ক্লাইমেট জাস্টিস এগিয়ে নিতে জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদে ঐতিহাসিক প্রস্তাব গ্রহণ

টিবিএন ডেস্ক

মার্চ ৩০ ২০২৩, ১৭:১৬

জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদে ক্লাইমেট জাস্টিস সংক্রান্ত ঐতিহাসিক প্রস্তাব গৃহীত হওয়ার পর প্রস্তাবটি উত্থাপনকারী কোর গ্রুপের প্রতিনিধিরা। ছবি: সংগৃহীত

জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদে ক্লাইমেট জাস্টিস সংক্রান্ত ঐতিহাসিক প্রস্তাব গৃহীত হওয়ার পর প্রস্তাবটি উত্থাপনকারী কোর গ্রুপের প্রতিনিধিরা। ছবি: সংগৃহীত

  • 0

জলবায়ু পরিবর্তনের নেতিবাচক প্রভাবের জন্য দায়ী দেশগুলোর আইনগত বাধ্যবাধকতার বিষয়ে পরামর্শমূলক মতামত দেয়ার জন্য ইন্টারন্যাশনাল কোর্ট অব জাস্টিসকে অনুরোধ করে জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদে সর্বসম্মত প্রস্তাব গৃহীত হয়েছে।

বাংলাদেশসহ ১৭ সদস্যের কোর গ্রুপের তোলা প্রস্তাবটি জলবায়ু জাস্টিস এবং সমতার পক্ষে সমর্থন জানানো দেশগুলোর জন্য একটি যুগান্তকারী অর্জন। জাতিসংঘে বাংলাদেশ স্থায়ী মিশন বুধবার এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানায়। 

কোর গ্রুপের পক্ষে প্রস্তাবটি সাধারণ পরিষদে উত্থাপন করে ভানুয়াতুর প্রধানমন্ত্রী।বর্তমান ও ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে জলবায়ু পরিবর্তনের নেতিবাচক প্রভাব থেকে রক্ষার জন্য এই প্রস্তাবে মানবাধিকার আইনসহ বিদ্যমান আন্তর্জাতিক সব আইন ও নীতিমালার ভিত্তিতে দায়ী দেশগুলোর আইনি বাধ্যবাধকতার উপর পরামর্শমূলক মতামত দিতে ইন্টারন্যাশনাল কোর্ট অব জাস্টিসকে অনুরোধ করা হয়। 

কার্বন নিঃসরণের ফলে জলবায়ু পরিবর্তনের বিরূপ প্রভাবে বিশেষভাবে ঝুঁকিপূর্ণ বা ক্ষতিগ্রস্ত দেশগুলোকে সুরক্ষার জন্য সংশ্লিষ্ট আইনি পরিণতি সম্পর্কে পরামর্শ দিতেও অনুরোধ করা হয়েছে। 

প্রস্তাবটি আনুষ্ঠানিকভাবে গ্রহণের জন্য আয়োজিত সাধারণ পরিষদের অধিবেশনে বাংলাদেশ প্রতিনিধি দলের নেতৃত্ব দেন পররাষ্ট্র সচিব মাসুদ বিন মোমেন। 

তিনি বলেন, ‘জলবায়ু পরিবর্তনের ধ্বংসাত্মক ও অপরিবর্তনীয় হুমকির বিষয়ে স্পষ্ট সতর্কতার পরেও মানবতার বেঁচে থাকার জন্য যে মাত্রায় বৈশ্বিক উদ্যোগ প্রয়োজন, তার ধারেকাছেও নেই বিশ্ব সম্প্রদায়। এই প্রস্তাব এবংএর ফলে ইন্টারন্যাশনাল কোর্ট অব জাস্টিসের দেয়া পরামর্শমূলক মতামত ভবিষ্যতে জলবায়ু পরিবর্তনের ক্ষেত্রে দায়ী দেশগুলোর আইনি বাধ্যবাধকতা, ক্ষতিগ্রস্ত দেশের অধিকার এবং জলবায়ু পরিবর্তনথেকে মানব জাতিকে রক্ষা করতে সচেতনতা বাড়াতে কার্যকর ভূমিকা পালন করবে।’

ইন্টারন্যাশনাল কোর্ট অব জাস্টিসের পরামর্শমূলক মতামতের গুরুত্ব উল্লেখ করে জাতিসংঘ মহাসচিব অ্যান্টোনিও গুটারেস বলেন, এ ধরনের পরামর্শমূলক মতামত জাতিসংঘ সদস্য দেশগুলোকে জলবায়ু পরিবর্তনের নেতিবাচক প্রভাব মোকাবেলায় আরও সাহসী এবংশক্তিশালী ব্যবস্থা নিতে সহায়তা করবে।

ভানুয়াতুর আহ্বানে প্রতিষ্ঠিত কোর গ্রুপটি খসড়া প্রণয়ন থেকে প্রস্তাবটি চূড়ান্তভাবে গ্রহণ পর্যন্ত পুরো প্রক্রিয়ায় অত্যন্ত সক্রিয় ছিল। খসড়া প্রস্তাবের ওপর জাতিসংঘের সব সদস্য দেশের অংশগ্রহণে উন্মুক্ত ও স্বচ্ছ পদ্ধতিতে একাধিক অনানুষ্ঠানিক সভা হয়েছে। কোর গ্রুপের সদস্য হিসেবে বাংলাদেশ খসড়া প্রণয়ন ও নেগোশিয়েশন প্রক্রিয়ার পাশাপাশি আউটরিচ প্রচেষ্টায় সক্রিয়ভাবে যুক্ত ছিল।

প্রস্তাব গৃহীত হওয়ার প্রতিক্রিয়ায় জাতিসংঘে বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি রাষ্ট্রদূত মোহাম্মদ আব্দুল মুহিত বলেন, ‘এটি ক্লাইমেট জাস্টিসের জন্য একটি কালজয়ী মুহূর্ত। আমরা পুরো প্রক্রিয়ায় সদস্য দেশগুলোর অসীম আগ্রহ ও সম্পৃক্ততার জন্য কৃতজ্ঞ, যা জলবায়ু সংকট মোকাবেলায় তাদের গভীর অঙ্গীকারের সাক্ষ্য দেয়।‘ 

প্রস্তাবটি গৃহীত হওয়ার পর সন্ধ্যায় ভানুয়াতু আয়োজিত সংবর্ধনায় পররাষ্ট্র সচিব মাসুদ বিন মোমেন অংশ নেন।


0 মন্তব্য

মন্তব্য করুন