ফ্লোরিডায় বইয়ের ওপর আক্রমণ প্রতিরোধ করা জরুরি: সালমান রুশদি

টিবিএন ডেস্ক

মে ১৯ ২০২৩, ১৮:৩০

পেন অ্যামেরিকার অনুষ্ঠানে বুকারজয়ী লেখক সালমান রুশদি। ছবি: গেটি ইমেযেস

পেন অ্যামেরিকার অনুষ্ঠানে বুকারজয়ী লেখক সালমান রুশদি। ছবি: গেটি ইমেযেস

  • 0

প্রাণঘাতি হামলায় বেঁচে যাওয়া ব্রিটিশ ইন্ডিয়ান সাহিত্যিক সালমান রুশদি বলেছেন, অ্যামেরিকার ফ্লোরিডায় বইয়ের ওপর আক্রমণ আগের চেয়ে বেড়েছে। তিনি জানান, অ্যামেরিকায় বাকস্বাধীনতা ফিরিয়ে আনতে বইয়ের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ বন্ধ করতে হবে।

নিউ ইয়র্ক সিটিতে বৃহস্পতিবার পেন অ্যামেরিকার পুরস্কার বিতরণি অনুষ্ঠানে ফ্লোরিডার স্কুল লাইব্রেরি থেকে নির্দিষ্ট কিছু বই সরিয়ে নেয়ার ঘটনার সমালোচনা করে তিনি এসব কথা বলেন।

'দ্য স্যাটানিক ভার্সেস' বই লিখে বিতর্কিত এই সাহিত্যিকের পর গত বছর প্রাণঘাতি হামলা হয়। এর প্রায় এক বছর পর তিনি এই প্রথম কোনো অনুষ্ঠানে যোগ দিলেন।  

তিনি বলেন, ‘বইয়ের ওপর আক্রমণ, শিক্ষার ওপর আক্রমণ, লাইব্রেরির ওপর আক্রমণ- এসব দেখে আমি এটাই বলতে পারি যে, ফ্লোরিডা আগের চেয়ে বেশি ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে উঠেছে। এখানে এসব হামলা প্রতিরোধ করা খুবই গুরুত্বপূর্ণ।’

লিটারেসি ও ফ্রি স্পিচ অ্যাডভোকেসি গ্রুপ- পেন আমেরিকার প্রেসিডেন্ট ছিলেন রুশদি। সম্প্রতি ফ্লোরিডার স্কাম্বিয়া কাউন্টি স্কুল ডিস্ট্রিক্টের সব স্কুল লাইব্রেরি থেকে বর্ণবাদ ও এলজিবিটিকিউ ইস্যুর ওপর লেখা বই সরিয়ে নেয় কর্তৃপক্ষ। এই পদক্ষেপকে চ্যালেঞ্জ করে প্রকাশনা সংস্থা পেঙ্গুইন র‍্যান্ডম হাউয এবং কয়েকজন অভিভাবক ও লেখকের সঙ্গে মিলে মামলা করে পেন অ্যামেরিকা। 

সংস্থার এই উদ্যোগের প্রশংসা করে রুশদি বলেন, ‘এই মামলা আমাদের কাছে ব্যাপক গুরুত্বপূর্ণ, আশা করছি আমরা জিতব, আমাদের জিততেই হবে।’

পেন অ্যামেরিকার এই অনুষ্ঠানে রুশদিকে ‘ফ্রিডম অফ এক্সপ্রেশন কারেজ’ পুরস্কার দেয়া হয়। তিনি পুরস্কার নিয়ে বলেন, ‘হামলার পর আমাকে বাঁচাতে যারা এগিয়ে এসেছিলেন, যারা আমাকে উদ্ধার করেছিলেন, তাদেরকে এই পুরস্কার উৎসর্গ করছি… সত্যিকারের সাহস আমি দেখাইনি, যারা আমার জীবন বাঁচাতে তখন ঝাঁপিয়ে পড়েছিলেন, তারাই সত্যিকারের হিরো।'

তিনি আরও বলেন, ‘আমি তাদের নামও জানি না। কখনও তাদের দেখিওনি। এইটুক জানি যে অনেকগুলো মানুষ মিলে আমাকে রক্ষা করেছে। আমার জীবন তাদের কাছে ঋণী।’

নিউ ইয়র্কের শাটাকোয়া ইনস্টিটিউটে গত আগস্টে একটি অনুষ্ঠানে যোগ দিতে যান বুকারজয়ী এই লেখক। অনুষ্ঠান মঞ্চে বক্তৃতা দিতে ওঠার সময় ছুরি নিয়ে দৌঁড়ে এসে তার ওপর হামলা করেন এক ব্যক্তি। তাকে কয়েক দফা কুপিয়ে আহত করা হয়। অনুষ্ঠানে উপস্থিত লোকজন হামলাকারীকে ধরে পুলিশে দেয় ও রুশদিকে হাসপাতালে পাঠায়।

বেঁচে গেলেও তিনি ডান চোখের দৃষ্টি হারিয়ে ফেলেন।

তার লেখা দ্য স্যাটাসিক ভার্সেস ১৯৮৮ সালে প্রকাশিত হলে মুসলিম সম্প্রদায়ের মধ্যে ক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ে। ইসলাম ধর্মকে অবমাননা করার অভিযোগে তাকে বিভিন্ন সময় হত্যার হুমকিও দেয়া হয়েছে। ইরানের সর্বোচ্চ ধর্মীয় নেতা আয়াতুল্লাহ খোমেনি তাকে হত্যার ফতোয়াও জারি করেন।


0 মন্তব্য

মন্তব্য করুন