টেনেসি হাউযে বন্দুক সহিংসতার প্রতিবাদ করা ডেমোক্রেটদের বহিষ্কার

টিবিএন ডেস্ক

এপ্রিল ৭ ২০২৩, ১৯:০১

টেনেসির রিপ্রেজেন্টেটিভ জাস্টিন পিয়ারসন (বামে) , গ্লোরিয়া জনসন (মধ্যে) এবং জাস্টিন জোন্স

টেনেসির রিপ্রেজেন্টেটিভ জাস্টিন পিয়ারসন (বামে) , গ্লোরিয়া জনসন (মধ্যে) এবং জাস্টিন জোন্স

  • 0

রিপাবলিকান নিয়ন্ত্রিত টেনেসি স্টেইট হাউয অফ রিপ্রেজেন্টেটিভস থেকে ডেমোক্র্যাট পার্টির দুজন কৃষ্ণাঙ্গ আইনপ্রণেতাকে বহিষ্কার করা হয়েছে। তাদের বন্দুক সহিংসতার প্রতিবাদের কারণে গেল সপ্তাহে হাউযের কার্যক্রমে ব্যাঘাত ঘটেছে জানিয়ে এই সিদ্ধান্ত নিয়েছেন আইনপ্রণেতারা।

টেনেসি হাউযে এরকম ঘটনা নজিরবিহীন।

বহিষ্কার হওয়া ডেমোক্র্যাটরা হলেন স্টেইট রিপ্রেজেন্টেটিভ জাস্টিন জোন্স এবং জাস্টিন জে. পিয়ারসন। বন্দুক সহিংসতার প্রতিবাদের জেরে ডেমোক্র্যাটিক রিপ্রেজেন্টেটিভ গ্লোরিয়া জনসনকেও বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছিল। তবে ভোটাভুটিতে তিনি শেষ পর্যন্ত টিকে যান।

রিপাবলিকান সংখ্যাগরিষ্ঠের হাউযে বৃহস্পতিবার ৭২-২৫ ভোটে জোন্স এবং ৬৯-২৬ ভোটে পিয়ারসনকে বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত আসে। 

এ সময় হাউযে চলে উত্তপ্ত বাক্য বিনিময় ও হাউযের বাইরে চলে ডেমোক্র্যাট সমর্থকদের বিক্ষোভ।

ঘটনার সূত্রপাত টেনেসির ন্যাশভিলের বন্দুক হামলার জের ধরে।

ন্যাশভিলের একটি স্কুলে গত ২৭ মার্চ বন্দুক হামলায় ৩ শিশুসহ ৬ জন নিহত হন। 

এর ৩ দিন পর স্টেইট হাউযের বাইরে বন্দুক নিয়ন্ত্রণ আইনের দাবিতে বিক্ষোভ করেন কয়েকশ মানুষ।

সে সময় হাউযের ভেতরেও বন্দুক সহিংসতা বন্ধের দাবিতে মুখর হন ডেমোক্র্যাট জোন্স, পিয়ারসন ও জনসন। তারা ‘নো অ্যাকশন, নো পিস’, ‘এনাফ ইজ এনাফ, ‘পাওয়ার টু দ্য পিপল’ বলে শ্লোগান তুলতে থাকেন।

এসব হট্টগোলের কারণে হাউযের কার্যক্রম প্রায় এক ঘণ্টার জন্য স্থবির হয়ে পড়ে। 

এর জের ধরে বৃহস্পতিবার হাউযে উত্তপ্ত পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়। ৭৫ রিপাবলিকান ও ২৩ ডেমোক্র্যাটের হাউযে ওই তিন ডেমোক্র্যাটদের বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত নিতে এক ঘণ্টা ধরে তর্কাতর্কি হয়। এরপর ভোটাভুটির ফলে হাউয ছাড়তে হয় জোন্স ও পিয়ারসনকে।

ভোটাভুটির আগে জোন্স বলেন, ’আমরা আপনাদের আগ্নেয়াস্ত্র বন্ধের উদ্যোগ নিতে আহ্বান জানিয়েছি। আর আপনারা জবাবে গণতন্ত্রকে অপমান করলেন।’ 

তিনি আরও বলেন, ‘ব্যক্তি আমাকে এখানে বহিষ্কার করাটা কোনো বিষয় না, কিন্তু আপনারা আসলে জনগণের হাউয থেকে জনগণের আওয়াজ কেড়ে নেয়ার চেষ্টা করেছেন। এই প্রচেষ্টা কখনই সফল হবে না।‘

এসময় মার্টিন লুথার কিং জুনিয়রের উক্তি ‘বিবেক নিয়মের ঊর্ধ্বে’ টেনে এনে পিয়ারসন বলেন, ‘হাজারও মানুষ আমাদেরকে বন্দুক সহিংসতা বন্ধে কিছু করতে বলেছেন। আমাদের দেশ তো প্রতিবাদের উপরই প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। ৪ জুলাই উদযাপন করে আবার আপনারা বলছেন প্রতিবাদ করা অন্যায়।’

ভোটে অংশ নেয়া রিপ্রেজেন্টিটিভদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, ‘আপনাদের এই প্রতিক্রিয়া, মিথ্যা শক্তির ব্যবহার নতুন প্রজন্মের চোখ খুলে দিয়েছে। তারা খুব শিগগিরি দেখিয়ে দেবে যে আপনাদের সময় ফুরিয়ে এসেছে।‘

এদিকে জনসনকে কীভাবে ভোটে বেঁচে গেলেন তা জানতে চাওয়া হলে তিনি বলেন, হয়ত শ্বেতাংঙ্গ হওয়ার কারণে তার বিপক্ষে ভোট কম পড়েছে। জোন্স ও পিয়ারসনের উপর অন্যায় সিদ্ধান্ত চাপিয়ে দেয়া হয়েছে বলেও মনে করেন তিনি। 

এ ঘটনার তীব্র নিন্দা জানিয়েছেন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন।

গভীর উদ্বেক প্রকাশ করে এক বিবৃতিতে তিনি বলেছেন, ‘আইনপ্রণেতাদের অপসরণের এমন পদক্ষেপ অগণতান্ত্রিক এবং নজিরবিহীন… রিপাবলিকানরা এমন আইনপ্রণেতাদের শাস্তি দিচ্ছেন যারা ন্যাশভিল হামলায় নিহতদের পরিবারের সঙ্গে সংহতি প্রকাশ করেছেন, যারা সাধারণ জনগণের নিরাপত্তার দাবিতে তাদের পাশে দাঁড়িয়েছেন।‘


0 মন্তব্য

মন্তব্য করুন