বিজ্ঞানের সবচেয়ে পুরোনো মিথগুলোর মধ্যে একটি হলো মাছ নীরব। মাছকে সবচেয়ে শান্ত প্রাণী হিসেবে পৃথিবীজুড়ে বিবেচনা করা হয়।
তবে গবেষণায় দেখা গেছে, সঙ্গীর মন কাড়তে চটুলতায় মাছ মোটেই পিছিয়ে নেই। পাখির মতো মাছও প্রতিদিন ভোর ও সন্ধ্যায় সূর্যোদয় ও সূর্যাস্তের সময় গান করে। সেই গানের নির্দিষ্ট কারণও রয়েছে।
সমুদ্রতলে মাঝেমধ্যেই গিটারের সুরের শব্দ শোনা যায়। বিজ্ঞানীরা আবিষ্কার করেছেন এই সুর আসলে প্লেইনশিফ মিডশিপম্যান নামে মাছের প্রেম কাতরতা প্রকাশের রীতি। সঙ্গীকে আকৃষ্ট করতে এই সুর বেছে নেয় মোছটি।
নিউরোবায়োলজিস্ট এন্ড্রু বাস দীর্ঘদিন ধরে মাছের গান নিয়ে অধ্যয়ন করেছেন। তিনি বলেন, মাছের গান শুনতে অনেকটা মৌমাছির গুনগুন বা সন্ন্যাসীদের মন্ত্র জপের মতো।
সাধারণভাবে সঙ্গীকে আকৃষ্ট করতে গান গায় মাছ। তবে মাছের গান গাওয়ার পেছনে আরও কারণ রয়েছে। মানুষের মধ্যে যেমন ঝগড়া-বিবাদ ও মনোমালিন্য হয়ে থাকে, মাছেরাও ঠিক তেমনি বিবাদে জড়ায়। আমাদের যেমন ঘোরাঘুরির নির্দিষ্ট অঞ্চল রয়েছে, মাছের অঞ্চলও নির্দিষ্ট। সেই অঞ্চল নিয়ে মাঝেমধ্যে বিবাদও হয়। আর আঞ্চলিক বিরোধ মেটাতে একে অপরকে ডাকার জন্য গান গেয়ে থাকে মাছ।
খাবারের সন্ধানের সময়ও মাছ গান গেয়ে থাকে।
ক্যালিফোর্নিয়ার সাউসালিটতে হাউজবোটের মালিকরা তো রীতিমতো অভিযোগ করেছেন যে, মাছের গুঞ্জনে তাদের ঘুমে ব্যাঘাত ঘটছে।
গ্রীষ্ককালে মাছ ভালো শুনতে পায়। তাই সাধারণত ওই সময়েই মাছের গান বেশি শুনতে পাওয়া যায়।
বিজ্ঞানীরা গবেষণা করে এখন পর্যন্ত ৮০০-এর বেশি প্রজাতির মাছ পেয়েছেন, যারা বিভিন্ন ধরনের আওয়াজ করতে সক্ষম।
ওয়েস্টার্ন অস্ট্রেলিয়ার কার্টিন ইউনিভার্সিটির রবার্ট ম্যাককলি বলেন, ‘আমি ৩০ বছর ধরে মাছের স্কোয়াক, বার্বল ও পপস শুনছি। এদের বৈচিত্র্য আমাকে বিস্মিত করে।’