিউম তৈরিতে এর মোহনীয় সুগন্ধি ব্যবহৃত হয়। পাশাপাশি সুস্বাদু ফল হিসেবে বিভিন্ন রন্ধনসম্পর্কীয় খাবারের স্বাদে ব্যবহৃত হয়। শুঁয়োপোকা ও প্রজাপতির খাদ্যের অন্যতম উৎস এই প্যাশন ফ্লাওয়ার।
ভার্জিন মেরি ইন মুন অর্কিড
এই উপকূলীয়-প্রেমময় অর্কিডটি সাদা রঙয়ের হয়ে থাকে। এর গায়ে সূর্যের আলো পড়লে হিমে ঢেকে যায়। দেখে মথ অর্কিড বলে মনে হলেও খুব কাছ থেকে পর্যবেক্ষণ করলে বোঝা যাবে, মেরির একটি ছোট্ট প্রতিকৃতি এর ভেতরে স্থাপন করা। ফুলটির বৈজ্ঞানিক নাম ফ্যালেনোপসিস অ্যামাবিলিস।