
ইয়েমেনে ফাঁসির অপেক্ষায় ভারতীয় নার্স

টিবিএন ডেস্ক
প্রকাশিত: জুলাই ৯ ২০২৫, ৮:৫৯ হালনাগাদ: ডিসেম্বর ১১ ২০২৫, ১১:২৯
.jpg)
ভারতীয় নার্স নিমিশা প্রিয়া। ছবি: বিবিসি
- 0
২০১৮ সালে খুনের দায়ে দোষী সাব্যস্ত হন প্রিয়া। এরপর থেকেই আদালতে লড়াই চালাচ্ছিলেন তিনি। অবশ্য সেদেশের শীর্ষ আদালতেও সেই মামলায় হেরে যান তিনি।
ইয়েমেনের এক নাগরিককে হত্যা মামলায় দোষী সাব্যস্ত হওয়া ভারতীয় নার্স নিমিশা প্রিয়ার ফাঁসি কার্যকর হতে যাচ্ছে আগামী ১৬ জুলাই।
ভারতীয় সংবাদমাধ্যম ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসের প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গত মাসে ইয়েমেনের প্রেসিডেন্ট রাশাদ আল-আলিমি নিমিশা প্রিয়ার মৃত্যুদণ্ড অনুমোদন করেন। যার ফলে ফাঁসি কার্যকর হতে আর কোন বাধা নেই।
হিন্দুস্তান টাইমস জানিয়েছে, ভারতের কেরালার বাসিন্দা ৩৭ বছর বয়সি নিমিশা প্রিয়া কর্মসূত্রে ইয়েমেনে নিজের স্বামীর সঙ্গে থাকতেন তিনি। ২০১৪ সালে তার স্বামী ও মেয়ে ভারতে ফিরে আসলেও তিনি ইয়েমেনে নার্স হিসেবে কর্মরত ছিলেন। ২০১৬ সালে ইয়েমেনের চলমান সংঘাতের কারণে দেশটিতে যাতায়াতে নিষেধাজ্ঞা জারি করে ভারত। সেসময় ইয়েমেনের একটি বেসরকারি হাসপাতালে কাজ করতেন প্রিয়া।
হাসপাতালে চাকরির সুবাদে স্থানীয় ইয়েমেনি নাগরিক তলাত আবদো মেহদির সঙ্গে পরিচয় হয় প্রিয়ার। পারিবারিক সুসম্পর্কের সুবাদে মেহদি একবার ভারতে প্রিয়ার বাড়িতে তার পরিবারের সাথে দেখা করতেও আসেন।
প্রিয়া ও মেহদি একটি ক্লিনিক খোলার ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেন। ইয়েমেনের নিয়ম অনুযায়ী কোনো বিদেশি ক্লিনিক খুলতে চাইলে তাকে স্থানীয় কারও সঙ্গে অংশীদারত্বে খুলতে হবে। সে কারণেই মেহদির সাহায্যে ক্লিনিক চালু করেন প্রিয়া। কিন্তু ধীরে ধীরে তাদের ব্যবসায়িক সম্পর্ক তিক্ততায় রূপ নেয়।
প্রিয়ার স্বামীর বরাত দিয়ে, হিন্দুস্তান টাইমস জানিয়েছে, মেহদি প্রিয়ার কাছ থেকে তার পাসপোর্ট ছিনিয়ে নেন। এর জেরে সেই দেশেই আটকে পড়েন নিমিশা। এদিকে প্রিয়াকে নিজের স্ত্রী হিসেবে পরিচয় দিতেন মেহদি। মেহদি নানাভাবে তাকে অত্যাচার করত বলে পুলিশকে অভিযোগ জানায় প্রিয়া। ২০১৬ সালে গ্রেপ্তার হয় মেহদি। পরে অবশ্য তিনি ছাড়া পেয়ে যান।
নিমিশা তার জবানবন্দিতে বলেন, জব্দকৃত পাসপোর্ট উদ্ধার করতে তার ইয়েমেনি বান্ধবীর সাথে পরিকল্পনা করে ২০১৭ সালের ২৫ জুলাই মেহদিকে ঘুমের ইনজেকশন দেন প্রিয়া। সেই ইনজেকশনের ওভারডোজে মৃত্যু হয় মেহদির। প্রিয়া তার বান্ধবীকে সঙ্গে নিয়ে মেহদির দেহটি টুকরো টুকরো করে ক্লিনিকের ট্যাঙ্কে রেখে পালিয়ে যান। পরে মামলায় ২০১৮ সালে খুনের দায়ে দোষী সাব্যস্ত হন প্রিয়া।
পরে সেই নির্দেশের বিরুদ্ধে ইয়েমেনের সুপ্রিম কোর্টে আবেদন জানান নিমিশা প্রিয়া। ২০১৮ সাল থেকে আদালতে লড়াই চালাচ্ছিলেন প্রিয়া। অবশ্য সেদেশের শীর্ষ আদালতেও সেই মামলায় হেরে যান তিনি। এরই মাঝে প্রিয়ার মৃত্যুদণ্ড অনুমোদন করেছেন ইয়েমেনের প্রেসিডেন্ট রাশাদ আল-আলিমি। এবার তা কার্যকর হতে যাচ্ছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়, এ নিয়ে এখনো ভারত সরকারের পক্ষ থেকে পদক্ষেপ নেয়ার সুযোগ আছে। তারা ইয়েমেন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে এখন আবার যোগাযোগ করবে কি না, সে ব্যাপারে কিছু জানা যায়নি। ভারত সরকারের পক্ষ থেকে এখনও এ বিষয়ে কোনো বিবৃতিও আসেনি।