ভারত থেকে চাঁদের পথে চন্দ্রায়ন-থ্রি

টিবিএন ডেস্ক

জুলাই ১৪ ২০২৩, ১৮:১৬

চন্দ্রায়ন-থ্রি-এর সফল উৎক্ষেপণ করেছে ভারত। ছবি: সংগৃহীত

চন্দ্রায়ন-থ্রি-এর সফল উৎক্ষেপণ করেছে ভারত। ছবি: সংগৃহীত

  • 0

হাজারও মানুষের করতালির মধ্য দিয়ে তৃতীয় দফায় চন্দ্রাভিযানের উদ্দেশে রওনা হয়েছে ভারতীয় মহাকাশযান চন্দ্রায়ন-থ্রি। অন্ধ্রপ্রদেশের শ্রীহরিকোটা থেকে শুক্রবার বিকেলে চন্দ্রায়ন-থ্রি-এর সফল উৎক্ষেপণ হয়েছে।

অরবিট ধরে আগামী ৪০ দিনের মধ্যে এর মুন ল্যান্ডার ভিক্রাম চন্দ্রপৃষ্ঠে অবতরণ করবে বলে আশা করছে ইন্ডিয়ান স্পেস রিসার্চ অর্গানাইজেশন (ইসরো)।

সংস্থাটি জানিয়েছে, মিশন সফল হলে রাশিয়া, অ্যামেরিকা ও চায়নার পর চাঁদে কন্ট্রোলড ল্যান্ডিং অর্জনকারী চতুর্থ দেশ হবে ভারত।

চন্দ্রায়ন থ্রি মিশনের মহাকাশযানের প্রধান অংশ তিনটি। একটি হলো মুন ল্যান্ডার ভিক্রাম, একটি হলো রোভার প্রাজ্ঞায়ান ও একটি প্রপালশন মডেল। চাঁদের অরবিটে ঘুরতে থাকা চন্দ্রায়ন-টু থেকে অরবিটার ব্যবহার করবে চন্দ্রায়ন-থ্রি।

পৃথিবীর অরবিট ছেড়ে শিগগিরি চাঁদের অরবিট ধরবে চন্দ্রায়ন -থ্রি। ছবি: ইন্ডিয়া টুডে

ভিক্রামকে বহনকারী মার্ক-থ্রি হেভি লিফ্ট লঞ্চ ভেহিক্যালকে বাহুবলি রকেট বলে ডাকে ইসরো।

সংস্থাটি জানিয়েছে, অভিযান সফল হলে আগামী ২৩ আগস্ট চন্দ্রপৃষ্ঠে অবতরণ করবে ভিক্রাম। এরপর রোভার প্রাজ্ঞায়ানকে এক চন্দ্রদিবসের জন্য ছেড়ে দেয়া হবে। চন্দ্রপৃষ্ঠের বিভিন্ন নমুনা সংগ্রহ ও বিভিন্ন পরীক্ষা-নিরিক্ষা চালাবে এটি।

চাঁদের একদিন মানে হলো পৃথিবীর প্রায় ১৪ দিন।

ভিক্রাম চাঁদের দক্ষিণ মেরুতে অবতরণ করবে। চাঁদে ভারতের প্রথম মিশনে ২০০৮ সালে এই অংশেই পানির অনু পাওয়া যায়, যা গোটা বিশ্বকে তাক লাগিয়ে দেয়।

সম্পূর্ণ নিজ উদ্যোগে মহাকাশ গবেষণায় কাজ করছে ইসরো। প্রথমবার চন্দ্রায়ন-ওয়ানের সাফল্যের পর ২০১৯ সালে দ্বিতীয় দফায় চন্দ্রায়ন-টু উড্ডয়ন করে এটি। চাঁদের অরবিটে সফলভাবে পৌঁছাতে পারলেও পৃষ্ঠে অবতরণের আগে গ্রাউন্ড ক্রুয়ের সঙ্গে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যায় মুন ল্যান্ডারের, ব্যার্থ হয় সেই অভিযান।

তবে ভুল থেকে শিক্ষা নিয়ে চন্দ্রায়ন-থ্রি মিশনে ইসরো ব্যাপক পরিবর্তন এনেছে।

ইসরো প্রধান এস সোমনাথ ভারতীয় সংবাদ মাধ্যম এনডিটিভিকে দেয়া সাক্ষাৎকারে বলেন, ‘চন্দ্রায়ন-টু মিশনের প্রধান ভুল ছিল নমিনাল কন্ডিশনে মহাকাশযান পাঠানো। নিরাপদে চন্দ্রপৃষ্ঠে অবতরণের জন্য যানটি নমিনাল কন্ডিশনগুলো সামলাতে সক্ষম ছিল না।’

এই চন্দ্রাভিযান যাত্রা দেখতে চন্দ্রায়ন-থ্রিয়ের উৎক্ষেপণস্থলের কিছু দূরে ভিড় করে হাজারও মানুষ। দেশটির বিভিন্ন স্থানে বড় স্ক্রিনে চলে সরাসরি সম্প্রচার। গর্বিত ভারতীয়রা উচ্ছ্বাস জানিয়ে নানা পোস্ট দেয় স্যোশাল মিডিয়ায়।

দেশটির প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি টুইট করে বলেন, ‘চন্দ্রায়ন-থ্রি মহাকাশে ভারতের দু:সাহসিক অভিযানের নতুন অধ্যায় রচনা করেছে। প্রত্যেক ভারতীয়র স্বপ্ন ও উচ্চাকাঙ্খাকে তুলে নিয়ে উপরের দিকে ছুটে গেছে এটি।’

তিনি এটিকে দেশের জন্য গুরুত্বপূর্ণ অর্জন বলে অভিহিত করে বলেছেন, ভারতীয় বিজ্ঞানীদের নিরলস প্রচেষ্টার প্রমাণ।

মোদি বলেন, ‘তাদের (বিজ্ঞানীদের) চেতনা ও উদ্ভাবনী দক্ষতাকে স্যালুট জানাই।’


0 মন্তব্য

মন্তব্য করুন