টস হেরে প্রথমে ব্যাট করে মোহাম্মদ নাবির হাফ-সেঞ্চুরিতে ২০ ওভারে ৭ উইকেটে ১৫৪ রান করে আফগানিস্তান। ৪০ বলে অপরাজিত ৫৪ রান করেন নাবি। জবাবে শুরুতে চাপে পড়লেও পঞ্চম উইকেটে তৌহিদ হৃদয় ও শামিম হোসেনের ৪৩ বলে ৭৩ রানের জুটিতে জয়ের পথ সহজ করে বাংলাদেশ। এক পর্যায়ে শেষ ৫ বলে ২ রান দরকার পড়ে টাইগারদের। কিন্তু শেষ ওভারের হ্যাটট্রিক করে উত্তেজনা তৈরি করেন আফগানিস্তানের পেইসার কারিম জানাত। শেষ পর্যন্ত ১ বল বাকি থাকতে জয়ের স্বাদ নেয় বাংলাদেশ। এই জয়ে সিরিজে ১-০ ব্যবধানে এগিয়ে গেল সাকিবের দল।

সিলেট আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামে টস জিতে প্রথমে বোলিংয়ের সিদ্ধান্ত নেন বাংলাদেশ অধিনায়ক সাকিব আল হাসান। তৃতীয় ওভারে নাসুম আহমেদের বলে আউট হন ৮ রান করা হজরতুল্লাহ জাজাই।

পরের ওভারে তাসকিন আহমেদের বলে আউট হন ১৬ রান করা রহমানুল্লাহ গুরবাজ।

পঞ্চম ওভারে আক্রমণে এসে উইকেট তুলে নেন পেইসার শরিফুল ইসলাম। তিন নম্বরে নামা ইব্রাহিম জাদরানকে ৮ রানে থামান তিনি। পাওয়ার প্লেতে ৩ উইকেটে ৪০ রান তুলতে পারে আফগানিস্তান।

অষ্টম ওভারে প্রথমবারের মত আক্রমণে এসে আফগানিস্তানের উপর চাপ বাড়ান সাকিব। চার নম্বরে নামা করিম জানাতকে ৩ রানে থামিয়ে দেন বিশ্বসেরা অলরাউন্ডার।

পঞ্চম উইকেটে নাজিবুল্লাহ জাদরানকে পরিস্থিতি সামাল দেয়ার চেষ্টা করেন নাবি। ২৩ রান করা নাজিবুল্লাহ জাদরানকে আউট করে জুটি ভাঙ্গেন মেহেদী মিরাজ। ছক্কায় ১৮ বলে ৩৩ রান করেন তিনি।

২০তম ওভারে হাফ-সেঞ্চুরি পূর্ণ করেন নাবি। ওই ওভারের পঞ্চম বলে নাজমুল হোসেন শান্তর দারুণ ক্যাচে ৩ রানে আউট হন আফগান অধিনায়ক রাশিদ খান। শেষ পর্যন্ত ২০ ওভারে ৭ উইকেটে ১৫৪ রান করে আফগানিস্তান। ৬টি চার ও ১টি ছক্কায় ৪০ বলে অপরাজিত ৫৪ রান করেন নাবি। বাংলাদেশের হয়ে সাকিব ২৭ রানে ২টি, নাসুম-তাসকিন-শরিফুল-মুস্তাফিজ ও মিরাজ ১টি করে উইকেট নেন।

১৫৫ রানের টার্গেটে প্রথম ওভারে উইকেট হারায় বাংলাদেশ। আফগানিস্তান পেইসার ফজলহক ফারুকির বলে বোল্ড হন ওপেনার রনি তালুকদার। দ্বিতীয় উইকেটে নাজমুল হোসেন শান্তকে নিয়ে রানের চাকা সচল রাখেন ওপেনার লিটন দাস। ৫ ওভার শেষে ৩০ রান পেয়ে যায় বাংলাদেশ।

পাওয়ার প্লের শেষ ওভারে লিটন-শান্তর জুটি ভাঙ্গেন আফগান স্পিনার মুজিব-উর-রেহমান। মুজিবের বলে আউট হওয়ার আগে ১৪ রান করেন শান্ত।

পরের ওভারে আজমাতুল্লাহ ওমরজাইর বলে ১৮ রান করে আউট হন লিটন। ৩৯ রানে ৩ উইকেট হারিয়ে চাপে পড়ে বাংলাদেশ।

এ অবস্থায় জুটি বাঁধেন অধিনায়ক সাকিব ও তৌহিদ হৃদয়। জুটির শুরুতে বৃষ্টিতে কিছুক্ষণ খেলা বন্ধ থাকে। খেলার শুরুর পর ব্যাট হাতে চড়াও হবার চেষ্টা করেন সাকিব। ১১তম ওভারে পেইসার ফরিদ আহমেদের প্রথম বলে বিদায় নেন ১৯ রান করা টাইগার অধিনায়ক।

নতুন ব্যাটার শামিম হোসেনকে নিয়ে পাল্টা আক্রমণ করেন হৃদয়। ওমরজাইর করা ১৩তম ওভারে ২১ রান তুলে নেন হৃদয়-শামিম। ফারুকির করা ১৭তম ওভারে ১৬ রান তুলে টাইগারদের জয়ের পথে নিয়ে আসেন হৃদয় ও শামিম। শেষ ৩ ওভারে জয়ের জন্য বাংলাদেশের দরকার ছিল ১৯ রান।

১৮তম ওভারে শামিমকে শিকার করে আফগানিস্তানকে ব্রেক-থ্রু এনে দেন রশিদ। ৪টি চারে ২৫ বলে ৩৩ রান করেন শামিম। জুটিতে ৪৩ বলে ৭৩ রান যোগ করেন হৃদয় ও শামিম।

শেষ ওভারে ৬ রানের প্রয়োজনে প্রথম বলে চার হাঁকান মিরাজ। জয়ের সমীকরণ ২ রানে নেমে আসে। পরের তিন বলে মিরাজ-তাসকিন ও নাসুমকে শিকার করে হ্যাটট্রিক করেন জানাত। টি-টোয়েন্টি ৫০তম হ্যাট্টিক এটি।

পঞ্চম ডেলিভারিতে চার মেরে বাংলাদেশকে জয় পাইয়ে দেন শরিফুল। ৩২ বলে ৪৭* রান করেন ম্যাচ সেরা হওয়া হৃদয়। আফগানিস্তানের জানাত ১৫ রানে ৩ উইকেট নেন।

একই ভেন্যুতে ১৬ জুুলাই সিরিজের দ্বিতীয় ও শেষ ম্যাচ খেলবে দুই দল।