সাবওয়েতে হত্যাকাণ্ড: অভিযুক্ত সাবেক মেরিনের আত্মসমর্পণ

টিবিএন ডেস্ক

মে ১২ ২০২৩, ১৯:০৩

নিলি হত্যায় অভিযুক্ত ড্যানিয়েল পেনির আত্মসমর্পণ। ছবি: এবিসি সেভেনের ভিডিও থেকে নেয়া

নিলি হত্যায় অভিযুক্ত ড্যানিয়েল পেনির আত্মসমর্পণ। ছবি: এবিসি সেভেনের ভিডিও থেকে নেয়া

  • 0

নিউ ইয়র্কের সাবওয়েতে জর্ডান নিলিকে হত্যায় অভিযুক্ত সাবেক মেরিন সদস্য ড্যানিয়েল পেনি পুলিশের কাছে আত্মসমর্পণ করেছেন। তার বিরুদ্ধে সেকেন্ড ডিগ্রি মার্ডারের অভিযোগে মামলা হবে বলে বৃহস্পতিবার জানিয়েছে ম্যানহাটন ডিস্ট্রিক্ট অ্যাটর্নির অফিস।

এবিসি সেভেন নিউয খবরটি নিশ্চিত করেছে।

ঘটনার ভিডিও ও প্রত্যক্ষদর্শীদের সঙ্গে কথা বলে এক সপ্তাহ ধরে বিষয়টি খতিয়ে দেখেছে ম্যানহাটন ডিস্ট্রিক্ট অ্যাটর্নি অফিস। প্রসিকিউটররা এর মধ্যে পেনির বক্তব্য পর্যবেক্ষণ করেছেন, কথা বলেছেন গোয়েন্দা কর্মকর্তা ও নিলির ময়নাতদন্তকারী অফিসারের সঙ্গে।

সব তথ্য-উপাত্ত বিবেচনা করে ডিস্ট্রিক্ট অ্যাটর্নি গ্র্যান্ড জুরি ছাড়াই পেনির বিরুদ্ধে মামলার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।

সেকেন্ড ডিগ্রি মার্ডার চার্জের বিষয়ে প্রসিকিউটররা জানান, পেনি ইচ্ছাকৃতভাবে নিলিকে হত্যা করেননি বলেই মনে হচ্ছে। তবে বেপরোয়াভাবে নিলির গলায় চেপে ধরা কারণে তার মৃত্যু হয়।

অভিযোগ প্রমাণিত হলে ১৫ বছরের জেল হতে পারে পেনির। তার আইনজীবী বৃহস্পতিবার বিবৃতি দিয়ে জানান, পেনি একজন অভিজ্ঞ মেরিন। আত্মরক্ষায় ও সাবওয়েতে থাকা অন্যদের রক্ষা করতে তিনি তৎপর হন। সে সময় নিজের জীবন ও নিরাপত্তা ঝুঁকিতে ফেলে তিনি কেবল অন্য যাত্রীদের ভালোর জন্য ওই পদক্ষেপ নিয়েছেন।

সিটির সাবওয়ের নর্থবাউন্ড এফ ট্রেনে গত ১ মে শ্বাসরোধে মৃত্যু হয় ৩০ বছর বয়স জর্ডান নিলির।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, সেদিন ট্রেনে নিলি অন্য যাত্রীদের সঙ্গে আক্রমণাত্মক আচরণ করছিলেন। আরেক যাত্রী তার গলায় জাপটে ধরে। প্রায় ১৫ মিনিট তার গলা চেপে রাখা হয়। অন্য দুই যাত্রী তার হাত-পা চেপে ধরে। এতে নিস্তেজ হয়ে পড়েন নিলি। তাকে হাসপাতালে নেয়া হলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।

গলা চেপে ধরা ব্যক্তিই ড্যানিয়েল পেনি। ঘটনার কিছু ফুটেজ সেদিনই ভাইরাল হয় সোশ্যাল মিডিয়ায়।

সাবওয়ে ট্রেনে প্রায়ই মাইকেল জ্যাকসন সেজে নাচতেন জর্ডান নিলি। ছবি: সংগৃহীত


কৃষ্ণাঙ্গ নিলি ছিলেন গৃহহীন। সাবওয়েতে তিনি সেদিক কাউকে আঘাত করেননি বলে দাবি পরিবার ও আইনজীবীর লেনন এডওয়ার্ডসের।

তারা জানান, মাইকেল জ্যাকসনের মতো সেজে সাবওয়েতে নেচে-গেয়ে জীবিকা নির্বাহ করতেন নিলি। ১৪ বছর বয়সে নিজের মায়ের হত্যাকাণ্ডের পর থেকে তিনি মানসিক রোগে আক্রান্ত হন। বিভিন্ন সময় তিনি অনিয়ন্ত্রিত আচরণ করতেন। তবে ঘটনার দিন তিনি কারও কোনো ক্ষতি করেননি।

পেনির পক্ষ থেকে গত শুক্রবার তার আইনজীবীর দেয়া বিবৃতিতে বলা হয়েছে, নিলির ক্ষতি করার কোনো উদ্দেশ্যই ছিল না পেনির। তিনি বুঝতেও পারেননি যে নিলির মৃত্যু হতে পারে।

নিউ ইয়র্কবাসীদের অনেকের মতে, সাধারণ মানুষের জঘন্য সহিংসতার বলি হয়েছেন নিলি। দ্রুতই এর বিচার হওয়া উচিত। নিলির মতো গুরুতর মানসিক রোগে আক্রান্তদের যত্ন নিতে ব্যার্থ এই শহর।

অনেকে বলছেন, জনসমাগমস্থল বিশেষ করে সাবওয়েতে নিউ ইয়র্কাররা ‌সব সময় অনিরাপদ বোধ করে। এমন আতঙ্কের প্রতিক্রিয়া থেকেই ঘটেছে হত্যাকাণ্ডটি।

এ ঘটনায় গত ৩ মে থেকে সিটিজুড়ে বিক্ষোভ চলছে। বিক্ষোভকারীরা জানিয়েছেন, ১৫ মিনিট ধরে গলাচেপে ধরে নিলিকে হত্যা করা হয়েছে। তাই ১৫ দিন চলবে বিক্ষোভ।


0 মন্তব্য

মন্তব্য করুন