সাধারণত নরম ও আরামদায়ক স্থানে বিড়ালকে এমন আচরণ করতে দেখা যায়। কোনো কম্বল বা ব্যক্তির কোলে আয়েশে চড়ে বসলে তো কথাই নেই, কুণ্ডুলি পাকানোর এই ভঙ্গি সে করবেই।
বিড়ালের এমন আচরণের কিন্তু সুনির্দিষ্ট কারণ রয়েছে।
অস্ট্রেলিয়ার অ্যাডিলেড ইউনিভার্সিটির অ্যানিমেল বিহেভিয়ার, ওয়ালফেয়ার অ্যান্ড এথিকসের অধ্যাপক সুসান হ্যাযেল বলছেন, বিড়ালের এমন আচরণের সম্ভাব্য কিছু ব্যাখ্যা রয়েছে। যেমন, বিড়ালছানা যখন মায়ের দুধ খায় তখন মায়ের নিপলে দুধের প্রবাহকে উদ্দীপিত করার জন্য এমন আচরণ করে থাকে। এর ফলে এক ধরনের হরমোন উৎপাদন হয় এবং দুধের প্রবাহ নিশ্চিত হয়।
বাচ্চা বয়সের এই আচরণটি পরবর্তী সময়েও বিড়ালের মধ্যে টিকে থাকে। প্রাপ্তবয়স্ক বিড়ালের মাঝে এমন আচরণ দিয়ে বিড়ালের কিছু মানসিক অবস্থাকে ব্যাখ্যা করা সম্ভব।
১. স্বাচ্ছন্দ্যবোধ: বিড়াল যখন কোনো কিছুতে স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করে তখন তাদেরকে এমন আচরণ করতে দেখা যায়। বিশেষ করে যখন এমন কারও উপস্থিতি, যার সঙ্গে এটি নিরাপদ বোধ করে অথবা আয়েশ করার জন্য তুলতুলে কুশন বা কম্বল পেলে বিড়ালের এমন আচরণ লক্ষ্য করা যায়।
২. নিজের জায়গা দখলে রাখতে: বিড়ালের মধ্যে অধিকারবোধের মতো কিছু আচরণ লক্ষ্য করা যায়। নিজের স্থান দাবি করতে জায়গাটি এরা দলিত-মথিত করে। একই বাসায় একাধিক বিড়াল থাকলে এমন আচরণ বেশি লক্ষ্য করা যায়। অনেক সময় দেখা যায় এরা একটি খেলনা বা বস্তু থাবার মধ্যে আঁকড়ে ধরে রাখছে।
৩. বিছানা তৈরি: বিড়ালও মানুষের মতো পরিষ্কার ও আরামদায়ক বিছানা পছন্দ করে। তাই যখনি কোনো আরামদায়ক, নরম ও তুলতুলে জায়গা দেখে তখন ঘুমের জন্য সেখানে কুণ্ডুলি পাকাতে শুরু করে।
৪. গরম লাগা প্রকাশ: বিড়ালকে নিয়মিত স্প্রে ও গোসল করাতে হয়। এটি করা না হলে এদের গা উত্তপ্ত হয়ে ওঠে। এমন অবস্থা বোঝাতে এরা সামানের দুই পা দিয়ে কুণ্ডুলি পাকানোর মতো আচরণ করতে পারে।
৫. পেশীর স্ট্রেচিং: মানুষের যেমন শরীরকে টানটান রাখতে মাঝেমধ্যে স্ট্রেচিংয়ের দরকার পড়ে, বিড়ালেরও ঠিক তেমনটি দরকার হয়। বিড়াল এমান ভঙ্গিতে তাদের পেশীকে প্রসারিত করে।
৬. ভালোবাসা প্রকাশ: সুখী বিড়াল মনে আনন্দ প্রকাশ বা ভালোবাসা জানাতে কোলের উপর এসে এমন কুণ্ডুলি পাকানোর ভঙ্গী করতে পারে। তৃপ্তি প্রকাশের জন্য এরা এমন আচরণ করে থাকে।