টাশিরার পরবর্তী শুনানি দিন ধার্য্য করা হয়েছে ১৯ এপ্রিল।
ম্যাসাচুসেটসের ডাইটনে নিজ বাড়ি থেকে বৃহস্পতিবার তাকে গ্রেফতার করা হয় বলে জানান অ্যাটর্নি জেনারেল মেরিক গারল্যান্ড।
ম্যাসাচুসেটসের এয়ার ন্যাশনাল গার্ডের ইন্টেলিজেন্স উইংয়ের আইটি স্পেশালিস্ট হিসেবে কাজ করেন ২১ বছরের টাশিরা।
পরিবারের অনেকে সামরিক বাহিনীর সঙ্গে যুক্ত ছিলেন বলে ছোটবেলা থেকেই এই পেশার প্রতি টান ছিল তার। বছর চারেক আগে এয়ার ন্যাশনাল গার্ডে চাকরির সুযোগ পেয়ে তাই হাতছাড়া করেননি।
বিবিসিকে এসব তথ্য জানিয়েছেন টাশিরার কিছু বন্ধু। তাদের দাবি, টাশিরা হুইসেলব্লোয়ার নন।
বিবিসির প্রতিবেদন বলছে, ইউএস এয়ারফোর্সের সংরক্ষিত বাহিনী হলো এয়ার ন্যাশনাল গার্ড। সেখানে ২০১৯ সালে চাকরি পান টাশিরা। তার পদের নাম হলো সাইবার ট্রান্সপোর্ট সিস্টেম জার্নিম্যান। ফার্স্ট ক্লাস এয়ারম্যানের জুনিয়র র্যাংক এটি।
এয়ার ফোর্সের অফিসিয়াল ওয়েবসাইটের তথ্য অনুযায়ী, এই পদে দায়িত্বপ্রাপ্তদের বিমানবাহিনীর গ্লোবাল কমিউনিকেশন নেটওয়ার্ক পরিচালনা করতে হয়।
কাজের পাশাপাশি ডিসকর্ড নামের একটি অনলাইন চ্যাটিং অ্যাপে গেমিং গ্রুপ চালাতেন টাশিরা। সেখানেই গোপন নথিগুলো প্রথম ফাঁস হয়। ওই চ্যাট গ্রুপের নাম ‘থাগ শেইকার সেন্ট্রাল’।
ওয়াশিংটন পোস্ট জানিয়েছে, দুই ডজন সদস্য আছে ওই গ্রুপে। তাদের মধ্যে ইউক্রেন যুদ্ধ ও আগ্নেয়াস্ত্র নিয়ে বেশ আলাপচারিতা চলত।
গ্রুপের এক সদস্য জানান, টাশিরার আগ্নেয়াস্ত্র নিয়ে বেশ আগ্রহ আছে। অন্যদের মনোযোগ আকর্ষণ করতে চাইতেন সবসময়।
কয়েক মাস আগে পেন্টাগনের গোপন নথির কিছু তথ্য গ্রুপে শেয়ার করেন টাশিরা। তাতে কারও কোনো আগ্রহ বা সাড়া না পাওয়ায় নথির ছবিই পোস্ট করে দেন টাশিরা।
এক পর্যায়ে গত মার্চে গ্রুপ মেম্বাররা নথির ছবিগুলো ডিসকর্ডের অন্যান্য চ্যাটগ্রুপে দিতে শুরু করে, যা পরে ছড়িয়ে যায় টেলিগ্রাম চ্যানেলে।
টাশিরার গ্রুপের আরেক সদস্য বলেন, ‘তিনি (টাশিরা) ক্রিশ্চিয়ান, যুদ্ধবিরোধী ব্যক্তি। তিনি কেবল আমাদেরকে জানাতে চেয়েছিলেন যে ইউক্রেন যুদ্ধে কি কি হচ্ছে। কারণ আমাদের নেটওয়ার্কে ইউক্রেনের কিছু তরুণ যুক্ত আছে। আমরা ফাইটিং গেইম খেলতে, যুদ্ধের গেইমে খেলতে পছন্দ করি।‘
রাষ্ট্রবিরোধী কোনো কিছু করার মোটিভ টাশিরার ছিল না বলে দাবি করেছেন গ্রুপ সদস্যরা।
টাশিরার কাছে রাষ্ট্রীয় গোপন নথি কীভাবে গেল, কাজের অংশ হিসেবে নথিগুলো তার দেখার প্রয়োজন ছিল না- এসব খতিয়ে দেখছে এফবিআই।
নথি ফাঁসের অভিযোগ আদালতে প্রমাণিত হলে সর্বোচ্চ ১৫ বছরের কারাদণ্ড হতে পারে এই তরুণের।
পেন্টাগনের প্রেস সেক্রেটারি এয়ার ফোর্স বিগ্রেডিয়ার জেনারের প্যাট রাইডার। তবে তিনি বলেন, ‘পেন্টাগনের গোপন এবং সংবেদনশীল তথ্যের গোপনীয়তা রক্ষায় কঠোর নীতিমালা রয়েছে। সংশ্লিষ্ট সবাইকে তা মেনে চলার বিষয়ে একটি চুক্তিতে সই করতে হয়। নথি ফাঁসের এই ঘটনা একটি ইচ্ছাকৃত ফৌজদারি অপরাধ।‘
এক অ্যামেরিকান কর্মকর্তা গত ৭ মে ‘টপ সিক্রেট’ চিহ্নিত এসব নথি ফাঁস হওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করেন। ইউক্রেন সেনাবাহিনীর যুদ্ধ কৌশলের বিবরণ রয়েছে এসব নথিতে।