রাজধানীর উত্তরার মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজে সোমবার বিমান বিধ্বস্তের ঘটনায় আহত সবাইকে বিনা মূল্যে চিকিৎসা দেবে সরকার।
স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় সোমবার রাত সাড়ে ১১টার দিকে এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানিয়েছে।
মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র তথ্য অফিসার মোহাম্মদ শাহাদাত হোসেন স্বাক্ষরিত বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ‘সরকার আজ রাজধানীর উত্তরায় মাইলস্টোন স্কুল ক্যাম্পাসে প্রশিক্ষণ বিমান বিধ্বস্তের মর্মান্তিক দুর্ঘটনায় আহত সকল রোগীর চিকিৎসা প্রদান করবে। এমতাবস্থায় সকল বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি রোগীদের চিকিৎসা সম্পূর্ণ বিনা মূল্যে প্রদান করার জন্য নির্দেশনা দেওয়া হচ্ছে।
‘যেকোনো ধরনের অপারগতায় রোগীকে জাতীয় বার্ন ইনস্টিটিউট অথবা ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করার জন্য পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে। মাননীয় উপদেষ্টা, স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের নির্দেশে এই নির্দেশনা প্রদান করা হলো।’
মাইলস্টোনে বিমান বাহিনীর প্রশিক্ষণ বিমান বিধ্বস্তের ঘটনায় ঘটনায় ২০ জন নিহত ও ১৭১ জন আহত হওয়ার খবর জানায় আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তর-আইএসপিআর।
বিমানটির পাইলট ফ্লাইট লেফটেন্যান্ট মো. তৌকির ইসলাম বিমান বিধ্বস্তের ঘটনায় নিহত হন বলে আইএসপিআরের বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়।
এতে বলা হয়, ‘বাংলাদেশ বিমান বাহিনীর একটি এফটি-৭ বিজিআই যুদ্ধবিমান নিয়মিত প্রশিক্ষণের অংশ হিসেবে আজ সোমবার (২১-৭-২০২৫) স্থানীয় সময় বেলা একটা ৬ মিনিটে ঢাকার কুর্মিটোলাস্থ বাংলাদেশ বিমান বাহিনী ঘাঁটি এ কে খন্দকার থেকে উড্ডয়নের পর যান্ত্রিক ত্রুটির সম্মুখীন হয় (যার বিস্তারিত তদন্ত সাপেক্ষে জানানো হবে)। দুর্ঘটনা মোকাবিলায় এবং বড় ধরনের ক্ষয়ক্ষতি এড়াতে উক্ত বিমানের বৈমানিক ফ্লাইট লেফটেন্যান্ট মো. তৌকির ইসলাম বিমানটিকে ঘনবসতি এলাকা থেকে জনবিরল এলাকায় নিয়ে যাবার সর্বাত্মক চেষ্টা করেছিলেন।
‘দুর্ভাগ্যবশত বিমানটি ঢাকার দিয়াবাড়িতে মাইলস্টোন স্কুল এবং কলেজ এর দোতালা একটি ভবনে অনাকাঙ্ক্ষিত দুর্ঘটনায় বিধ্বস্ত হয়েছে।’
বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, ‘এই আকস্মিক দুর্ঘটনায় বৈমানিকসহ ১৯ জন নিহত এবং ১৬৪ জন আহত হয়েছেন। আহত সকলকে বিমান বাহিনীর হেলিকপ্টারসহ অ্যাম্বুলেন্সের সহায়তায় সম্মিলিত সামরিক হাসপাতাল (সিএমএইচ) এবং নিকটস্থ হাসপাতালে প্রয়োজনীয় চিকিৎসার জন্য দ্রুত স্থানান্তর করা হচ্ছে।
‘উক্ত অনাকাঙ্ক্ষিত দুর্ঘটনায় বাংলাদেশ বিমান বাহিনী গভীরভাবে মর্মাহত এবং হতাহতদের সর্বাত্মক চিকিৎসাসহ সার্বিক সহযোগিতায় তৎপর রয়েছে। বিমান বাহিনী প্রধান সরকারি সফরে দেশের বাইরে থাকায় সহকারী বিমান বাহিনী প্রধান (প্রশাসন), বিমান বাহিনীর ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাবৃন্দ ও উদ্ধারকারী দল দুর্ঘটনাস্থলে উপস্থিত রয়েছেন।’
এতে উল্লেখ করা হয়, ‘সেনাবাহিনী প্রধান, প্রিন্সিপাল স্টাফ অফিসার, সশস্ত্র বাহিনী বিভাগসহ সামরিক বাহিনীর এবং ঊর্ধ্বতন সরকারি কর্মকর্তাগণ উপস্থিত ছিলেন। সেনাবাহিনী, বিমান বাহিনী, পুলিশ, র্যাব এবং ফায়ার সার্ভিস দুর্ঘটনাস্থলে উদ্ধার তৎপরতা চালিয়ে যাচ্ছে এবং পরিস্থিতি উত্তরণের সর্বাত্মক চেষ্টা করছে।
‘দুর্ঘটনার কারণ উদঘাটনের জন্য ইতোমধ্যে বিমান বাহিনীর একটি উচ্চ পর্যায়ের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে।’