
ইলন মাস্কের ঘরের কথা বাইরে আনল নিউ ইয়র্ক টাইমস

টিবিএন ডেস্ক
প্রকাশিত: জুন ১ ২০২৫, ০:১৫ হালনাগাদ: ডিসেম্বর ৩ ২০২৫, ১৫:০৬

টেসলা সিইও ইলন মাস্ক। ছবি: এপি
- 0


প্রকাশিত: জুন ১ ২০২৫, ০:১৫ হালনাগাদ: ডিসেম্বর ৩ ২০২৫, ১৫:০৬

টেসলা সিইও ইলন মাস্ক। ছবি: এপি
গত বছর ডনাল্ড ট্রাম্পের নির্বাচনি প্রচারকালে তার অন্যতম ঘনিষ্ঠ মিত্রে পরিণত হন ইলন মাস্ক। ট্রাম্পকে জয়ী করতে বিভিন্ন র্যালিতে নেতৃস্থানীয় ভূমিকা রাখার পাশাপাশি রিপাবলিকান প্রার্থীকে প্রায় ২৭৫ মিলিয়ন ডলার দেন এ ধনকুবের। সে সময়ে মাস্ক আগের তুলনায় অনেক বেশি পরিমাণে মাদক গ্রহণ করতেন বলে জানিয়েছেন তার কর্মকাণ্ডের সঙ্গে পরিচিত লোকজন।
টেসলা সিইওর এ মাদকাসক্তি, এর প্রভাবজনিত অসুস্থতা এবং নাৎসিদের মতো আচরণের মতো ব্যক্তিগত বিষয়গুলো এক প্রতিবেদনে তুলে ধরেছে দ্য নিউ ইয়র্ক টাইমস।
অনেক বেশি কেটামিন গ্রহণ
ট্রাম্পের নির্বাচনি প্রচারের সময় মাস্কের মাদক সেবন অনিয়মিত সেবনের মাত্রার চেয়ে অনেক বেশি হয়ে গিয়েছিল। তিনি লোকজনকে শক্তিশালী চেতনানাশক কেটামিন অনেক বেশি পরিমাণে গ্রহণের কথা জানিয়েছেন। এর প্রভাব পড়ে তার মূত্রাশয়ের ওপর। কেটামিন দীর্ঘদিন সেবনে শরীরে এ ধরনের প্রভাব পড়ে।
ইলন মাস্ক এক্সট্যাসি ও সাইকিডেলিক মাশরুমও সেবন করতেন। তার নিত্যসঙ্গী ছিল ওষুধের বাক্স, যেখানে প্রায় ২০টি বড়ি ছিল।
নাৎসিদের মতো আচরণ
চলতি বছর ট্রাম্প প্রশাসনে দায়িত্ব পাওয়ার পর ৫৩ বছর বয়সী ইলন মাস্ক মাদক নিয়েছেন কি না, তা স্পষ্ট নয়, তবে ফেডারেল আমলাতন্ত্রের পরিসর কমানোর ক্ষমতা পাওয়া এ বিলিয়নেয়ার খেয়ালি আচরণ করতেন। তিনি মন্ত্রিপরিষদ সদস্যদের অপমানের পাশাপাশি নাৎসিদের মতো অঙ্গভঙ্গি করতেন।
টালমাটাল পারিবারিক জীবন
বিভিন্ন নথি ও সাক্ষাৎকার অনুযায়ী, ট্রাম্পের নির্বাচনি প্রচারের সময় থেকে টালমাটাল ছিল মাস্কের পারিবারিক জীবন। রোমান্টিক সম্পর্ক নিয়ে সমঝোতা আলোচনা এবং সন্তানের সংখ্যা বাড়া নিয়ে আইনি যুদ্ধ চালিয়েছেন তিনি।
মাদকাসক্তি নিয়ে নিরুত্তর মাস্ক ও হোয়াইট হাউস
গত বুধবার সন্ধ্যায় ইলন মাস্ক ফেডারেল সরকারে তার অধ্যায় সমাপ্তির ঘোষণা দেন। চলতি সপ্তাহে এ ধনকুবেরের মাদকাসক্তি ও ব্যক্তিগত জীবন নিয়ে মন্তব্যের অনুরোধে সাড়া দেননি মাস্ক কিংবা তার আইনজীবী।
ইতোপূর্বে মাস্ক জানিয়েছিলেন, বিষণ্নতার জন্য তাকে কেটামিন সেবন করতে বলেছিলেন চিকিৎসক। তিনি প্রায় দুই সপ্তাহে একবার কেটামিন সেবন করতেন।
আত্মজীবনী লেখককে তিনি বলেন, ‘আমি আসলে অবৈধ মাদক গ্রহণ পছন্দ করি না।’
ইলন মাস্কের মাদকাসক্তির বিষয়ে কোনো মন্তব্য করতে রাজি হয়নি হোয়াইট হাউস।
ট্রাম্পের সঙ্গে শুক্রবার বিকেলে সংবাদ সম্মেলনের সময় মাস্ককে নিউ ইয়র্ক টাইমসের প্রতিবেদনের বিষয়ে জিজ্ঞাসা করা হয়েছিল। তার উত্তরে তিনি পত্রিকাটির বিশ্বাসযোগ্যতা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন।
মাদক পরীক্ষার আগাম সতর্কবার্তা
সরকারি কাজের বড় ঠিকাদার হিসেবে মাস্কের মহাকাশবিষয়ক প্রতিষ্ঠান স্পেসএক্সকে অবশ্যই কর্মীদের মাদকমুক্ত রাখতে হবে। একই সঙ্গে প্রতিষ্ঠানটির কর্মীদের গণহারে মাদকের পরীক্ষা করাতে হবে, তবে ইলন মাস্ক মাদক পরীক্ষার আগাম সতর্কবার্তা পেয়েছিলেন বলে জানিয়েছেন এ প্রক্রিয়া সংশ্লিষ্ট লোকজন। এ ধরনের সতর্কবার্তার বিষয়ে জানতে চাইলে কোনো উত্তর দেয়নি স্পেসএক্স।
আচরণগত কারণে সঙ্গ ত্যাগ করেছেন ঘনিষ্ঠ বন্ধুরা
গাড়ি, স্যাটেলাইট ও মহাকাশযানের মাধ্যমে বিশাল সম্পত্তির মালিক হওয়ার পর ট্রাম্পের ঘরের মানুষে পরিণত হন ইলন মাস্ক। অপ্রয়োজনীয় লম্বা বক্তব্য ও অস্থিরমতি আচরণের কারণে অনেক আগে থেকেই পরিচিত তিনি। সমর্থকরা তাকে চেনেন অসাধারণ মেধা ও উদ্ভট আচরণের মানুষ হিসেবে, যিনি অনেক মানুষ ও বিশাল সিস্টেম নিয়ে কাজ করতে চান না।
গত বছর রাজনৈতিক মঞ্চে পদার্পণের পর পরিচিত কিছু মানুষ তার মাদক গ্রহণ, আচরণের দ্রুত পরিবর্তন ও অধিক সন্তান গ্রহণের সিদ্ধান্ত নিয়ে উদ্বিগ্ন ছিলেন।
মাস্কের পরিচিত অথবা তার সঙ্গে কাজ করা এক ডজনের বেশি ব্যক্তির কাছ থেকে পাওয়া ব্যক্তিগত মেসেজ ও তাদের সঙ্গে কথা বলে ধনকুবেরের আচরণের বিষয়টি জানতে পেরেছে নিউ ইয়র্ক টাইমস।
চলতি বছর প্রকাশ্য কিছু আচরণের দিকে আঙুল তুলে ইলন মাস্কের সঙ্গ ত্যাগ করেছেন দীর্ঘদিনের কয়েকজন বন্ধু।
ধনকুবেরের একসময়ের বন্ধু ও স্নায়ুবিজ্ঞানী ফিলিপ লো বলেন, ইলন বাজে আচরণের সীমা একের পর এক ছাড়িয়ে গেছেন।
একটি সমাবেশে নাৎসিদের মতো আচরণের জন্য মাস্কের সমালোচনা করেন লো।