
কাতারে ঘাঁটিতে হামলা ‘প্রতীকী’

টিবিএন ডেস্ক
প্রকাশিত: জুন ২৩ ২০২৫, ১৯:৪৭

কাতারের রাজধানী দোহায় সোমবার ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিহত করার দৃশ্য। ছবি: রয়টার্স
- 0
সেলুমের মতে, ইরান ও অ্যামেরিকার মধ্যে সংঘাতের মাত্রা বৃদ্ধি দুইভাবে হতে পারে।
কাতারের দোহায় অ্যামেরিকার আল উদেইদ ঘাঁটিতে সোমবার ইরানের হামলাকে প্রতীকী হিসেবে দেখছেন দোহাভিত্তিক একজন বিশেষজ্ঞ।
দোহা ইনস্টিটিউটের ক্রিটিক্যাল সিকিউরিটি স্টাডিজের সহকারী অধ্যাপক মুহানাদ সেলুম বলেন, হামলার তাৎপর্য ইরান ও অ্যামেরিকার সংঘাত বৃদ্ধির মধ্যে নিহিত। এবারই প্রথম ইরাকের বাইরে অ্যামেরিকার কোনো ঘাঁটিতে হামলা করল ইরান।
তেহরানের হামলার বিষয়ে তিনি বলেন, ‘তারা অতীতে এমনটা করেছে ইরাকে এবং ওই দেশ সম্ভবত ২০০৩ সাল থেকে অ্যামেরিকা ও ইরানের মধ্যকার রণক্ষেত্রে পরিণত হয়েছে।’
এ বিশেষজ্ঞ জোর দিয়ে বলেন, এসব হামলা স্বাভাবিক হয়ে গেছে।
সেলুম বলেন, ‘কাতারের মতো তৃতীয় একটি দেশে হামলার মধ্য দিয়ে এখন এটি ইরানের বাইরে চলে যাচ্ছে।’ তিনি স্মরণ করিয়ে দেন, এরই মধ্যে খালি করে ফেলা আল উদেইদ বিমান ঘাঁটিতে শুধু অ্যামেরিকান সেনা নয়; কাতারি সেনাও রয়েছে।
এ বিশেষজ্ঞ বলেন, ‘আমার প্রাথমিক মূল্যায়ন হলো হামলার বিষয়ে অ্যামেরিকা এবং সম্ভবত কাতারকে আগেই জানিয়েছে ইরান। এটি দৃশ্যত প্রতীকী হামলা।’
সেলুমের মতে, ইরান ও অ্যামেরিকার মধ্যে সংঘাতের মাত্রা বৃদ্ধি দুইভাবে হতে পারে। প্রথমত, ইরান তাদের মুখরক্ষার কথা বলে আলোচনার তাগিদ দিতে পারে। দ্বিতীয়ত, সংঘাত অন্য দিকে মোড় নিয়ে মারাত্মক পরিণতির দিকে যেতে পারে। কারণ নিজেদের সেনাদের লক্ষ্য করে চালানো হামলার জবাব নিশ্চিতভাবেই দেবে অ্যামেরিকা।
ইরানের তিন পারমাণবিক স্থাপনায় রবিবার শুরুর সময়ে অ্যামেরিকা বোমা হামলা চালায়। এর বদলা নেওয়ার হুমকি দেয় তেহরান। অন্যদিকে অ্যামেরিকার ওপর হামলা না করতে তেহরানকে হুঁশিয়ার করে দেয় ওয়াশিংটন।
ইরানে হামলার পর অ্যামেরিকার প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্প বলেছেন, তেহরান কোনো ধরনের বদলা নিতে চাইলে রবিবারের হামলার চেয়ে আরও বড় পরিসরে ইরানের ওপর হামলা হবে। জয়েন্ট চিফস অব স্টাফ চেয়ারম্যান জেনারেল ড্যান কেইন রবিবার জানান, ইরাক ও সিরিয়াসহ মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোতে সেনাদের নিরাপত্তা বাড়িয়েছে অ্যামেরিকার সামরিক বাহিনী।
মধ্যপ্রাচ্যে প্রায় ৪০ হাজার সেনা রয়েছে অ্যামেরিকার। বাহিনীর সদস্যদের কেউ কেউ আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা, যুদ্ধবিমান ও রণতরি পরিচালনা করে, যেগুলো শত্রুপক্ষের ক্ষেপণাস্ত্র শনাক্ত ও ভূপাতিত করতে পারে, তবে হামলা বিবেচনায় তাদের অবস্থান ঝুঁকিপূর্ণ।
রয়টার্স গত সপ্তাহে এক প্রতিবেদনে জানায়, মধ্যপ্রাচ্যের ঘাঁটিগুলো থেকে কিছু বিমান ও জাহাজ সরিয়ে নেয় পেন্টাগন। ইরানের যেকোনো হামলার ক্ষেত্রে এগুলো সম্ভবত ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থানে ছিল।
সরিয়ে নেওয়া সরঞ্জামগুলোর মধ্যে ছিল কাতারের রাজধানী দোহার বাইরে মরুভূমিতে স্থাপিত আল উদেইদ ঘাঁটির বিমান। আল উদেইদ মধ্যপ্রাচ্যে অ্যামেরিকার সবচেয়ে বড় ঘাঁটি, যেখানে প্রায় ১০ হাজার অ্যামেরিকান সেনা রয়েছে।