
হাসিনাকন্যা পুতুলকে অনির্দিষ্টকালের ছুটিতে পাঠাল বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা

টিবিএন ডেস্ক
প্রকাশিত: জুলাই ১২ ২০২৫, ৫:৪০ হালনাগাদ: ডিসেম্বর ৪ ২০২৫, ১১:৪৪
.jpg)
সায়মা ওয়াজেদ। ছবি: দ্য ফিনান্সিয়াল একপ্রেস
- 0
দায়িত্ব নেওয়ার আগেই সায়মার নিয়োগ নিয়ে নানা প্রশ্ন ওঠে। অভিযোগ আছে, এসইএআরওর আঞ্চলিক পরিচালক পদে সায়মার নিয়োগ পাওয়ার জন্য তার মা হাসিনা নিজের প্রভাব খাটিয়েছেন।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডব্লিউএইচও) দক্ষিণ-পূর্ব এশীয় আঞ্চলিক কার্যালয়ের (এসইএআরও) বিতর্কিত পরিচালক সায়মা ওয়াজেদকে অনির্দিষ্টকালের জন্য ছুটিতে পাঠানো হয়েছে।
হেলদি পলিটিক্যাল ওয়াচের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, শুক্রবার থেকে অনির্দিষ্টকালের জন্য ছুটিতে যাচ্ছেন হাসিনা কন্যা।
বাংলাদেশের দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) তার বিরুদ্ধে জালিয়াতি, এবং ক্ষমতার অপব্যবহারের অভিযোগে দুটি মামলা দায়ের করার চার মাস পর তার বিরুদ্ধে এ সিদ্ধান্ত নেয়া হল।
ডব্লিউএইচও এর মহাপরিচালক ডঃ টেড্রোস আধানম ঘেব্রেয়েসাস একটি সংক্ষিপ্ত অভ্যন্তরীণ ই-মেইলের মাধ্যমে সংস্থাটির কর্মীদের জানিয়েছেন, সায়মা ওয়াজেদ শুক্রবার থেকে ছুটিতে থাকবেন।
ই-মেইল এ আরও বলা হয়, ডব্লিউএইচও এর সহকারী মহাপরিচালক ডঃ ক্যাথারিনা বোহেম ওয়াজেদের স্থলাভিষিক্ত হবেন। বোহেম আগামী মঙ্গলবার নয়াদিল্লিতে এসইএআরও অফিসে পৌঁছাবেন বলে নিশ্চিত করেন টেড্রোস।
ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার মেয়ে সায়মা ওয়াজেদ। জনরোষের মুখে গত বছরের ৫ আগস্ট দেশ ছেড়ে প্রতিবেশী ভারতে চলে যান হাসিনা।
সায়মা ২০২৪ সালের জানুয়ারিতে ডব্লিউএইচওর দক্ষিণ-পূর্ব এশীয় আঞ্চলিক কার্যালয়ের (এসইএআরও) পরিচালক হিসবে দায়িত্ব গ্রহণ করেন। দায়িত্ব নেওয়ার আগেই সায়মার নিয়োগ নিয়ে নানা প্রশ্ন ওঠে। অভিযোগ আছে, এসইএআরওর আঞ্চলিক পরিচালক পদে সায়মার নিয়োগ পাওয়ার জন্য তার মা হাসিনা নিজের প্রভাব খাটিয়েছেন।
এর পর থেকেই সায়মাকে ঘিরে বিতর্ক শুরু হয়। এর পরিপ্রেক্ষিতে দুদক চলতি বছরের জানুয়ারিতে তদন্ত শুরু করে। এ খবর হেলথ পলিসি ওয়াচ আগেই জানিয়েছিল।
দুদকের দায়ের করা মামলায় বলা হয়েছে, সায়মা ওয়াজেদ আঞ্চলিক পরিচালক হওয়ার প্রচার চালানোর সময় নিজের শিক্ষাগত যোগ্যতা নিয়ে মিথ্যা তথ্য দিয়েছেন। এটি বাংলাদেশ দণ্ডবিধির ৪৬৮ ধারা (প্রতারণার উদ্দেশ্যে জালিয়াতি) ও ৪৭১ ধারার (জাল দলিল ব্যবহার) লঙ্ঘন।
দুদকের অভিযোগে আরও বলা হয়, সায়মা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে (বিএসএমএমইউ) একটি অনারারি পদে রয়েছেন বলে দাবি করেন, যা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ অস্বীকার করেছে। সায়মা এ দাবি ডব্লিউএইচওতে নিজের অবস্থান মজবুত করতে ব্যবহার করেন বলে অভিযোগে জানান দুদকের উপপরিচালক আখতারুল ইসলাম।
সায়মার বিরুদ্ধে আরও অভিযোগ, সূচনা ফাউন্ডেশনের প্রধান হিসেবে তিনি নিজের ক্ষমতা ও প্রভাব খাটিয়ে বিভিন্ন ব্যাংক থেকে প্রতিষ্ঠানটির জন্য প্রায় ২ দশমিক ৮ মিলিয়ন (প্রায় ২৮ লাখ) ডলার সংগ্রহ করেছেন। তবে এ অর্থ কীভাবে খরচ হয়েছে, সে বিষয়ে মামলায় বিস্তারিত তথ্য দেয়া হয়নি।
এসব ঘটনায় সায়মার বিরুদ্ধে ১৯৪৭ সালের দুর্নীতি প্রতিরোধ আইনের ৫(২) ধারা এবং দণ্ডবিধির ৪২০ ধারায় (প্রতারণা ও অসৎভাবে অর্থ বা সম্পত্তি হস্তান্তর) জালিয়াতি ও ক্ষমতার অপব্যবহার করার অভিযোগ আনা হয়েছে।
এসব অভিযোগ ওঠার পর থেকে সায়মা ওয়াজেদ ডব্লিউএইচওর দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া অঞ্চলের দেশগুলোয় নির্বিঘ্নে ভ্রমণ করতে পারছেন না। এ ছাড়া দেশে তার বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারির আদেশ দিয়েছেন আদালত।