শিশু-কিশোরও ভুগছে কিডনি পাথরের জটিলতায়
টিবিএন ডেস্ক
জুলাই ১২ ২০২৩, ২৩:৪১
- 0
কিডনির ভেতরে ছোট, শক্ত পাথরের মতো পদার্থ তৈরি হয় যাকে কিডনির পাথর বলা হয়। কিডনির পাথর নেফ্রোলিথিয়াসিস নামেও পরিচিত।
অ্যামেরিকায় ৩০ বছর আগেও একে মধ্যবয়সী শ্বেতাঙ্গদের একটি রোগ হিসেবে বিবেচনা করা হতো। তবে এখন কিডনিতে পাথর হওয়ার কোনো নির্দিষ্ট বয়স বা শ্রেণি লক্ষ্য করা যাচ্ছে না।
ইদানিং শিশু ও কিশোর-কিশোরীরাও এই জটিলতায় ভুগছে।
গবেষকরা নিশ্চিত নন, কেন শিশু-কিশোরদের কিডনিতে পাথর হচ্ছে। তবে তারা এর জন্য মাত্রাতিরিক্ত প্রক্রিয়াজাত খাবার খাওয়া, শিশু অবস্থায় অতিরিক্ত অ্যান্টিবায়োটিক ওষুধের ব্যবহার ও পর্যাপ্ত পানি পান না করার মতো কিছু কারণ অনুমান করেছেন। ডিহাইড্রেশনের কারণে বেশিরভাগেরই কিডনিতে পাথর হয়।
চিকিৎসকরা বলেছেন, ঋতুভেদেও কিডনিতে পাথর হওয়ার সংখ্যা বৃদ্ধি পায়। তারা লক্ষ্য করেছেন, অন্য ঋতুর তুলনায় গ্রীষ্মকালে বাচ্চাদের কিডনিতে পাথর হওয়ার মাত্রা বেড়ে যায়। এর প্রধান কারণ হতে পারে ডিহাইড্রেশন। গরম ও পর্যাপ্ত পানি পান না করার কারণে পাথর তৈরির সম্ভাবনা বেশি দেখা যায়।
এছাড়া প্রস্রাবে ক্যালসিয়াম ও ইউরিক অ্যাসিডের পরিমাণ বেড়ে গেলে বা সাইট্রেট, জিংক ও ম্যাগনেশিয়ামের পরিমাণ কমে গেলে কিডনিতে পাথর হওয়ার সম্ভাবনা বেড়ে যায়।
প্রাপ্তবয়স্কদের ক্ষেত্রে মেটাবলিক সিনড্রম, স্থূলতা, হাইপারটেনশন ও ডায়াবেটিসে আক্রান্তদের কিডনিতে পাথর হওয়ার সম্ভাবনা বেশি। তবে শিশুদের ক্ষেত্রে এসব নেই বলে জানিয়েছেন ফিলাডেলফিয়ার চিলড্রেন হাসপাতালের প্যাড্রিয়াটিক ইউরোলজিস্ট গ্রেগরি তাসিয়ান।
তিনি বলেন, যেসব শিশুদের কিডনিতে পাথর হয়েছে তারা সুস্থ স্বাভাবিকই ছিল।
ন্যাশনাল কিডনি ফাউন্ডেশন অনুযায়ী, অ্যামেরিকায় প্রায় ১০ শতাংশ মানুষের জীবনের কোনো না কোনো সময়ে কিডনিতে পাথর হতে পারে। এমনকি পাঁচ বছরের শিশুদের কিডনিতেও পাথর হতে পারে।
ডাক্তার তাসিয়ানের নেতৃত্বে এক গবেষণায় দেখা গেছে, ২০১৬ সাল থেকে সাউথ ক্যারোলাইনায় প্রায় ১৫৩ হাজার প্রাপ্তবয়স্ক ও শিশুদের নেফ্রোলিথিয়াসির জন্য জরুরি অস্ত্রোপচার করা হয়েছে।
অ্যামেরিকান সোসাইটি অফ নেফ্রোলজির ক্লিনিকাল জার্নালে প্রকাশিত এক গবেষণায় দেখা গেছে ১৯৯৭ সাল থেকে ২০১২ সাল পর্যন্ত কিডনিতে পাথর হওয়ার হার ১৬ শতাংশ বেড়েছে। এদের মধ্যে ১৫ থেকে ১৯ বছর বয়সীদের মধ্যে কিডনিতে পাথর হয়েছে ৫২ শতাংশের। ২৫ বছর বয়সী পুরুষের মধ্যেও কিডনিতে পাথর হওয়া স্বাভাবিক বিষয় হয়ে উঠেছে। তবে গবেষণায় দেখা গেছে, শ্বেতাঙ্গের চেয়ে কৃষ্ণাঙ্গরা বেশি ঝুঁকিতে রয়েছেন।
মিনেসোটা অলমস্টেড কাউন্টিতে দেখা গেছে ১৯৮৪ সাল থেকে ২০০৮ পর্যন্ত শিশুদের মধ্যে কিডনিতে পাথর হওয়ার হার ছয় শতাংশ বেড়েছে।
কিডনিতে পাথর হলে কিছু লক্ষণ দেখা দেয়। যেমন: পিঠ ও তলপেটে ব্যথা। প্রস্রাবের সঙ্গে রক্ত আসা, দুর্গন্ধযুক্ত প্রস্রাব কিংবা অল্পতে বিরক্তি আসা।
শিশুদের মধ্য বিরক্তি বেশি দেখা যায়। তবে কিছু কিছু শিশু কোনো লক্ষণ অনুভব করতে পারে না।