‘ঈশ্বরের বিরুদ্ধে যুদ্ধ’ করায় ইরানে ৩ জনের ফাঁসি

টিবিএন ডেস্ক

মে ১৯ ২০২৩, ২২:১৪

সাজা প্রাপ্ত তিন ইরানি (বাঁ থেকে) সালেহ মিরহাশেমি, মাজিদ কাযেমি ও সাইদ ইয়াঘউবি। ছবি: সংগৃহীত

সাজা প্রাপ্ত তিন ইরানি (বাঁ থেকে) সালেহ মিরহাশেমি, মাজিদ কাযেমি ও সাইদ ইয়াঘউবি। ছবি: সংগৃহীত

  • 0

ইরানে হিজাববিরোধী বিক্ষোভ চলাকালে নিরাপত্তা বাহিনীর তিন সদস্যকে গুলি করে হত্যার দায়ে সাজাপ্রাপ্ত তিন আসামির মৃত্যুদণ্ড কার্যকর হয়েছে।

দেশটির বিচারবিভাগের নিউয ওয়েবসাইট মিযান অনলাইন বলেছে, মাজিদ কাযেমি, সালেহ মিরহাশেমি ও সাইদ ইয়াঘউবি নামের ওই তিন আসামিকে শুক্রবার ফাঁসিতে ঝুলিয়ে মৃত্যুদণ্ড দেয়া হয়েছে। তাদের বিরুদ্ধে ‘ইশ্বরের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করার’ অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় মৃত্যুদণ্ড দেয়া হয়েছে।

মানবাধিকার সংস্থা অ্যামেনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল এই মৃত্যুদণ্ডের নিন্দা জানিয়ে দাবি করেছে যে, চাপ প্রয়োগ ও নির্যাতন করে ওই তিন আসামির কাছ থেকে স্বীকারোক্তি আদায় করা হয়।

এক বিবৃতিতে সংস্থার মধ্যপ্রাচ্য ও উত্তর আফ্রিকার ডেপুটি ডিরেক্টর ডায়ানা এল্টাহওয়ে বলেন, ‘মাজিদ কাযেমি কারাগারে থাকা অবস্থায় একটি অডিও রেকর্ডিং পাঠিয়েছিলেন। তাতে বলেছিলেন, তাকে চাপ দিয়ে হত্যার দায় স্বীকার করিয়ে নেয়া হয়েছে। জিজ্ঞাসাবাদের সময় তাকে মারধর করা হয়েছে, ইলেক্ট্রিক শক দেয়া হয়েছে, এমনকি ধর্ষণের হুমকিও দেয়া হয়েছে। স্বীকারোক্তি না দিলে তার ভাইকে হত্যা করা হবে, মাকে হেনস্তা করা হবে বলেও হুমকি দেয়া হয়েছে।’

তবে মিযান অনলাইনে বলা হয়েছে, ‘মামলার সুস্পষ্ট প্রমাণ, নথি এবং আসামিদের দেয়া সুস্পষ্ট স্বীকারোক্তিই প্রমাণ করেছে যে তাদের চালানো গুলিতেই নিরাপত্তা বাহিনীর তিন সদস্য শহীদ হয়েছেন।’

ইসলামিক প্রজাতন্ত্রের কঠোর হিজাব আইন লঙ্ঘন করার অভিযোগে গত বছরের সেপ্টেম্বরে ২২ বছর বয়সি মাহশা আমিনি নামে এক কুর্দি নারীকে গ্রেপ্তার করে দেশটির নৈতিকতা পুলিশ। হেফাজতে তার মৃত্যুর পর হিজাব আইন বাতিলের দাবিতে দেশজুড়ে প্রবল বিক্ষোভ শুরু হয়।

দেশটির ইসফাহান প্রদেশের ইসফাহান শহরে গত ১৬ নভেম্বর এমনই এক বিক্ষোভ চলাকালে গুলিতে নিহত হন নিরাপত্তা বাহিনীর তিন সদস্য। এ ঘটনায় গ্রেপ্তার করা হয় মাজিদ কাযেমি, সালেহ মিরহাশেমি ও সাইদ ইয়াঘউবিকে। তাদেরকে গত জানুয়ারিতে দোষি সাব্যস্ত করে মৃত্যুদণ্ডের রায় দেয় দেশটির বিচারবিভাগ।

দেশজুড়ে ছড়িয়ে পড়া ওই বিক্ষোভে হাজারও ইরানিয়ানকে গ্রেপ্তার করা হয়। প্রাণ হারান নিরাপত্তা বাহিনীর কয়েক সদস্যসহ কয়েশ মানুষ। এখন পর্যন্ত হিজাববিরোধী বিক্ষোভ সংশ্লিষ্ট সাত জনকে ফাঁসি দিয়েছে ইরান।

মৃত্যুদণ্ডের সাজার বিষয়ে অস্ট্রেলিয়াসহ বিভিন্ন দেশ উদ্বেগ জানিয়েছে।

অস্ট্রেলিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী পেনি ওং শুক্রবার বলেন, ‘এটি ইরানের সাধারণ নাগরিকের উপর শাসনকর্তাদের বর্বরতার উদাহরণ।'


0 মন্তব্য

মন্তব্য করুন