দুর্ঘটনাটিকে ইউরোপের অত্যন্ত মর্মান্তিক অভিবাসী বিপর্যয় বলা হচ্ছে। এতে বুধবার পর্যন্ত ৭৮ জনের মৃত্যু নিশ্চিত করেছে কর্তৃপক্ষ। এখনও নিখোঁজ কয়েকশ যাত্রী।
দেশটির দক্ষিণ উপকূলে স্থানীয় সময় মঙ্গলবার গভীর রাতে ডুবে যায় নৌকাটি। তখন থেকে সমুদ্রে চলছে কোস্ট গার্ডের ব্যাপক উদ্ধার অভিযান।
নৌকার বেঁচে যাওয়া যাত্রীদের সেবা দেয়া চিকিৎসকদের তথ্যে বিবিসি জানায়, যাত্রীদের বেশিরভাগই ছিল নারী ও শিশু। আর জীবিত উদ্ধার প্রত্যেকেই পুরুষ।
দেশটির সংবাদমাধ্যম এএনটি ওয়ানকে দেয়া সাক্ষাৎকারে বেঁচে যাওয়া এক পুরুষ যাত্রী জানান, প্রায় ১০০ শিশুকে নৌকায় দেখেছেন।
বেসরকারি সংস্থা সেভ দ্য চিল্ডরেনও বেঁচে যাওয়া কয়েক যাত্রীর বরাতে এই সংখ্যা নিশ্চিত করেছে।
দেশটির সরকারের মুখপাত্র ইলিয়াস সায়াক্যানটারিস জানান, সাড়ে সাতশর মতো অভিবাসী নৌকায় ছিলেন বলে বিভিন্ন সূত্রে তিনি জেনেছেন।
তিনি বলেন, ‘নৌকায় কী হয়েছিল তা আমরা নিশ্চিত না, তবে এটুক জেনেছি যে কয়েক চোরাকারবারি নৌকা নিয়ন্ত্রণে রাখতে যাত্রীদের আটকে রেখেছিল।’
নিখোঁজ স্বজনদের সন্ধান পেতে ক্যালামাটায় জড়ো হয়েছেন পরিবারের সদস্যরা। আফতাব নামের একজন জানান, তার পাঁচ জন পাকিস্তানি আত্মীয় ওই নৌকায় ছিলেন। একজনকে উদ্ধার করা হয়েছে বলে নিশ্চিত হয়েছেন। অন্যদের খোঁজ পাচ্ছেন না।
স্ত্রী ও শ্যালকের খোঁজ না পেয়ে দিশেহারা হয়ে ছোটাছুটি করতে দেখা গেছে সিরিয়ান এক ব্যক্তিকে।
কোস্টগার্ডের এক মুখপাত্র দেশটির রাষ্ট্রীয় সংবাদমাধ্যম ইআরটিকে জানান, ইঞ্জিন নষ্ট হয়ে যাওয়ায় নৌকাটি অচল হয়ে পড়ে। আতঙ্কে আরোহীরা ছোটাছুটি করতে থাকায় এক পর্যায়ে সেটি ডুবে যায়।
তিনি নিশ্চিত করেছেন, জীবিত উদ্ধার ১০৪ জনের প্রত্যেকেই পুরুষ।
ইটালিগামী নৌকাটি পূর্ব লিবিয়ার টোব্রুক এলাকা থেকে যাত্রা শুরু করেছিলো বলে ধারণা করা হচ্ছে।
গ্রিক মেইনল্যান্ডের স্থানীয় কোস্টগার্ড প্যাট্রোল দল এড়িয়ে বড় নৌকা নিয়ে আন্তর্জাতিক সমুদ্রসীমায় চোরাচালানকারীদের প্রবেশ বেড়ে চলেছে।
একই অঞ্চলে গত রোববার ৯০ জন অভিবাসীসহ অ্যামেরিকার পতাকাবাহী একটি ইয়ট উদ্ধার করে কোস্টগার্ড। গ্রিসের দক্ষিণ উপকূলীয় বন্দর থেকে বুধবার ৮১ অভিবাসী সহ আরও একটি ইয়ট উদ্ধার করা হয়।